বিএনপির সাথে কামরুল, তোফায়েলের গোপন বৈঠক ফাঁস, ক্ষিপ্ত আ’লীগ নেতারা

0

Commerce-Minister-Tofail-Ahmedঢাকা: সিঙ্গাপুরের পর এবার বাংলাদেশে গোপনে বিএনপি নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। সে বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমদের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সূত্র আর জানিয়েছে, তোফায়েল ছাড়াও ১৪ দলের আরও কিছু নেতাদের সে বৈঠকে দেখা গেছে। কিন্তু তারা কারা সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি সূত্রটি।

গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে বিরোধীজোটকে প্রতিহতের ঘোষণা দিলেও মূলত কামরুল ও তোফায়েল বিএনপির হয়েই কাজ করছে বলে সূত্রটি জানিয়েছে। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনকে চরম পর্যায়ে নিয়ে যেতেই বিএনপিপন্থী এজেন্টদের প্রেসক্রিপশনেই কামরুল তোফায়েলরা উসকানি মূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। যাতে আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী চলমান অস্থিরতার জন্য আওয়ামীলীগকেই দায়ী করে। আর সে কারণেই বিএনপির আন্দোলনকে দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্য ও উচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখছে কামরুল গংরা। এই দলে হানিফ ও হাসান মাহমুদও থাকতে পারে বলে সূত্রটি সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান হিরণ নিউজবিডিসেভেনকে জানান, সংস্কারপন্থী হওয়ায় তোফায়েল আহমদকে জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পর কোন মন্ত্রিত্ব না দেয়ায় ও প্রেসিডিয়াম সদস্য থেকে বাদ দেয়ায় এবং তোফায়েলের প্রতিপক্ষ হিসেবে আওয়ামীলীগের ইউসুফ হোসেন হুমায়ূনকে ভোলা-১ আসন থেকে মনোনয়ন দেয়ায় তিনি নেত্রীর উপর ক্ষিপ্ত। তোফায়েল আহমদ প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় বলেছেন, আমি জীবনে একদিনের জন্য হলেও আওয়ামীলীগের সভাপতি হবো। তারজন্য যা করার প্রয়োজন করবো।

হিরণ আরও জানান, তোফায়েল আহমদ মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে দিয়ে নেত্রীকে বিপদে ফেলতে চেয়েছিলেন এবং সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ভরাডুবির নেপথ্যে তার হাত ছিল। এছাড়াও আন্তর্জাতিক মহলের সাথে পরিকল্পনা করে শেখ হাসিনাকে শেষ করে দিতে চায় তোফায়েল। যে কারণে তোফায়েলকে জননেন্ত্রী বাধ্য হয়েই দ্বিতীয়বার মন্ত্রিত্ব দিয়েছেন।

বিএনপির সাথে গোপন বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে হিরণ জানান, তোফায়েল আহমদ শুধূ এবারই বিএনপির নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন তা নয়, তাকে এর আগেও বিরোধীদলের সিনিয়র নেতাদের গাড়িতেও দেখা গেছে নির্বাচনের সময়গুলোতে।

আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ইউসূফ হোসেন হুমায়ূন জানান, পিলখানার ঘটনার পর নেত্রী সেনাবাহিনীর বেঁচে যাওয়া সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে গেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তার উপর চরম ক্ষেপে যায়। সে অুনুষ্ঠান থেকে বের হবার পর আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, নেত্রী আমরাতো ভয়ে ছিলাম সেনাবাহিনী আপনাকে কী করে ফেলে? তখন নেত্রী বলেছিলো, সেনাবাহিনী আমাকে মারবে না আমাকে মারলে তোফায়েল আমুরাই মারবে। আমার বাবাকে কী করেছিল মনে নেই? আর সেই আতঙ্ক থেকেই নেত্রী তোফায়েলকে কাছে টেনে নিয়েছেন কৌশলগত কারণে। কিন্তু তোফায়েল সবসময়ই সুবিধাভোগী। মুক্তিযুদ্ধের সময় একদিনও যুদ্ধ করতে হয়নি, ওয়ান ইলেভেনেও একদিনের জন্য কারাগারে যেতে হয়নি।

অন্যদিকে, ঢাকার প্রভাবশালী মহানগরের এক আওয়ামী নেতা জানান, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল যদিও মিডিয়ার সামনে বিরোধীজোটের বিপক্ষে হম্বিতম্বি দেখায় কিন্তু কামরুল নিজের অপরাধ ও সম্পদ বাঁচাতে বি্এনপির সাথে আঁতাত করছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। কামরুল এর আগেও সিঙ্গাপুরে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সাথে গোপন বৈঠক করেছেন। উসকানীমূলক বক্তব্য দিয়ে বিএনপির আন্দোলনকে সোচ্চার করছেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে তিনি রাজপথে নেই।

সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমদের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, কামরুলের পরিবার ৭১ সালে রাজাকার ছিলো। কামরুলের ভাই সরাসরি রাজাকারদের কমান্ডার ছিলেন। কামরুল ভাইয়ের হয়ে পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছেন। রাজাকার দুর্নাম ঘোচাতে তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন। মূলত তার ভিতরে রয়ে গেছে পাকিস্তানি রক্ত। যে কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে স্কাইপি কেলেঙ্কারী কামরুলই ফাঁস করে দিয়েছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More