ছেলেদের কাছে মেয়েদের চাওয়া!

0

Boy_and_Girl_by_BeautifulEnemityআর্টিকেলটির নাম শুনে অনেকেই হয়ত মনে মনে ভেবেই বসেছেন ”মেয়েরা আর কী চাইতে পারে? দামী শাড়ি, সোনা বা হীরার অলংকার, মাসের মধ্যে ১০-১৫ বার শপিং আর উপহারে ভর্তি ডালা।”

আবার অনেকে হয়ত ভেবেছেন- লম্বা-চওড়া, সুদর্শন, কোটিপতি বাবার একমাত্র সন্তানের কথা। আবার অনেকে হয়ত রবি ঠাকুরের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে বলতে পারেন যে মেয়েরা যে আসলে কী চায় তা তো স্বয়ং ঈশ্বরও জানেন না।

আসলেই কি তাই? মেয়েদের মনের খবর জানা কি এতটাই কঠিন? তবে চলুন জেনে নিই সহজ কিছু সমাধান যা প্রত্যেক মেয়েকেই আকৃষ্ট করতে বাধ্য, তাও আবার অর্থ খরচ না করেই।

আন্তরিকতা : মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি আন্তরিক তথা মিশুক হয়ে থাকে। তারা যোগাযোগ রাখতে যেমন ভালোবাসে তেমনি অন্যের এমন বৈশিষ্ট্যে আকৃষ্টও হয়। তারা সাধারণত খোশ-গল্প, রোমান্টিক মুভি এবং ভালোবাসা সুলভ আচরণ পছন্দ করে থাকে। তারা ছেলেদের মন ও আত্মা দুই-ই জানতে চায় আর এও চায় সে যেন তার সঙ্গীর মস্তিষ্ক ও হৃদয় উভয় স্থানেই বিরাজমান থাকতে পারে। তাই বেশির ভাগ সময়েই মেয়েদের কাছ থেকে ‘কোথায় ছিলে?’ ‘কার সাথে ছিলে?’ ফিরবে কখন? রাতে একসাথে খাবে কি না এ জাতীয় প্রশ্ন লক্ষ্য করা যায়। অনেকে মনে করেন মেয়েরা তাদের সঙ্গীদের সন্দেহের বশে বা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এমনটি করে থাকে, কিন্তু তারা আসলে ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি কোমল মনের অধিকারী হয়ে থাকে এবং সব সময়েই তার সঙ্গীর জন্য চিন্তিত থাকে আর প্রতি মুহূর্তের খবর জানতে উদগ্রীব হয়। তাই যখনই তার প্রিয় মানুষটি তার থেকে দূরে দূরে থাকে বা তার সাথে কথা বলতে প্রস্তুত থাকে না তখন সে চেষ্টা করে তার কাছে কাছে থাকতে, তার মন ভালো করতে আর তার একাকীত্ব দূর করতে। ঠিক তেমনি ভাবে ছেলেদেরও এ বিষয়টি বোঝা উচিত যে যখন মেয়েটির মন খারাপ হয় তখন সে চায় ছেলেটি তার কাছে থাকুক, তার কথা শুনুক, তাকে বেড়াতে নিয়ে যাক বা তাকে পরম আদরে আগলে রাখুক।

মূল্যায়ন : মেয়েরা যেকোনো ভালো কাজের মূল্যায়ন পেতে খুব পছন্দ করে। তা যে কোন ছোট-খাট কাজের জন্যও প্রযোজ্য। যেমন-ভালো রান্নায় বা প্রিয় মানুষটির জন্য আলাদা কিছু রান্না করলে তার প্রশংসা পাওয়ার দাবীদার কিন্তু সেই। তাছাড়া যেকোনো খুঁটিনাটি কাজ যেমন – অফিসে যাওয়ার সময় মানি ব্যাগ, টাই, রুমাল এগিয়ে দিলে তাকে ধন্যবাদ দেওয়া বা হাসিমুখে ভালোবেসে তাকে এমন কোন কথা বলা যাতে সে খুশি হয়ে যায়। সব মেয়েই তাদের সৌন্দর্যের তারিফ শুনতে ভালোবাসে, তাই বলে যে প্রতিদিনই তাদের রূপের আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিতে হবে তা কিন্তু নয়। খুঁজে বের করুন আপনার সঙ্গীর কোন দিকটি বাকি সবার থেকে আলাদা, সেটি তার কাছে প্রকাশ করুন। হতে পারে কারো চোখ, কারো চুল, কারো হাসি – যা আপনাকে মুগ্ধ করেছে, তুলে ধরুন সেগুলো তার কাছে। হতে পারে আপনার সঙ্গী গান জানেন, বা নাচতে পারেন অথবা তার লেখালেখির হাত ভালো, নয়ত সে রান্নায় পটু – যার যাই থাকুক না কেন তার সেই গুণের মূল্যায়ন করা আপনার কর্তব্য, এতে করে আপনার প্রিয় মানুষটি তার সেই কাজে আরো অনেক বেশি আগ্রহ পাবে; সেই সাথে আপনার প্রতি তার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বেড়ে যাবে বহু গুণে।

নিরাপত্তা : সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে – সব মেয়েরাই নিরাপদ আশ্রয় চায়, তারা সব সময়ই চায় তাদের স্বামী বা সঙ্গীই হোক তাদের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। বাচ্চারা যেমন মায়ের বুকে সবচেয়ে নিরাপদ অনুভব করে মেয়েরাও তেমনি তার প্রিয় মানুষটির কাছেই সেই নিরাপত্তা আশা করে থাকে। তারা বাইরে থেকে যতই কঠোর বা কাঠখোট্টা ভাব দেখাক না কেন ভেতর দিকে তারা ততটাই বাচ্চা সুলভ, যে কিনা চায় যে আপনি তার খেয়াল রাখুন। তাকে বুঝতে দিন, নিশ্চিত হতে দিন যে সব সময় আপনি তার পাশে আছেন। যানবাহন থেকে নামার সময় নিজের হাতটি বাড়িয়ে দিন, রাস্তা পারাপারের সময় হাত ধরে পার করুন, মাঝে মাঝে দরজা খুলে দিন কিংবা সে খোলার ক্ষেত্রে তার হ্যান্ডব্যাগ বা মোবাইলটি নিজের কাছে রাখুন, বিশেষ দিন গুলোতে যেমন – তার জন্মদিন বা আপনাদের বর্ষপূর্তিতে তাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার চেষ্টা করুন, সময় পেলে একসাথে লাঞ্চ করতে চলে আসতে পারেন। এগুলোর একটাও খুব বেশি কঠিন কাজ নয়, আর অনেক বেশি ব্যয়বহুল বা সময়সাপেক্ষও নয়, কিন্তু এ কাজ গুলোতে মেয়েরা অনেক বেশি খুশি তথা পরিতৃপ্ত হয়; যাতে প্রেম, ভালোবাসা আর আগামীর পথচলা হয় সুমধুর।

আশা করি এতক্ষণে সবাই আমার সাথে একমত হতে পেরেছেন যে মেয়েদের মন বোঝা দুঃসাধ্য কিছু নয়; আপনি চাইলেই পারবেন।

সংগ্রহ-টেকপোস্টবিডি

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More