ইস্তফার শর্ত মানছেন না হাসিনা, ফের হরতাল-অবরোধ

0
hasina-kery-phone_50306ডেস্ক: সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি শেখ হাসিনাকে ফোন করে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা থেকে বিরত থাকা এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তাকে ইস্তফা দেয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কেরিকে দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তার দুটি পরামর্শের কোনোটিই মানা সম্ভব নয়।
‘ইস্তফার শর্ত মানছেন না হাসিনা, ফের হরতাল-অবরোধ’ শিরোনামে সোমবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা ও মন্ত্রীর বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছে।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, সংট নিরসনের রাস্তা হারিয়ে ক্রমশ ভয়াবহ সঙ্ঘাতের দিকেই চলেছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ সূত্রে খবর, বিএনপিকে তারা জানিয়ে দিচ্ছে নির্বাচনী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে শেখ হাসিনাকে সরানো হবে না। শাসক দলের হাবভাব বুঝেই সোমবার বিজয় দিবসের পরদিন থেকেই ফের লাগাতার হরতাল-অবরোধের মতো কড়া কর্মসূচি নিতে চলেছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। আর বিরোধীদের সেই ‘হিংসা-নাশকতা’ রুখতে নিরাপত্তা কর্মীদের
পাশাপাশি এ বার দলের কর্মীদেরও মাঠে নেমে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যেই, একাত্তরে গণহত্যার আসামি কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে জামাতে ইসলামীর হরতালে এ দিন দেশের নানা জায়গায় সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন অন্তত ৮ জন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শনিবার একান্ত বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের হাতে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের একটি প্রস্তাব তুলে দিয়েছিলেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে রাষ্ট্রপতি, সংসদের স্পিকার বা অন্য এক প্রাক্তন মন্ত্রী অন্তর্র্বতী নির্বাচনী সরকারের নেতৃত্বে থাকলে বিএনপি ভোটে যেতে রাজি। এই প্রস্তাব বিবেচনা করে শিগগিরই আবার বৈঠকে বসার প্রতিশ্রুতি দেন আশরাফুল। কিন্তু নির্বাচনী সরকারের মন্ত্রী আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “অসম্ভব শর্ত। বিএনপি নির্বাচনে না-এলে না-আসবে, কিন্তু তাদের ওই শর্ত কিছুতেই মানা যাবে না।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার উদ্দেশে হাসিনা ঘোষণা করেছেন, “পদত্যাগ আমি কিছুতেই করব না, আপনি যাকে দিয়েই ফোন করিয়ে চাপ সৃষ্টি করান।’যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদেরও ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, “আলোচনা চলছে বটে, কিন্তু বিএনপি-র নির্বাচনে আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ।”
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দিকে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, মোট ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টিতেই একজন করে প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগ ও তার শরিকদের ১৩২ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া এরশাদের জাতীয় পার্টির ২০ জন ও জাতীয় পার্টি (জেপি)-র দুইজন প্রার্থীও এ ভাবে জয়ী হয়েছেন। ৫ জানুয়ারি বাকি আসনগুলিতে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনের আগেই গরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে শেখ হাসিনার জোট। বাকি যে সব আসনে ভোট হবে, সেখানেও শাসক জোটের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রহসন বলে সমালোচনায় মুখর হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বেশ কিছু নাগরিক সংগঠন। তাদের অভিযোগ, জঙ্গি প্রতিরোধের অজুহাত তুলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংসে নেমেছেন হাসিনা। সাজানো নির্বাচনে তারা ক্ষমতা দখলে রাখতে মরিয়া। এদিনই জামায়াতের হরতালে ফের রেলপথ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ফলে উত্তরবাংলার সঙ্গে দেশের বাকি অংশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। লালমনিরহাট ও জয়পুরহাটে পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র জামায়াত কর্মীদের দিনভর সংঘর্ষে ছয়জন মারা গিয়েছেন। ক’দিন ধরে তেতে থাকা লক্ষ্মীপুরে আজ শাসক দলের এক কর্মীকে খুন করেছে জামায়াত। ব্যবসাপত্র লাটে ওঠায় সাদা পতাকা নিয়ে রোববার ঢাকার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান ব্যবসায়ীরা।

এম এস/এইচ এন
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More