অন্তরঙ্গতার স্কেলে সালমান আমার অনেক ঘনিষ্ঠ: সোনাক্ষী

0

Sallu sonaমুম্বাই: চরিত্রের নাম ছিল পাখি। ‘লুটেরা’র সেই বাঙালি কন্যা। তার রোম্যান্টিকতার আর্তি স্তম্ভিত করে দিয়েছিল ভারতীয় সিনে দর্শককে! অথচ ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মোটেও বিষণ্ণ, ট্র্যাজিক নায়িকার প্রতিচ্ছবি নন। তাঁর আদর্শ ক্রীড়াবিদও শচিন নন। জকোভিচ। অক্ষয় কুমারকে ‘মেন্টর’ নন, বলেন সহকর্মী। হিন্দি বাণিজ্যিক ছবির সিংহাসনের দিকে দৌড়চ্ছেন অথচ ‘শোলে’ দেখেননি। এখনো সোজাসাপটা কথা বলেন কোনো কিছুর ভ্রুক্ষেপ না করে।  সোনাক্ষী সিংহ এমনই।

আমি সোনাক্ষী সিংহ হলে নতুন বছরের রেজোলিউশনে প্রথমেই লিখতাম, ২০১৪ এলো। দীপিকা পাড়ুকোন, এ বার তোমায় আমি দেখাচ্ছি মজা!
ওহ্ নো! কী যে বলেন। মোটেও আমার রেজোলিউশন এমন কিছু নয়। আমি আমার ‘স্পেস’য়ে থাকি। চুপচাপ নিজের কাজ করি। সাইড লাইন থেকে নিঃশব্দে এগোই। অন্যদের প্রতি জিঘাংসা নিয়ে বাঁচি না।

জিঘাংসা কোথায়? এটা তো কম্পিটিশনের কথা। তা ছাড়া দু’জনের লক্ষ্যই তো এক।
দেখুন একটা কথা সাফ বলি। মাত্র তিন বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থেকে আমি যা অ্যাচিভ করেছি, অনেকে সাত-আট বছর থেকেও সেটা পায়নি। আমার অন্য কাউকে ভাবনায় এনে টানাটানি করার প্রশ্ন নেই। তা ছাড়া আমার তো এই প্রফেশনে আসাটাই আকস্মিক। আমার যাওয়ার কথা ছিল অন্য দিকে। ছোটবেলায় কখনও ভাবিইনি অভিনেত্রী হব।

শুনেছি ফ্যাশন ডিজাইনার হবেন বলে এক সময় তৈরি হচ্ছিলেন।
অনেক কিছু করব ভেবে তৈরি হচ্ছিলাম। একটা সময় টেনিস প্লেয়ার হব স্বপ্ন দেখেছিলাম।

খুব সিরিয়াস ছিল সেই স্বপ্নটা? টেনিস খেলতেন রেগুলার?
ইয়েস, টেনিস খেলতাম। প্লাস যত রকমের স্পোর্টস হতে পারে। ফুটবল থেকে শুরু করে বাস্কেটবল। ফুটবলে গোলকিপার খেলতাম আমি। এতই ভালো খেলতাম যে, মেয়েদের স্কুল টিমে রেগুলার ছিলাম। ছেলেরা এসে অবধি ধরত, অ্যা-ই তুই আমাদের টিমেও খেল না।

সব চেয়ে বড় আকর্ষণ অবশ্য টেনিস ছিল। সানিয়া মির্জা আমার ভালো বন্ধু। গতবছর ওর দেওয়া টিকিটে উইম্বলডন অবধি দেখতে গেছিলাম। টেনিস র্যাকেট হাতে পেলে আমার আর কিছুই চাই না। ফাঁকা কোর্ট থাকলেই হলো। টিভিতে খেলা দেখার চেয়ে নিজে নেমে পড়াটা আমার কাছে অনেক বেশি স্যাটিসফাইং।

কী বলছেন। শুনলে আপনার প্রোডিউসররা তো ভয় পেয়ে যাবে।
সত্যি আউটডোরে ফাঁকা টেনিস কোর্ট পেলেই হলো। তা ছাড়া সেটে সুযোগ পেলেই ভলিবল খেলা হয়। কিছু না কিছু খেলাধুলো চলতেই থাকে।

