ইউরোপের দেশগুলোর সব ধরণের চাপ সামলে এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার নিজেদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি,আর অনুশাসনের প্রশ্নে অটল থেকেছে।এটি করতে গিয়ে এশিয়ার দেশটি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেও নীতির প্রশ্নে কোন ধরনের আপোষ করেনি।
অতীতের সব বিশ্বকাপের অনেক নিয়ম-কানুন কাতার বিশ্বকাপে এসে বদলে গেছে।তেমনি একটি অবাধে অ্যালকোহল পানে নিষেধাজ্ঞা।বিশ্বকাপ শুরুর আগে কাতার জানিয়ে দেয় ফুটবল বিশ্বকাপে আট ভেন্যুতেই বিয়ারসহ এলকোহল বিক্রি নিষিদ্ধ করে। আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই অবস্থান থেকে সরে আসার জন্য ফিফা আহ্বান জানালেও তাতে সায় দেয়নি কাতার সরকার।
এই অনড় অবস্থানের সুফল পেতে শুরু করেছে।একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ও উঠে এসেছে স্টেডিয়ামের ভেতর এলকোহল নিষিদ্ধ করায় খেলা দেখতে আসা নারী দর্শকরা অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন। তাদের অনেকেরই স্টেডিয়াম ও সামগ্রিক বিশ্বকাপের পরিবেশ নিয়ে নেতিবাচক পূর্বধারণা ছিল।
তাদেরই একজন এলি মর্লসন নামে এক ব্রিটিশ তরুণী।দ্যা টাইমস পত্রিকাকে দেওয়া বিশ্বকাপের আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের সন্দেহ উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।
প্রথম দুই সপ্তাহে অভিজ্ঞতা শেষে স্টেডিয়ামে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি বিরুদ্ধে ‘Hergametoo’ ক্যাম্পেইনের পরিচালনা করা এই তরুণী জানালেন, এটা আমাকে স্বীকার করতে কাতারের সার্বিক বিশ্বকাপ পরিচালন ব্যবস্থা আমাকে অভিভূত করেছে।এখানে নারীর প্রতি কোন ধরনের যৌন হয়রানি,ইভটিজিং বাজে মন্তব্য আমার চোখে পড়েনি।
মর্লসনের সাথে খেলা দেখতে আসা তার বাবা জানান, আমি মূলত এসেছিলাম মেয়েকে যাতে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় সেটি দেখভালের জন্য। সত্যি বলতে আমার মেয়ে অস্বস্তিতে পড়বে এমন কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা এখন পর্যন্ত হয়নি হয়নি।
একই অভিমত তার মত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাতারর খেলা দেখতে আসা আরো অনেক নারীর।তার জানান,অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করে অনেক পুরুষ দর্শকের যে বিরূপ আচরণের মুখোমুখি তারা সচরাচর স্টেডিয়ামে হন কাতার ছিল তার ব্যাতিক্রম। এখানে স্টেডিয়ামের সার্বিক পরিবেশ তাদের স্বস্তি দিচ্ছে।
চারদিক থেকে ধেয়ে আসার নানা সমালোচনার মুখে নিশ্চয়ই এই খবরে কিছুটা হলেও সাহস যোগাবে কাতারকে। মুসলিম দেশটির স্বপ্ন দেখছে তারা এমন বিশ্বকাপ আয়োজন করবে যা আগামী সব বিশ্বকাপের জন্য জন্য একটি রোল মডেল হয়ে থাকবে।
উৎসঃ ইনকিলাব