নির্বাহী আদেশে আবারও বিদ্যুতের ৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার রাতে গনমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবৈধ লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকার আবারও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার শেষে এসে বেপরোয়া লুটপাটে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই বর্তমান সরকার জনগণের ভালোমন্দ বিচার করতে চায় না। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের ব্যাপক পরাজয় হবে, সেজন্য তারা জনগণের উপর প্রতিশোধ নিতেই দফায় দফায় বিদ্যুৎসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করছে। সরকারের উন্নয়নের বুলির আড়ালে লুটপাটের মহোৎসবের কাহিনী এখন মানুষের মুখে মুখে। বিদ্যুতের এই মূল্যবৃদ্ধি সরকারের লুটপাটেরই বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, এই মূল্যবৃদ্ধিতে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি কলকারখানা ও কৃষিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। প্রতিটি পণ্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতির মধ্যে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়বে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আবারও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এর ‘ব্যাড ইম্প্যাক্ট’ খুবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সারাদেশের মানুষ এই ঘোষণার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। জনগণ বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির এই গণবিরোধী ও অযৌক্তিক সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছে। দেশের মানুষের নিকট বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের কোন জবাবদিহিতা ও কর্তব্যবোধ নেই বলেই জনগণের ওপর জুলুম চালানো হচ্ছে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে অবৈধ আওয়ামী সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান বিনা ভোটের সরকার জবাবদিহিতার তোয়াক্কা করে না বলেই একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। দাম বৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠলেও সরকার তা পরোয়া করে না। দুর্নীতি ও লুটপাটের ওপর নির্ভর করার জন্য জনগণের কষ্টের কথা বিবেচনায় না নিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশের মানুষ যখন ক্ষুব্ধ, তখন আবারও নতুন করে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার জনগণের চরম দুর্ভোগে, দুর্দিনে একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে জনগণকে হতাশা ও অন্ধকারে ধাবিত করছে। দুর্নীতি, লুটপাটের দায় জনগণের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত, ভ্রান্তনীতি, ব্যর্থতা এবং অযোগ্যতার কারণে জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা লণ্ড-ভণ্ড হয়ে গেছে। এর মধ্যে দফায় দফায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১৪ বছরে ১৩ বার বিদ্যেতের মূল্যবৃদ্ধির পর গত জানুয়ারি মাসে ১৯ দিনের ব্যবধানে ২ বার এবং সর্বশেষ মঙ্গলবার আবারও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের প্রতিটি নীতি হচ্ছে হরিলুটের নীতি। জনগণ মরে যাক, তাতে সরকারের কিছুই আসে যায় না। গণবিরোধী সরকারের অংকটি খুবই সোজা। তারা চুরি করে ক্ষতির টাকা জনগণের পকেট কেটে তা পূরণ করছে।
অবিলম্বে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিসহ অপরাপর রাজনৈতিক দল সমূহ বিদ্যুৎ, গ্যাস ও চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করে দাবি আদায় করতে হবে।