স্পোর্টস তো শৃঙ্খলাবদ্ধ কম্পিটিশনই শেখায়। জেতার কথা বলে। সেই ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে কী করে বলছেন আমি আমার স্পেসে থাকি, অন্যদের নিয়ে টানাটানি করতে চাই না?
আমি বলতে চাইছিলাম জীবনে যা কিছু করেছি নিজের স্পেসে থেকে করেছি। আমি সব সময় যা করেছি খুব ভালোভাবে করেছি। আর সেটা আমার মাথায় টনটনে হয়ে আছেও। বেশির ভাগ সময়ই তো স্কুল টিমের আমি ক্যাপ্টেন। কী ফুটবল! কী ভলিবলে! আমাকে আমার হাউজের প্রিফেক্টও বাছা হয়ে ছিল।

মানে সব সময়ই আপনি একটা ‘ডমিনেট’ করার জায়গা বেছে নেন।
আ হা হাঃ হাঃ

সেটা আপনার কাছে খুব উপভোগ্যও।
ইয়েস এনজয় করি।

মানে জীবনে যা-ই ঘটুক না কেন, আপনার সব সময় কামনা হলো পজিশন অব অথরিটিতে থাকতে হবে?
উফ্, তা কেন? আমি বরঞ্চ বলব: আমার ভালো লাগাটা হলো, লোকে যে আমাকে ওই পজিশনে বসায়। আমি জানি আমি একজন মানুষ, যাকে রেসপনসিবল বলা যায়।

আপনি যে সব চরিত্র-টরিত্রতে অভিনয় করেন সেগুলো এই ‘রেসপনসিবল’ মহিলাটি থেকে কত আলাদা? যেমন ধরা যাক, ‘লুটেরা’তে আপনার করা বাঙালি তরুণী পাখি।
অবভিয়াসলি অনেক আলাদা। পঞ্চাশের দশকের বাংলার এক মেয়ে, তার সঙ্গে আমার বিশেষ মিল থাকার কথা নয়। আমি চরিত্রটা নিয়ে কোনো রকম রিসার্চও করিনি। পুরো বিশ্বাস রেখেছিলাম আমার ডিরেক্টরের ওপর। ওঁর বোধহয় মনে হয়েছিল আমাকে বাঙালি-বাঙালি দেখতে। মনে হয়েছিল যে, এই সময়ের চালচিত্রের সামনে আমাকে দাঁড় করালে লোকের কাছে সেটা বিশ্বাস্য লাগবে। রোলটা মোটেও সহজ ছিল না। ঠিকঠাক তোলার জন্য প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। পরে নিজেই সিনেমাটা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি। মনে হয়েছে পর্দায় এটা আমি নই। অন্য কোনো অভিনেত্রী। প্রত্যেকটা ফ্রেম কী অপূর্ব। যেন মনে হচ্ছে পেইন্টিং। অথচ আমরা যারা কাজ করেছি তারা জানি কত বেসিক জিনিসে কাজটা উঠেছে। যত পারা যায় কম মেক আপ। কম লাইটিং। সব কম কম। অথচ তার এত স্মরণীয় এফেক্ট।

তবে কামিং ব্যাক টু আপনার ওরিজিনাল প্রশ্ন। পাখি আর আমি দৃষ্টিভঙ্গিতে মোটেও এক নই। যে মানসিক দৃঢ়তা পাখি সিনেমায় দেখায়। যে অদম্য অ্যাটিটিউডটা ওর মধ্যে কাজ করে। তার সঙ্গে হয়তো আমার মিল রয়েছে। কিন্তু বাকিটা নয়। আদৌ নয়।

ধরা যাক, পাখির প্রিফেক্ট আপনি। কী পরামর্শ দেবেন ওকে?
পাখির প্রিফেক্ট? বাবাঃ! আমি তা হলে ওকে বলব, এত অন্ধের মতো, পাগলের মতো চোখ বুজে তোমার পুরোটা দিয়ে প্রেমে পড়তে যেও না। একজনকে ভালো করে চিনলেই না, তার এতটা প্রেমে পড়ে গেলে, এ তো সাঙ্ঘাতিক ঝুঁকি।

পরের ‘লুটেরা’ কবে? আপনার ভাবগতিক আমাদের কনফিউজ করে। এই যে করলেন ‘বুলেটরাজ’ বা আজ যে শ্যুটিংটা করছেন। কী যেন ‘জ্যাকসন অ্যাকশন’! অজয় দেবগনের সঙ্গে।
আসলে ‘লুটেরা’ এমন একটা বেঞ্চমার্ক সেট করেছে তার পর হয় সমকক্ষ কিছু করতে হবে। বা তার চেয়ে ভালো। কাজেই আমি অপেক্ষা করতে রাজি আছি। বছরে চারটে মশালা ছবি করব, তার সঙ্গে একটা লুটেরা।

