ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ

0

Mujibএ এম হাসান নাসিম

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের অবিস্মরণীয় একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ১৯ মিনিটের ভাষণের মাধ্যমে পাকিস্তানের অপশাসন থেকে বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র ঘোষণা করেন। তার এ ভাষণ স্বাধীনতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

বঙ্গবন্ধুর এ আহবানেই বাঙালি জাতি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পরে ২৫ মার্চ পাক-বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। অবশেষে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে লাখো শহীদের আত্মদান, মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ও ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

৭ মার্চ দিনটিতে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে দলে দলে। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে-লঞ্চে, কেউবা ট্রেনে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় বিশাল এ ময়দান ও আশপাশের এলাকা।

জনসমাবেশে অনেকের হাতেই ছিল মানচিত্র আঁকা লাল সূর্যের অসংখ্য পতাকা। তাদের গগণবিদারী স্লোগানে মুখরিত ছিল গোটা শহর।

বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতাকাটা কালো কোট পরে বাঙালির প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু উঠে এলেন মঞ্চে। মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানালেন অপেক্ষমাণ জনসমুদ্রকে। তারপর শুরু করলেন তার ঐতিহাসিক ভাষণ।

মাত্র ১৮-১৯ মিনিটের এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে তুলে আনেন অবিশ্বাস্য এক উচ্চতায়। এতে সামরিক আইন প্রত্যাহার, সেনাবাহিনীর ব্যারাকে প্রত্যাবর্তন, শহীদদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও জন প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর সংবলিত চার দফা দাবিও উত্থাপন করেন তিনি।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। পৃথক বাণীতে দিনটিকে বাঙালির ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেন তারা।

যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকেল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে সমাবেশ।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার এবং জাতীয় পত্রপত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More