এবার স্বাধীনতা চায় ভেনিস

0
seacity23ঢাকা: পথ দেখিয়েছে কৃষ্ণসাগরীয় উপদ্বীপ ক্রিমিয়া। ইউক্রেন থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করেছে দেশটি। আর কিছু দিন পর হয়তো সেই রাস্তাতেই হয়তো হাঁটবে স্কটল্যান্ডও। এবার সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে আরো একটা নাম।  ইতালির সঙ্গে দীর্ঘ দেড়শো বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছে ভেনিস। দ্বীপটি ও তার আশপাশের এলাকার ঊননব্বই শতাংশ মানুষ নাকি চাইছে ইতালির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে স্বাধীন দেশ ‘রিপাবলিকা ভেনিতা’ গঠন করতে।
ভেনিসবাসীদের আশার পালে হাওয়া লাগিয়েছে অবশ্য সাম্প্রতিককালে স্বাধীন হওয়ার লক্ষ্যে ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত গণভোট। তাই ভেনিসবাসীও চাইছে ইতালি থেকে পৃথক হওয়ার জন্য গণভোট হোক সেখানে।
অবশ্য বহু বছর আগে স্বাধীন দেশ হিসেবেই পরিচিত ছিল খালের শহর বলে পরিচিত রহস্যময় নগরী ভেনিস। রিপাবলিকা ডি ভেনেসিয়ার স্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল প্রায় হাজার বছরের পুরনো। ১৮৬৬ সালে নেপোলিয়ান ইতালির সঙ্গে জুড়ে দেন ভেনিসকে। তখন থেকেই ইতালির অংশ হিসেবে পরিচিত ভেনিস।
কিন্তু দীর্ঘ দেড়শো বছরে ধীরে ধীরে ইতালি সরকারের সঙ্গে তিক্ততা বেড়েছে ভেনিসবাসীর। শহরের উচ্চবিত্তদের একটা বড় অংশের দাবি, সাত হাজার একশো কোটি ইউরো কর হিসেবে ভেনিস দিয়ে থাকে রোমকে। অথচ পরিবর্তে মাত্র দুহাজার একশো কোটি ইউরো ফেরত পায় তারা। সরকারের কোনো পরিসেবাই সে ভাবে পৌঁছায় না তাদের কাছে। দেশের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে তুলে ধরার বিরাট দায়িত্ব ধনী ভেনিসবাসীদের একাংশের কাঁধে। অথচ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারাই উপেক্ষিত। এই ক্ষোভ থেকেই মূলত নিজেদের ইতালি থেকে বিচ্ছিন্ন করার ভাবনা এসেছে ভেনিসবাসীর।
শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বঞ্চনা সহ্য করতে করতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে ভেনিসবাসীর। ভেনিসের অধিকাংশ লোকই এখন আর রোমকে কর দিতে চাইছে না।’ সুতরাং হাতে এখন একটাই অস্ত্র গণভোট।
অবশেষে একটা সুযোগ এল গত ১৬ মার্চ। সে দিনই গণভোটের মাধ্যমে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্রিমিয়ার অধিবাসীরা। সেই দিন থেকেই গণভোটের ব্যবস্থা হয়েছিল ভেনিসে। বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে সেই ভোটগ্রহণ চলেছে পাঁচ দিন ধরে। সেখানে ঊননব্বই শতাংশ মানুষ রায় দিয়েছে স্বাধীন ভেনিস রাষ্ট্রের পক্ষে। তাদের প্রস্তাবিত নতুন দেশের নাম ‘রিপাবলিকা ভেনিতা’। ৫০ লাখ মানুষের ওই নতুন দেশে মূলত ভেনেতা এলাকার বাসিন্দারাই থাকবেন। পরে আশেপাশের লাম্বার্ডি, ট্রেনটিনো, ফ্রিউলি-ভেনেজিয়া জিউলিয়া অঞ্চলকেও একত্রিত করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে তাদের।
ভেনিসবাসীকে সাহস জোগাচ্ছে স্কটল্যান্ডও। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে সেখানেও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা যেখানে ঠিক করবেন, তারা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে থাকবেন, নাকি ইউরোপে গঠিত হবে স্বাধীন স্কটল্যান্ড রাষ্ট্র।
ভেনেটো এলাকার নর্দান লিগ পার্টির প্রেসিডেন্ট লুকা জাইয়া অবশ্য প্রত্যয়ী। তিনি বলেন, ‘বিপ্লব তো খিদে থেকেই জন্মায়, আমরা ক্ষুধার্ত। ভেনিস এখন পালাতেই পারে।’
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More