আপনি তো বড় হয়েছেন এমন পরিবেশে যা ভরপুর মশালা ছবির জগৎ। আপনার বাবা তো এ সব ছবিতেই অ্যাক্টিং করতেন। আপনার মনোজগৎটাও নিশ্চয়ই সেই প্যাটার্নেই তৈরি?
একেবারেই নয়। আমি ফিল্ম দেখাদেখি নিয়ে কোনোদিন উৎসাহী ছিলাম না। আমার বাবা যে শ’দুয়েক সিনেমা করেছেন, ভাবতে পারেন তার মধ্যে আমি দেখেছি মাত্র পাঁচ-ছ’টা। আমি আমার জীবনে কোনো সাদা-কালো ছবি দেখিনি। আমি হিন্দি ছবির সেই বিরল হিরোইন যে কিনা ‘শোলে’ দেখেনি।

কী বলছেন? ‘শোলে’ দেখেননি?
জাস্ট দেখতে ইচ্ছে করেনি। কিছু লোক থাকে না, যাদের জগৎটা হয়তো অন্য। যারা এর মধ্যে অ্যাট্রাকশন খুঁজে পায় না। আমার হয়তো তেমনই ছিল। আমার স্পোর্টস ছিল। ফ্যাশন ছিল। জীবনে কোনো দিন অ্যাক্টিং স্কুলে যাইনি। কারও কাছে অভিনয়ের চর্চা করিনি।

শত্রুঘ্ন কী টিপস দিয়েছিলেন বাবা হিসেবে?
বাবা বলেছিলেন, ‘তুমি যদি সেরা হতে না পারো, তা হলে অন্তত বাকিদের চেয়ে আলাদা হোয়ো।’ আমার মনে হয়, ওর নিজের কেরিয়ারে এটা উনি করে দেখিয়েছেন। ফিল্মে হোক। রাজনীতিতে হোক। ওকে সব সময় স্বতন্ত্র একজন ব্যক্তিত্ব হিসেবে মানুষের চোখে পড়েছে। ওর ডায়ালগ ডেলিভারি, ওর ব্যক্তিত্বসবটাই আলাদা।

আপনার বাবার মতো ঝরঝরে বাংলা বলতে পারেন?
না, একদমই না। বাবা কী করে শিখেছিলেন জানি না। কিন্তু উনি খুব ভালো বলেন। আমাকে অনেকে বাঙালি বাঙালি দেখতে বলে। বাঙালি রান্না আমার খুব পছন্দ। কলকাতায় যখনই যাই, ওই সর্ষে মাছটা আমায় খেতেই হবে। মিষ্টি দই খেতে হবে। হলুদ রসগোল্লাটা খেতে হবে। কিন্তু বাংলা ভাষাটা আমার আয়ত্তে নেই।

বাবার কোন কোন ছবি আপনার প্রিয়?
‘খুদগর্জ’ ভালো। ‘কালিচরণ’ ভালো।

‘কালাপাত্থর’ দেখেননি? বা ‘দোস্তানা’?
ইয়েস, ‘কালাপাত্থর’ দেখেছি। ‘দোস্তানা’ দেখিনি।

আপনার রাজনৈতিক মতামত কী? বাবার মতো বিজেপি?
আমাদের সব সময় শেখানো হয়েছে, যে ভালো কাজ করেছে তাকে ভোট দিতে। সে যে পার্টির-ই হোক।

এটা তো পলিটিক্যালি কারেক্ট উত্তর হয়ে গেল।
হলো না। হতো, যদি বলতাম: বিজেপি-কে সাপোর্ট করি। সেটাই আমার পক্ষে বলা স্বাভাবিক তো।

AKএই আদ্যক্ষর দুটো আপনার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ না?
মানে?

