জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বান

0

Hasinaঢাকা: ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ হামলা বন্ধে জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ থাকলে এ হামলা হতো না বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। ইসরায়লের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ফিলিস্তিনের স্বীকৃতিও দাবি করেন তিনি।

মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদে তৃতীয় অধিবেশনের দ্বিতীয় কার্যদিবসের ফিলিস্তিনের ওপর হামলার প্রতিবাদের নিন্দা জানিয়ে সাধারণ আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম সংসদে এ নিন্দা প্রস্তাব আনেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৮ জুলাই থেকে আট সপ্তাহ ধরে এ হামলা চলছে। ৫ হাজার ২২৬ বার বিমান হামলা চালানো হয়েছে। নারী ও শিশুরা বেশি হামলার শিকার হয়েছে। আক্রমণের লক্ষবস্তুই হচ্ছে শিশু। এটা কী ধরনের কথা? এটা মানবতার চরম লঙ্ঘন।’

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনিকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এ গোলাগুলি বন্ধ করতে হবে। হামাস কী অপরাধ করেছে, সেটা আমি দেখতে চাই না। তারা অপরাধ করলে তাদের বিচার হবে। কিন্তু এভাবে নির্যাতন চলতে পারে না। আমরা ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের পাশে আছি। তাদের জন্য যা প্রয়োজন আমরা করবো।’

হামলায় আহতদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের নিয়ে এসে চিকিৎসা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

ইসরায়েলের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসরায়েলকে যারা সমর্থন দিচ্ছে, সেটা প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানাই। সেটা প্রত্যাহার করে ইসরায়লের বিচার করা উচিৎ।’

ইসরায়েলের হাতে দখলকৃত ফিলিস্তিনের জমি ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে, ইসরায়েলের একটাই লক্ষ্য, ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। এ লক্ষ্য নিয়েই যেন তারা এ হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা ফিলিস্তিনিদের অনেক জায়গা দখল করে নিয়েছে। আরও ৪শ হেক্টর জায়গা দখল করার ঘোষণা দিয়েছে। ফিলিস্তিনের জমি তাদের কাছেই ফেরত দিতে হবে।’

তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘বিশ্ব বিবেক কি নাড়া পড়বে না? অথচ একটা ছোট ঘটনা হলেই আমরা দেখি, মানবাধিকার নিয়ে তোলপাড় হয়। এখন তাদের মানবতাবোধ কোথায় গেলো? মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় থেকে বাঁচানোর জন্য কতো চিঠি। এখন কেন এ শিশুদের রক্ষার চেষ্টা হচ্ছে না?

তিনি আরও বলেন, ‘এ হামলা থেকে একাত্তরের কথাই বারবার মনে পড়ে। পঁচাত্তরে একই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আমার সঙ্গে ইয়াসির আরাফাতের আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। তিনি আমাকে কন্যাসম দেখতেন। তাদের প্রতি সবসময়ই আমাদের সমর্থন আছে। তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি সমর্থন থাকবে।’

বক্তব্যের মাঝে প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনে আহত ও নিহত শিশুদের ছবি দেখান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে নিন্দা জানিয়ে আরও ২২ জন সংসদ সদস্য বক্তব্য দেন। এদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, মাঈনুদ্দিন খান বাদল প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

পরে সবার কণ্ঠভোটে সংসদে ‘নিন্দা প্রস্তাব’ গৃহিত হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More