শ্লীলতাহানির অভিযোগে, এসএসসি পাস করা ছাত্রীর মামলায় ৫ম শ্রেণির ছাত্র কারাগারে

0

5বেলা সাড়ে ১১টা। পরণে স্কুল পোশাক। হাতে হাতকড়া। বয়স আনুমানিক ১০ বছর। শিশুটির দু‘চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে। বোঝা গেল, এইমাত্র পুলিশ আদালতের নিচতলার হাজতখানা থেকে বের করে এনেছে তাকে। এরপর আদালতের এক সিঁড়ি, দু‘সিঁড়ি এভাবে আদালতের তৃতীয় তলা পর্যন্ত সবগুলো সিঁড়ি ভেঙে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মহানগর দায়রা জজ আদালতের কাঠগড়ায়। তখনো।

তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই জানা গেল তার নাম জনি। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সদ্য উত্তীর্ণ খালাতো বোনকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিএমপি বন্দর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে। আদালতে প্রায় ঘণ্টাখানেক মামলার উপর শুনানি শেষে  বৃহস্পতিবার পুনরায় শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুই খালাত ভাই ও এক মামাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিএমপি বন্দর থানায় শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মামলা দায়ের করেন সদ্য এসএসসি উত্তীর্ণ (১৬) এক তরুণী। অভিযুক্তরা হলো-পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মো: জনি (১০), মো: রণী (১৬) ও সাজ্জাদ (১৬)। এদের মধ্যে জনি ও রণী তরুণীর ছোট খালা ফরিদা ইয়াছমিনের ছেলে। আর ছোট মামা ইউনুছের ছেলে সাজ্জাদ।

বাদী ও বিবাদী নগরীর বন্দর থানার মধ্যম গোসাইলডাঙ্গা এলাকার হাবিবুর রহমানের বাড়িতে বসবাস করেন। এছাড়া জনি আগ্রাবাদ শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- তরুণী ও তার বড় বোনকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায় সময় খারাপ কথা ও কু-প্রস্তাব দিতো অভিযুক্ত তিনজন। গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে সাতটায় প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় তরুণীটিকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরে রণী। পরে রাস্তার পাশের অন্ধকার স্থানে নিয়ে তরুণীর শ্লীলতাহানী করে। এ ব্যাপারে রণী, জনি ও সাজ্জাদের বাবা-মাকে জানানোর পরও তারা কোনো শাসন করেননি। তাই গত ১৯ এপ্রিল দুই খালাত ভাই ও এক মামাতো ভাইকে অভিযুক্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই তরুণী। অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে থানা পুলিশ আদালতে প্রেরণ করেছে। পরে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র জনিকেও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

তবে বিবাদীর এক অভিভাবক সিটিজি নিউজকে বলেন, পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ও ব্যক্তিগত কলহের জের ধরে ওই তরুণী পারিবারিকভাবে প্ররোচিত হয়ে আপন ছোট বোনের দু’ছেলে ও ছোট ভাইয়ের এক ছেলের বিরুদ্ধে নিজের ছোট কন্যাকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এই মামলাটি করিয়েছেন। মামলার পর থেকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মামলার অপর দুই আসামী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More