স্টেডিয়াম একরকম, শহর আরেক রকম!

0

sports-T20worldcupschedule-bangladesh_10-27-2013_124066_lএবারই প্রথম বাংলাদেশে এবং আসার আগে এখানকার মানুষের ক্রিকেট-উন্মাদনার কথা এত শুনেছেন যে ক্রিকইনফোর ব্রিটিশ সাংবাদিক অ্যালান গার্ডনার নেপাল-হংকং ম্যাচেও ‘ফুলহাউজ’ দেখার আশায় দুপুরেই হাজির প্রেসবক্সে! ছোট দুই দলের ম্যাচে দর্শক না হোক, সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সাজসজ্জায় এ ভিনদেশির চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টি উপলক্ষে শহরের সৌন্দর্যবর্ধন যদি আলোচ্য হয়, তাহলে চট্টগ্রামের চিত্রটা ভিন্নই বলতে হবে। ঢাকা ও সিলেটে শহরের বহু সড়ক যখন নতুন যৌবন পেয়েছে, তখন এখানে তা একদমই রূপ-লাবণ্যহীন!

অথচ এবারই নিত্যনতুন সাজে শহরটার সেজে ওঠার কথা সবচেয়ে বেশি। ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচের সময়ও সাজসজ্জায় যেখানে রাজধানীর সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে বন্দরনগরী, সেখানে এবার অনেকটাই পিছিয়ে। এতটাই যে এক সাধারণ সিএনজি অটোরিকশাচালকেরও বিস্ময়ের শেষ নেই, ‘গতবার ছিল তিনটি বাঘ আর এবার মাত্র একটি ঘোড়া।’ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে শহরের তিনটি জায়গায় বসেছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ভাস্কর্য। এবার সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে বাড়তি বলতে নির্মিত হয়েছে কেবল নগরীর ওয়াসার মোড়ের ঘোড়ার গাড়ি! উদ্যোগের অভাবটা শহরের সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণীর চোখেও খুব ধরা পড়ছে।
আগে যা যা ছিল, সেগুলোতে কিছুটা আলোকসজ্জা করেই যেন এবার দায়িত্ব শেষ! মোটামুটি নববধূর সাজে সেজে ওঠা অন্য দুই আয়োজক শহরের তুলনায় চট্টগ্রামের বহিরাঙ্গের সাজ যেন বিধবার কাছাকাছিই! যদিও এবারই আলোর ফোয়ারা বেশি ছোটার কথা। কারণ আগেরবার বাংলাদেশ ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক। আর এবার ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির একক আয়োজক। ছেলে এবং মেয়েদের মিলিয়ে মোট ২৬টি দলের অংশগ্রহণে ক্রিকেটের সর্ববৃহৎ বিশ্ব আসরও। অথচ এখানে শহর ঘুরে এর বিশালতা বোঝা কঠিন। ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সিডিএ) মিলে যৌথভাবে শহরের ব্যাপক সৌন্দর্যবর্ধন করেছিল।
এবার তেমন কিছু হয়নি; কাজ যা হওয়ার হয়েছে শুধু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই। তবে শহরের সৌন্দর্যবর্ধন সেভাবে না হওয়ার দায় নিতে চাইলেন না বিসিবি পরিচালক ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাসির, ‘দেখুন, শহরের সৌন্দর্যবর্ধন আমাদের হাতে ছিল না। আমাদের হাতে যেটা ছিল, সেই স্টেডিয়াম সাজানোর কাজ আমরা ঠিকঠাক করতে পেরেছি বলেই বিশ্বাস। পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার কারণে কাজটা আমরা করিয়েছি সেনাবাহিনীকে দিয়ে।’ নিছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে সেনাবাহিনী আছে স্টেডিয়ামজুড়েই। কাল প্রেসবক্সেও সর্বক্ষণ দুই সেনাসদস্যের উপস্থিতি চোখে পড়ল। চোখে পড়ার মতো সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামের আলোকসজ্জাও, যা দেখে সহজেই বোঝা যায় যে বড় কিছু এখানে হচ্ছে!
শহর দেখেও বোঝা যায় তবে অতটা নয়, যতটা হলে আয়োজন খুব বড় বলে মনে হয়!
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More