‘গোপন চুক্তির মাধ্যমে ভারতের ক্ষমতায় মোদি’

0

oniruddho_modiমুসলমানদের আক্রমণের জন্য নয়, মোদীকে ক্ষমতায় আনা হয়েছে ভারতের জঙ্গলে যে প্রতিরোধ জারি আছে, তাকে দমন করে জনগণের জল-জমি-জঙ্গল কর্পোরেট খনি ও অবকাঠামো ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিতে। তাকে ক্ষমতায় আনা হয়েছে গোপন চুক্তির মাধ্যমে এমন মন্তব্যই করলেন বিশ্বখ্যাত ভারতীয় বুদ্ধিজীবী অরুন্ধতী রায়।

পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডন নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অরুন্ধতী রায় জানান, ‘এ নিয়ে সব চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। কোম্পানিগুলো অপেক্ষার প্রহর গুনছে। মোদিকে পছন্দ করা হয়েছে কেননা রক্ত দেখে তিনি শিউরে ওঠেন না। না, কেবল মুসলমানের রক্ত নয়, কোনো রক্তেই মোদি শিউরে উঠবেন না।’

সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ভারতের জঙ্গলভূমি; যেখানে আদিবাসীরা আছেন, তাদের বাসস্থলেই উন্নয়নের প্রকল্প নিতে চায় ভারতের খনিজ আর অবকাঠামো নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো। উচ্ছেদের প্রচেষ্টা এ পর্যন্ত রুখে দিয়েছে তারা। এই অঞ্চলগুলোতে মাওবাদীরা জনগণের সঙ্গে একাত্ম। অরুন্ধতী মনে করেন, যে উন্নয়ন পরিকল্পনা কর্পোরেশনগুলোর তরফে নেয়া হয়েছে তাতে রক্তপাত অবশ্যম্ভাবী।

তিনি জানান, জঙ্গলের প্রতিরোধীদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মানুষ কারাগারে রয়েছেন। ‘তবে এতে কিছু হচ্ছে না। জঙ্গলের সমস্ত প্রতিরোধ ধ্বংস করতে হবে। বড় পুঁজির দরকার সেই মানুষকে, যিনি এরজন্য যা কিছু দরকার তার সবটাই করতে পারবেন। একারণেই রক্তপিপাসু নরেন্দ্র মোদিকে পছন্দ করেছে করপোরেশনগুলো। নির্বাচনে তার পেছনে ব্যয় করেছে কোটি কোটি টাকা।’ এমনটাই বলেন তিনি।

উন্নত বিশ্বের অন্য দেশগুলোর উন্নয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জিজ্ঞেস করলে অরুন্ধতী বলেন, যুদ্ধ এবং অন্য দেশকে উপনিবেশ বানানোর মধ্য দিয়ে তারা উন্নয়ন ঘটিয়েছে। তার মতে, কথিত উন্নয়নের জন্য ভারতের নিজেকে নিজের উপনিবেশ বানানো ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

অরুন্ধতীর মতে, এখন সামরিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই প্রতিরোধ দমন করতে চায় কর্পোরেশনগুলো। এজন্য মোদি গণহত্যাই চালাবে, এমনটা নাও হতে পারে বলে মত অরুন্ধতীর। কেবল প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতৃত্বকে টার্গেট করে হত্যাকান্ড ঘটানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা তার।

অরুন্ধতী মনে করেন, ভারতের এবারের নির্বাচন ছিলো পুরোপুরি এক করপোরেট প্রকল্প। ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃতীয় অবস্থানে থাকার পরও মায়াবতীর দল কোনো আসন পায়নি নির্বাচন পদ্ধতির হিসেব-নিকেশের কারণে; একে প্রহসন মনে করেন অরুন্ধতী। এতে সংসদে দলিতদের কোনো প্রতিনিধি থাকলো না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে টোটালেটারিয়ান এক সরকার পেলো।

সবশেষে তিনি নিজেই প্রশ্ন রাখেন: ভারতের জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের রায় দিয়েছে। কিন্তু গরীবেরা কোথায় যাবে?

এই প্রশ্নের কেনো উত্তর ছাড়াই শেষ হয় ডন-অরুন্ধতী প্রশ্নোত্তরপর্ব।

মূল সাক্ষাতকার

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More