ঢাকা: নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে দেশি-বিদেশি এনজিও ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সোরগোল করে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ভারতে যে বিপুল সংখ্যক বিধবা সংসারের গুরুদায়িত্ব বয়ে চলছেন তাদের খবর কয়জন রাখে। পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিবারের দায়দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তারা।
২০১১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ভারতে ১০০টির মধ্যে ৯টি বাড়ির কর্তৃত্ব সামলান বিধবারা। তামিলনাড়ুতে ১০০টি বাড়ির মধ্যে ১২টি বাড়ির যাবতীয় দায়িত্ব সামলান তারা। উত্তরপ্রদেশে এই সংখ্যাটা ১০০ এর মধ্যে ৭।
বৈবাহিক ও পরিবারের সদস্যসংখ্যা সংক্রান্ত আদমশুমারির তথ্যে দেখা যায়, ভারতে প্রায় ২ কোটি ২৩ লাখ বাড়ির যাবতীয় দায়িত্ব সামলান বিভিন্ন বয়সী বিধবারা। উত্তরপ্রদেশে পরিবারের কর্তৃত্ব সামলান প্রায় ২৪ দশমিক ৬২ লাখ বিধবা এবং তামিলনাড়ুতে সেই সংখ্যা ২২ দশমিক ৩২ লাখ।
জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ পি অরোকিয়াসামি এ সম্পর্কে বলেন, ভারতে বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় সাধারণত বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যটা অনেক বেশি থাকে। অর্থাৎ বর কনের থেকে প্রায় ৫-১০ বছর বা তারও বেশি বড় হয়। সেজন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামীর আগে মৃত্যু হয়। তখন পরিবার, সন্তান সন্ততির ভার নিজের কাঁধেই তুলে নিতে হয় স্বামী হারানো নারীদের।
আদমশুমারিতে আরো দেখা যায়, ২০০১ সালের পর থেকে দেশে বিধবার সংখ্যা দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে। ২০১১ সালে ভারতে ১২১ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৫ দশমিক ৫৫ কোটি অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ বিধবা। ২০০১ সালে দেশে বিধবার হার ছিল ০ দশমিক ৭১৯ শতাংশ। অর্থাৎ ১০২ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১৮ দশমিক ৫১ লাখ।
অবশ্য সংসারের কর্ত্রীর দায়িত্বে বিধবাদের ভূমিকা সুপ্রাচীন কাল থেকেই ভারতবর্ষে চলে আসছে। শুধু ঘরকন্নার কাজেই নয়, প্রশাসনিক কাজেও যথেষ্ট সফল ছিলেন সেই সমস্ত নারীরা। রানী রাসমনির মতো জমিদারী রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি সমানতালে পাল্লা দিয়েছেন রাজশক্তির সঙ্গে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা