বিএনপির কর্মসূচিতে আ.লীগের ‘হেলমেট বাহিনী’র হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ অতঃপর বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার
ফরিদপুরে বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হেলমেট পরে এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ বিএনপির। এ সময় পুলিশসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় জেলা পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে শহরের অম্বিকা ময়দানে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মঞ্চে বক্তব্য চলাকালে উত্তর দিকের শহীদ সুফি সড়কে এসে হেলমেট পরা যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
তবে ককটেলের শব্দে প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও দ্রুতই পাল্টা প্রতিরোধ করে বিএনপি। এ সময় কিছুক্ষণ উভয়পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপের পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে সড়কে যত্রতত্র ইটের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। পথচারীরাও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন করের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল চৌরঙ্গী মোড়ের পূর্ব দিকের মুখে অবস্থান নেয়।
যদিও যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার পর চৌরঙ্গী মোড়ের পূর্ব দিকের সড়কে পুলিশের ব্যারিকেডের পেছনে আবারও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা অম্বিকা ময়দান ত্যাগ করে।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়েছে। এ সময় পুলিশের ৪ জন সদস্য আহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।’
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে এ গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়।
আজ বুধবার জাসাসের শিল্পীদের গণসংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী এতে যোগ দেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা, বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মো. আবু জাফর, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসিরুদ্দিন কালু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ আহমেদ আসলাম, রাজবাড়ীর আহ্বায়ক লিয়াকত হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।