আপনার মনে থাকার কথা নয়। আজ থেকে তিন চার বছর আগে আপনার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল সেলিম খানের বাড়ির লাঞ্চে। ‘দাবাং’য়ের সেলিব্রেশন ছিল সেটা। তখন দেখেছিলাম আপনাকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন আরবাজ খান। এখন শোনা যায় আপনার ফ্রেন্ড, ফিলজফার অ্যান্ড গাইড অক্ষয়কুমার। ফ্রম ওয়ান ‘একে’ টু অ্যানাদার। দুই মেন্টর।
হ্যালো, দু’জনের কেউই আমার গাইডটাইড নয়। মেন্টর তো নয়ই। ওরা বরং নিজেদের বাচ্চাদের মেন্টর হোক (হাসি)। দু’জনেই আমার সহকর্মী। অভিজ্ঞতায় নিশ্চয়ই আমার চেয়ে বড় কিন্তু। আরবাজ আমার প্রথম ছবির প্রোডিউসর। একটা স্বপ্নের দিকে দু’জনেরই প্রথম একসঙ্গে হাঁটা শুরু। সে দিক থেকে অনেক কিছু আমরা শেয়ার করেছি। কিন্তু অন্তরঙ্গতার স্কেলে সালমান আমার অনেক ঘনিষ্ঠ। সালমান আমাকে সতেরো- আঠারো বছর বয়স থেকে চেনে। তখন তো সবে কলেজে। যথেষ্ট থপথপে মোটাও আমি। তখন থেকে ও আমায় উৎসাহ দিয়ে এসেছে যা জিমে যা। ওজন কমা। এমনও বলেছে, “তোর দ্বারা সিনেমা হবে। তুই শুধু রোগা হ।” সালমান দারুণ ইন্সপায়ারিং মানুষ। এখনও বলে, “আরও বেটার করতে হবে। আরও খাট। আরও সময় দে।’

আর অক্ষয় কী বলেন এখন?
অক্ষয় বলেন, “এখন তোমার সময়। যত পারো কাজ করো। যাতে ভবিষ্যতে মনে কোনো আফশোষ না থাকে।” আমিও তাই এতটাই কাজ নিয়েছি, যাতে বছরে যেন আমার চারটে ছবি রিলিজ হয়। অক্ষয়েরও তাই বছরে চারটে। ওই ‘AK’র মেন্টরিং বলছিলেন না মিল বলতে এইটুকুই। অনেকে আমাকে ‘ফিমেল অক্ষয়কুমার’ ডাকতে শুরু করেছে (হাসি)।

দুটো খান হয়ে গেল সালমান আর সইফ। পড়ে থাকল দুটো খান।
হুঁ কিন্তু আমি কী করব? এই প্রশ্নের উত্তর তো ওরা দিতে পারবে। জিজ্ঞেস করে দেখুন না!

কেন ওদের চেনেন না?
সামাজিকভাবে চিনি। হাই হ্যালোও রয়েছে। তার বেশি কিছু নয়। কাজের কথা কখনো হয়নি।

আর মিস্টার বচ্চন। উনি প্রাক্তন বন্ধুর মেয়েকে কোনো পরামর্শটরামর্শ দেন না?
ওরে বাবা! (চোখ কপালে তুলে) নো। নো।

ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে বলে আপনার মধ্যে একটা চাপা সংকল্প রয়েছে। যেটা স্ট্রেস আর কম্পিটিশনের মধ্যেও ভালো ব্যালান্স করে।
আমি বরাবরই মানুষ হিসেবে রেসপনসিবল। ছোটবেলা থেকেই।

‘রেসপনসিবিলিটি’ শব্দটার মানে কী?
আমার মতে রেসপনসিবিলিটি হলো মেয়ের জন্য বাবা-মাকে কোনো পাবলিক লজ্জার মুখোমুখি হতে না হওয়া। সে মিডিয়া থেকে আসুক বা অন্য কোথা থেকে। রেসপনসিবিলিটি হলো লোকের মনে নিজেকে ধারাবাহিক রোল মডেল হিসেবে রেখে দিতে পারা। রেসপনসিবিলিটি হলো এন্টারটেনার হিসেবে লোককে খুশি রাখতে পারা।

স্রোতের বিরুদ্ধে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে হাঁটাটা কতখানি শক্ত? জিরো ফিগার নিয়ে আসা কারিনা যদি দক্ষিণ মেরু হন, লম্বা সুপুষ্ট চেহারার আপনি তো এমনই উত্তর মেরু যার দিকে নায়িকারা মাড়াতেই চায় না!
এই যে আপনাকে বলছিলাম, আলাদা হলে ঝট করে চোখে পড়ে। সেটাই হয়তো আমার পক্ষে গিয়েছে। সবাই বলতে শুরু করল এই রোগা লম্বা হাড্ডি হাড্ডি কালচারে ইউ স্ট্যান্ড আউট। তুমি এক ঝলক তাজা হাওয়ার মতো। সত্যি বলতে কী প্রথম যখন ফিল্মে নামি মোটা-রোগা নিয়ে এত ভাবিওনি। যে রোলটা পেয়েছিলাম সেটা নিয়ে কী করে উতরোবো, সেটাই প্রথম লক্ষ্য ছিল। আমি সেটাই করতে গিয়ে দেখলাম আমার চেহারাটা অ্যাকসেপটেড হয়ে গিয়েছে।

