আজ থেকেই পুলিশ দিয়ে মাঠ দখলে আ.লীগের

0

image_112704_0ঢাকা: বিগত কয়েকদিন ধরে পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় ও সংবাদপত্রের শিরোনামে উত্তেজনার পারদ উঠছিল বেশ জোরেই। মনে হচ্ছিল দেশে বুঝি বড় ধরনের সংঘাত শুরু হবে ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে। কিন্তু শুক্রবার দিবাগত রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তার গুলশানস্থ কার্যালয়ে পুলিশ আটকে রাখার পর যে শীতল প্রতিক্রিয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা দেখিয়েছেন, তাতে সবাই বিস্ময়ে হতবাক।কারণ ঢাকার কোথাও নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো উত্তেজনা দেখা যায়নি। এমনকি বেলা ১টার দিকে গুলশান অফিসের সামনেও তেমন কোনো ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। বেলা ১টার দিকে সেখানে এক্’দেড়শর মতো নেতাকর্মীকে ঘোরাঘুরি দেখে গেছে- এই যা।

তবে সকালের দিকে জাতীয়তাবাদীপন্থী সাংবাদিক নেতাদের একটি অংশ জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৈঠক করতে দেখা যায়। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের দলটি পুলিশ বাধা দেয়। পরে শওকত মাহমুদের তালিকা অনুযায়ী দশজনকে পুলিশ ঢুকতে অনুমতি দেয়। বাকিদের পেছনে ফেলে তারা ভেতরে ঢুকে যান। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল তা এই কঠিন সময়ে আরো প্রকট হয়ে উঠে। কারণ বিএফইউজে সভাপতি তার পছন্দদের নিয়েই তার তালিকা নির্ধারণ করেন যা অনেকেরে কাছে দৃষ্টিকটু পর্যায়ের ছিল।

জাতীয়তাবাদী নামের এই নেতৃবৃন্দের মধ্যে এই ধারণা জন্মেছে যে, তারা কয়েকজন মিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করলেই দেশে বড়ধরনের আন্দোলন ঘটে যাবে। এরকম অবস্থা মূল দলের মধ্যেও প্রচণ্ডভাবে বিরাজ করছে। ফলে সংবাদপত্রের পাতায় উত্তেজনার পারদ বাড়লেও বাস্তব অবস্থা সম্পুর্ণ ভিন্ন। তার বাস্তব অবস্থা দেশবাসী আজ ভালোভাবে প্রত্যক্ষ করছে। সম্ভবত সরকার তা ভালোভাবে জানে বলেই পূর্ব অবস্থা হিসেবে গত রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার গুলশান কার্যালয়ে আটক করে ফেলে।

আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, সরকার আগের প্রস্তুতি অনুযায়ী সারা ঢাকা শহরে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিভিন্ন ইসলামী ব্যানারে ব্যাপক শোডাউনের ব্যবস্থা করে। পক্ষান্তরের এদিন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের কোনো তৎপরতা খোঁজে পাওয়া যায়নি। বরং মনে হয়েছে গুলশান অফিসে বেগম খালেদা জিয়ার আটকের খবর শুনে নেতা-কর্মীরা আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে গেছে। ওলামা দলের একজন নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে ঈদে মিলাদুন্নবী মিছিলের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ করতে দেয়নি।

তবে আজকের ঘটনাপ্রবাহ দেখে মনে হয়েছে, সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও বিএনপি কিংবা ২০ দলীয় জোটের কোনো প্রস্তুতি নেই। তবে সামনে হয়তো ২০ দলীয় জোটের একটিই পথ খোলা আছে, আর তা হচ্ছে লাগাতার হরতাল কিংবা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করা। কারণ বর্তমানে এ ধরনের কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের খুব একটা ঘর থেকে বের হতে হয় না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More