ঢাকাঃ নেপালের কাঠমান্ডুতে ২৫ এপ্রিল ভূমিকম্পে গুড়িয়ে গেছে ঐতিহাসিক ধারাহারা টাওয়ার। ভূমিকম্পের সময় সেখানে অবস্থান করছিল অনেক দর্শনার্থী। সেখানে সঞ্জয় এবং রামিলা নামের এক অল্পবয়সী প্রেমিক যুগলও ছিল। ভূমিকম্পে ওই ঐতিহাসিক স্থাপণাটি ধুলোয় লুটিয়ে গেলে এর ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়ে ওই জুটি।
গত ২৫ মার্চ প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল রামিলার। তাই সে বন্ধুদের সাথে ছবি দেখতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। কেননা তার প্রেমের খবর জানত না তার পরিবার। কিছু সময় পর সে তার প্রেমিক সঞ্জীবের সঙ্গে দেখা করে। তারা ঐতিহাসিক ধারাহারায় বেড়াতে যাবে বলে ঠিক করে। এটি ১৮ শতকে তৎকালীন রাণীর জন্য নির্মিত শহরের একটি দর্শণীয় স্থান। তারা সারাদিন সেখানেই ঘুরবে বলে ঠিক করে। আর সারাদিন একসাথে থাকবে বলে তারা দু’জনেই খুব উৎফুল্ল ছিল। কিন্তু তাদের এই আনন্দ বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তারা ধারহারা টাওয়ারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বারান্দাটি দেখার জন্য ধীরে ধীরে বাঁকানো সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠছিল। ঠিক এসময়ই শুরু হয় ভয়াবহ ভূকম্পন। তারা দু’জনেই মাটিয়ে পড়ে যায়-তলিয়ে যায় ধ্বংস্তূপে।
পরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর তাদের দু’জনেরই প্রথম প্রশ্ন ছিল, ভালবাসার মানুষটা বেঁচে আছে তো?
সৌভাগ্যক্রমে তারা দু’জনেই বেঁচে গেছে। ধ্বংসস্তূপ আর নিহেতদের মাঝে প্রেমিক যুগলের অক্ষত থাকার বিষয়টি চিকিৎসকদেরও নজর কেড়েছে। তারা এ নিয়ে মজা করতেও ছাড়েননি। এক চিকিৎসকতো প্রেমিক সঞ্জয়কে বলেই ফেললেন ‘তোমার সব গোপনীয়তা তো ফাঁস হয়ে গেল।’ এ কথা শুনে আহত অবস্থায়ও হাসি থামাতে পারছে না রামিলা। সে এনডিটিভিকে জানিয়েছে, ‘আমি খুব খুশি যে আমরা দুজনেই সুস্থ আছি। আমি আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখতে পাচ্ছি।’
ইতিমধ্যে সঞ্জয় আর রামিলার পরিবারেও তাদের সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে গেছে। তাদের প্রেম নিয়ে কোনোই অভিযোগ নেই তাদের। এতবড় ভূমিকম্প থেকে তারা যে বেঁচে গেছে এতেই তারা খুশী।
ভূমিকম্পের কারণেই সম্পর্ক আরো মজবুত হলো সঞ্জীব আর রামিলার। নেপালের ভূমিকম্পে হাজার হাজার নিহতের মধ্যেও নতুন শিশুর জন্ম আর প্রেমিক যুগলের প্রেমের এই পূর্ণতা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।