‘প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ অভিবাসী নারীর লাশ দেশে আসছে, এটা কী করে সম্ভব’

0

দেশে গত ৫ বছরে ৭১৪ জন বাংলাদেশি অভিবাসী নারীর লাশ এসেছে। তাঁদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের কথা। এটা কী করে সম্ভব? এই প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মানব পাচারের ভুক্তভোগীদের আইনগত সুরক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় কামাল উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, যেসব অভিবাসী নারী লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন, তাঁরা সুস্থ অবস্থায় বিদেশে গিয়েছিলেন। অথচ প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি লাশ বিদেশ থেকে আসছে। আবার তাঁদের লাশ গ্রহণ করতে গিয়ে বিমানবন্দরে দুরবস্থায় পড়তে হয়।

এমন ঘটনাকে অমানবিক উল্লেখ করে কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যাঁরা আমাদের রেমিট্যান্স এনে দিচ্ছেন, তাঁদের জন্য আমরা কিছু করব না, এটা হতে পারে না। এখানে কোনো ভোগান্তির বিষয় থাকা সঠিক নয়। তাঁদের যথাযথ নিরাপত্তা ও সম্মান দিতে হবে।’


জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ ফাইল ছবি: প্রথম আলো

বিদেশে মারা যাওয়া শ্রমিকের লাশ দেশে আনার কাজটি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে হয়। লাশ দাফনের জন্য তারা বিমানবন্দরে পরিবারকে ৩৫ হাজার টাকা দেয়। পরে মারা যাওয়া শ্রমিকের পরিবারকে তিন লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয়।

কোনো কোনো লাশ দেশে আনতে ছয় মাসের বেশি সময় চলে যায় বলে বোর্ড সূত্রে জানা যায়। বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, শ্রমিকের মৃত্যুর কারণ নিয়ে পরিবারের সন্দেহ, তদন্ত দাবি—এমন আবেদনের নজির নেই।

শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। তাঁদের বড় বা জটিল কোনো রোগ থাকলে স্বাস্থ্য পরীক্ষাতেই বাদ যাওয়ার কথা। তাই মৃত্যুর সনদে থাকা ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ নিয়ে সন্দেহ করছেন মারা যাওয়া শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা।

সভায় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ আলম বলেন, অনেকেই ধারণা করেন বিদেশে অবৈধভাবে গিয়ে যে অর্থ দেশে আসছে, তা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। কিন্তু আসলে তা কোনোভাবেই অর্থনীতিতে যুক্ত হয় না।

শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের মানব পাচার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা এবং পরিণতি সম্পর্কে জানাতে হবে। বাংলাদেশে আজ যেই পর্যায়ে আছে, সেখানে কোনোভাবেই অবৈধভাবে কোনো দেশে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যারা অবৈধ পাচারে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী সভায় সভাপতিত্ব করেন।

উৎসঃ   প্রথমআলো
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More