চেহারাটা নিয়ে নিজের সঙ্গে, বাইরের জগতের সঙ্গে কোনো লড়াই লড়তে হয়নি? অ্যাকট্রেসদের একটা ভয় থাকে না যে একটু গায়ে পড়লেই পর্দায় মোটা দেখাবে। বাদ হয়ে যাব!
নেভার। আমি খাই ভালো করে, ওয়ার্ক আউট করি মন দিয়ে। খুব হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেন করি। আমার ওয়েট নিয়ে তাচ্ছিল্য করে মিডিয়া কী লিখল তাতে আমার কিছু এসে যায় না। যদি লেখাগুলো সত্যি হতো তা হলে তো বিনা কাজে অ্যাদ্দিন আমার বসে থাকার কথা। দেখছেন তো আমার অবস্থা। রোজ কাজ। গত রোববার অনেক দিন পর একটা ছুটি পেয়েছিলাম। যাদের ওয়েট আমার চেয়ে কম, একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন তো তারা এত কাজ পাচ্ছে কিনা!

খুব বিরক্ত লাগে এ সবে আপনার?
আসলে লেখার কিছু পাচ্ছে না তো। গোপন কোনো বয়ফ্রেন্ডের খোঁজ পাচ্ছে না। কোনো কেচ্ছার হদিশ পাচ্ছে না তো আর কী করবে? ওজন নিয়েই পড়ল। আসলে আমার কাজ তো অভিনয় করা। সেটাতে কি খুঁত খুঁজে পেয়েছে? পায়নি। হিন্দি সিনেমার হিরোইন হলে তাকে ভালো নাচতে জানতে হবে। আমি আবার নাচতে খুব ভালোবাসি। এই যে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে লাইভ ক্রাউডের সামনে নাচব ভেবেই এক্সাইটেড লাগছে। এই শো-গুলোতে সব কিছু এত রিয়াল। এত জীবন্ত। তো আমার সেই নাচেও তো কোনো খুঁত আবিষ্কার করা যায়নি। তা হলে কী নিয়ে খোঁচা দেবে মিডিয়া? পড়ে থাকল ওয়েট। একমাত্র ওয়েট!

কে বলতে পারে একদিন আপনিই জিরো ফিগার দেখিয়ে সমালোচকদের চমকে দেবেন না? যেমন নায়কেরা দুমদাম সিক্স প্যাক করে ফেলে-টেলে!
নো। আই অ্যাম নট ইন্টারেস্টেড। আমি ওজন নিয়ে এখানে কাউকে কিছু প্রমাণ দিতে আসিনি। আমি কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে এসেছি। যা বলাবলি হয়েছে তার মজবুত উল্টোদিকও কিন্তু রয়েছে। সমাজের একটা বড় অংশের মনে হয়েছে আমাকে দেখে তাঁরা একটা সাহস পেল যে একটু গোলগাল হওয়া মানেই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়া নয়। কত মেয়েরা এসে আমাকে বলেছে, “ওয়েট নিয়ে নিজেরা তীব্র অপরাধবোধে ভুগতাম। আপনাকে দেখে বুঝেছি নিজেরা নিজেদের মতো থাকার মধ্যে মন খারাপের কিছু নেই।” কত জায়গায় আমাকে লোকে বলেছে। কলেজে-অফিসে-কফিশপে যখন যেখানে ফিল্ম প্রোমোশনের কাজটাজ করতে গিয়েছি কত জন এসে বলেছে, “আপনার থেকে ভরসা পেয়ে আবার হাসিমুখে চাকরিবাকরি করছি। হারিয়ে যাওয়া কনফিডেন্সটা ফিরে পেয়েছি।”

শুনলে কী দারুণ লাগে! এমন সব কথা, হিট ছবির চাইতে অনেক বেশি মোটিভেশন দেয়। সূত্র: ওয়েবসাইট

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More