তানিয়া ইয়াসমিন মণি। পুলিশের সোর্স হিসেবেই তার পরিচিতি। এরই মধ্যে তার চার-চারটি ঠিকানার সন্ধান পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ঠিকানায় তার ক্ষণিক বসবাসের খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু এসবের কোথাও ওই রহস্যময়ী নারী থিতু হয়নি। সাংবাদিকরা সন্ধান চালিয়ে তার এমন রহস্যঘেরা তথ্য উদঘাটন করেন।
তানিয়া ইয়াসমিন মণিই সিলেটের সিনিয়র সাংবাদিক ও দৈনিক মানবজমিন-এর বিশেষ প্রতিনিধি চৌধুরী মুমতাজের বিরুদ্ধে মামলার বাদী। মামলার এজাহারে মণি তার মূল ঠিকানা হিসেবে চাঁদপুরের মতলব থানার আমিরাবাজার গ্রামের নাম উল্লেখ করেন। বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেন সিলেট শহরতলির গোটাটিকরের মসজিদের পার্শ্ববর্তী কলোনি। কিন্তু ওই এলাকায় সাংবাদিকরা অনুসন্ধান চালিয়েও মণি নামের কোন তরুণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।
তবে মণির জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট নেয়া হয় দক্ষিণ সুরমার সিলাম ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। ওই জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটে তার স্থায়ী ঠিকানা সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চকের বাজারের সিলাম গ্রামে উল্লেখ করা হয়। আর জন্মস্থান উল্লেখ করা হয় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামে। অথচ সিলাম গ্রামে খোঁজ করেও মণি নামের কোন নারীর কোনো তথ্য মিলেনি।
তবে দোয়ারাবাজারে একসময় মণির বসবাস ছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয় দোয়ারাবাজার সমুজ আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সে ২০০৭ সালে এসএসসি পাস করে।
তানিয়া ইয়াসমিন মণি বসবাসের পুরো তথ্য না পাওয়া গেলেও ওই নারী সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সোর্স হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
এদিকে, নগরীর শেখঘাট খুলিয়াটুলা এলাকার লোকজন জানান সাংবাদিক চৌধুরী মুমতাজকে গ্রেফতারের আগে সকাল ৯টা থেকে সাদা পোশাকে কোতোয়ালি থানার এসি সাজ্জাদ, ডিবি ইন্সপেক্টর মোজাম্মেলসহ পুলিশ কর্মকর্তারা খুলিয়াটুলা এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় এলাকায় বেশ কয়েকজন লোকের সঙ্গে তাদের দেখা হয়।
তারা এলাকার লোকদের জানান, মাদক সংক্রান্ত একটি অভিযানের সূত্র ধরে তারা ওই এলাকায় অবস্থান করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ওৎপেতে থাকা পুলিশ দলের সদস্যরা কোনো কিছু না বলে চৌধুরী মুমতাজকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে, মামলার এজাহারে কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করেছে তানিয়া ইয়াসমিন মণি। ওই নারীর উল্লেখিত তথ্য- ‘কয়েক দিন আগে সিএনজি অটোরিকশাতে চৌধুরী মুমতাজের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি সাংবাদিকতা করেন বলে জানান। একই সঙ্গে মানুষকে চাকরি দেন বলেও জানান। তখন আমি তার কাছে চাকরি চাই। এ সময় তিনি আমার মোবাইল নম্বর নেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১১টায় ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য শেখঘাট আসতে বলেন। তিনি শেখঘাটে এলে মুমতাজ তাকে আমিন উন নূরের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়।