ঈদে এলেই চলে সার্জেন্টদের সিএনজি বাণিজ্য, সহযোগিতায় পুলিশের বড় কর্মকর্তারা

0

Police CNG cadaঢাকা: ভাড়ায় চালানোর অনুমতি নেই তবুও চলেছে ভাড়ায়, প্রাইভেট লেখা থাকলেও চড়ে পাবলিক। দিন দিন বেড়েই চলছে অবৈধ এমন সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা। ঈদকে সামনে রেখে এগুলোর চলাচল অবৈধ থেকে বৈধতা দিতে চলছে ‍তুমুল প্রতিযোগিতা।

বাংলামেইলের অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে রাজধানীর মোহাম্মপুর, মিরপুর, পল্লবী, তেজগাঁও এলাকায়  ট্রাফিক পুলিশই প্রতি মাসে মাসোহারা খেয়ে অবাধে চলার সুযোগ করে দেয় এসব অবৈধ সিএনজির।  এর মধ্যে মিরপুর ১০ নম্বর চোখে পড়ার মত।

অনুসন্ধানে দেখা যায় মিরপুর ১ থেকে ১২ এবং পল্লবী এলাকায় গড়ে ওঠা সিএনজি চালিত প্রাইভেট অটোরিকশার গ্যারেজের সংখ্যা অর্ধশতাধিক।

অনুসন্ধানে দেখা যায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সিএনজি চালিত প্রাইভেট অটোরিকশা আছে।

এরা মাসে ৫০০ টাকা মাশোহারা দেয়। এতে দেখা যায় এ খাতে কয়েক কোটি টাকা বাণিজ্য হয় ট্রাফিক পুলিশের।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীকে চারটি ভাগে ভাগ করে ট্রাফিক পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ চালায়। এর মধ্যে তিনটি এলাকার অটোগুলোর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারলেও পশ্চিমেরগুলোর নিয়ন্ত্রণ আনতে পারছে না ট্রাফিক পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।

বাংলামেইলের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ট্রাফিক পশ্চিমের সার্জেন্টরা অটোরিকশাগুলো বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন। সে অনুযায়ী টাকাও বণ্টন করে নিচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে সিএনজির মালিক হিসেবে ভাগ করে মাশোহারা নিয়ে বিভিন্ন রুটে অবাধে চলতে সুযোগ করে দিচ্ছে খোদ ট্রাফিক সার্জেন্টরা। ট্রাফিক ইনস্পেক্টর (টিআই) অফিসারও বাদ পরছে না এ কমিশন থেকে।

সার্জেন্টেরা যার যার মতো করে মাশোহারা খেলেও টিআইকে দিতে হয় মোটা অংক। সেই সঙ্গে টিআইরা সরাসরি মালিকদের সঙ্গেও চুক্তি করে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসব প্রাইভেট সিএনজি ট্রাফিকের সার্জেন্ট যদি ধরেও ফেলে তাহলে তাকে আগে জিজ্ঞেস করে কার লাইনে চলে। এই লাইন মূলত কোন টিআই বা কোন সাজেন্টের আন্ডারে চলে সেটি নির্দেশ করে। যদি সঠিক উত্তর মেলে তাহলে বাধা নেই আর যদি উত্তরের মিল না পাওয়া যায় তাহলে ১৫২ ধারায় একটি মামলা অথবা ডাপিং।

এ বিষয়ে পশ্চিমের ডিসি বাংলামেইলকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া মাত্র এসব আফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে এর আগে সঠিক প্রমাণ থাকতে হবে। আপনারা (সাংবাদিক) আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করবেন। আপনারা প্রায় সময়ই রাস্তায় থাকেন এবং সব কিছুই দেখতে পান। আপনারা আমাদের বলবেন আমার ব্যবস্থা নেব।’

ঈদকে ঘিরে যদি এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে পশ্চিম এসি অ্যাডমিন মোস্তফা কামাল রাশেদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘আমাদের কানেও এ বিষয়টি এসেছে। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি, প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, ‘আমার এসব এলাকায় ইতোমধ্যে অভিযান শুরু করে দিয়েছি। আমরা প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশার নামে মামলা করছি। যে সিএনজিতে মালিক নিজেই থাকে সেগুলোতে সমস্যা নেই। সিএনজিতে যাত্রী থাকলে মামলা এবং কাগজ না থাকলে ডাপিংয়ে পাঠানো হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘অন্য এলাকাগুলোতে চলতে না পাড়ায় এখন পশ্চিমে ঢুকে পড়তে পারে তাই আমরা এর বিরুদ্ধে যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এর সঙ্গে ট্রাফিকের কেউ যদি জড়িত থাকে তাহলে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,  ‘অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয় হবে।’

বিআরটিএর সূত্র বাংলামেইলকে জানায়, সরকার অনুমোদিত চার হাজার সিএনজি চালিত অটোরিকশা রয়েছে। এগুলো ভাড়ায় বা বাণিজ্যিকভাবে চালানোর নিয়ম নেই।

প্রাইভেট (ছাই) এবং বাণিজ্যিক (সবুজ) অটোরিকশার রঙ ও নম্বরপ্লেট আলাদা। প্রাইভেটের নিবন্ধন নম্বর ঢাকা মেট্রো-দ দিয়ে শুরু। আর বাণিজ্যিকের নম্বরপ্লেট ঢাকা মেট্রো-থ দিয়ে শুরু। তবে প্রাইভেট অটোরিকশার মালিকরা ছাই রঙ পরিবর্তন করে সবুজ রঙ করছে। ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করে ভাড়ায় চালাচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More