ঢাকাঃ জামিন বিষয়ে নিবন্ধ লিখে মিজানুর রহমান আদালকে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে অভিযোগ করে ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, তার ৬ বছরের জেল হওয়া উচিত।
একই সঙ্গে ব্যারিস্টর রফিকুল হক অভিযোগ করে বলেছেন, মিজানুর রহমান ১/১১ থেকে লেখা শুরু করেছে, তার পেছনে তৃতীয় পক্ষের মদদ আছে। আদালতে তার জামিন না হয়ে দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানিকালে তারা দাবি করেন।
শুনানিতে ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, মিজানুর রহমান খান যে নিবন্ধ লিখেছেন তা একটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আদালতকে জনগণের সামনে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তার এ নিবন্ধ।
তিনি বলেন, আদালত অবমাননার অভিযোগে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে ছয় মাসের জেল হয়েছিল। মাহমুদুর রহমানের চেয়ে মিজানুর রহমানের লেখায় বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের মাত্রা শতভাগ বেশি। এ কারণে তার ছয় বছরের জেল হওয়া উচিত।
রোকনউদ্দিন আরও বলেন, বাংলাদেশে আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রণে বার কাউন্সিল, ডাক্তার নিয়ন্ত্রণে মেডিকেল কাউন্সিল, এবং সব ধরণের সেক্টর নিয়ন্ত্রণে একটি করে নিয়ন্ত্রক কমিটি আছে। কিন্তু সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণে কোনো সংগঠন নেই। ফলে তারা যা খুশি তাই লেখে।
তিনি আরও বলেন, এই কারণে সাংবাদিকরা মনে করে তারা আইনের ঊর্ধ্বে। তাদের যে স্বাধীনতা আছে তারা সেই স্বাধীনতার অপব্যাবহার করে অন্যকে অপমান করে।
শুনানিতে রোকনউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সংবাদপত্র এখন আর সংবাদপত্র নেই। তা এখন ব্যবসা করতে সংবাদপত্র খুলেছে। তার প্রমাণ হলো যুগান্তর ও কালের কন্ঠ নিজ স্বার্থে অন্য সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে লিখে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তারা টাকা দিলে পক্ষে প্রতিবেদন লিখে, অন্যথায় বিরুদ্ধে রোকদের মানহানি করে। সাংবাদিকরা এখন নিজেদেরকে অনেক শক্তিশালী মনে করে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
শুনানিতে ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন, বিচার বিভাগ নিয়ে তিনি অনেক চিন্তা করেন। দেশের ভবিষ্যতের নিয়ে তিনি অনেক সচেতন। বিচার বিভাগ নিয়ে একের পর এক যাচ্ছে তাই লিখে চলেছেন। ১/১১ থেকেই তিনি লিখেছেন। তার পেছনে কারও মদদ আছে। তার শাস্তি হতেই হবে।
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, মিজানুর রহমান খান গণজামিনের বিরুদ্ধে লিখেছেন, কিন্তু গণগ্রেফতারের বিরুদ্ধে কিছু লেখেননি। আমি বুঝতে পারছি না যে, তিনি কার স্বার্থ উদ্ধারে কাজ করছেন।
প্রথম আলোর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক, শ ম রেজাউল হক।
অপরদিকে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা অভিযোগ আনার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক, ব্যারিস্টার আব্দুর রব, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যাস্টিার রফিকুল ইসলাম মিঞা, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এখনো পর্যন্ত শুনানি করছেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
গত ২ মার্চ আগাম জামিন নিয়ে প্রকাশিত মন্তব্য প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘মিনিটে একটি আগাম জামিন কীভাবে?’ এবং ১ মার্চ ‘৬ থেকে ৮ সপ্তাহের স্বাধীনতা’ শিরোনামে মিজানুর রহমান খানের লেখা দু’টি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।