মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু গত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সফর করেন। তার সফরের আগের রাতে আকস্মিকভাবে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিন গ্যাং এক ঘণ্টা ঢাকা সফর করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নীতি উপদেষ্টা ডেরেক এইচ শোলে ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফরের তারিখ নির্ধারিত ছিল। তার ঢাকা সফরের দিনই হঠাৎ করেই দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন খাতরা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাববিস্তারকারী প্রভাবশালী দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির একই সঙ্গে ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। এমন কী রহস্যময় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে একই দিনে ঢাকা সফর করতে হচ্ছে? কী বার্তা দিচ্ছেন তারা?
এদিকে গতরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিনিয়র অ্যাডভাইজর ডেরেক শোলে বাংলাদেশের কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে বৈঠক করে দেশের মানবাধিকার, রাজনীতি ও অর্থনীতির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন, গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। নেটিজেনদের অনেকেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে জানতে চান আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে কি দুই দেশের বার্তা আসছে। নির্বাচন ইস্যুতে কোনপথে এগোচ্ছে দেশ? নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে হবে নাকি নির্দলীয় সরকারের অধীনে হবে? বিশেষ করে ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফরের আগে রাতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিন গ্যাংয়ের ঢাকা সফর নিয়ে যে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছিল; এবারের কৌতূহল তার চেয়েও বেশি। এর আগে দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দেশবাসীর মধ্যে ‘চমক’ এখনো কাটেনি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নীতি উপদেষ্টা ডেরেক এইচ শোলে এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোত্রা গতকাল পৃথক পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ডেরেক শোলে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কি বিষয়ে আলোচনা করেছেন তা জানা যায়নি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কি জানতে চেয়েছেন এবং জো বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে কি বার্তা দিয়েছেন সেটাও জানা যায়নি। তবে ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টই বলেছেন, নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে আমার দল (আওয়ামী লীগ) দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। কখনো ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চাই না। আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোত্রার আলোচনা বিষয় প্রকাশ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বের প্রতি আমাদের (ভারতের মোদি সরকার) পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিসহ সব ধরনের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
এর আগে এবারও বৈশ্বিক গণতন্ত্র সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ ভার্চুয়ালি ওই বৈশ্বিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের ১১০টি দেশের প্রায় সাড়ে সাতশ’ প্রতিনিধি অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপ আমন্ত্রণ পেয়েছে; অথচ এবারও বাংলাদেশ আমন্ত্রণ পায়নি। গত ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমবার বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোকে নিয়ে ‘গণতন্ত্রের বৈশ্বিক সম্মেলন’র আয়োজনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ পায়নি। এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন দায়সারা বক্তব্য ‘আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ খুব একটা চিন্তিত নয়। গণতন্ত্রের সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানালেই গণতন্ত্র ভালো প্রমাণ হবে তা কিন্তু নয়। কোন দেশকে কি বিবেচনায় আমন্ত্রণ করা হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রই ভালো বলতে পারবে।’ কিন্তু বাংলাদেশকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সে প্রসঙ্গে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র (ভারপ্রাপ্ত) ব্রায়ান শিলার বলেছেন, ‘আমরা (বাইডেন প্রশাসন) বাংলাদেশসহ আগের সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া দেশগুলোর গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং কর্তৃত্ববাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধায় তাদের প্রতিশ্রুতির বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে বলেছি। দ্বিতীয় সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রে এগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।’ অর্থাৎ এবার যুক্তরাষ্ট্রকে ‘কর্তৃত্ববাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়নি।
এদিকে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাষ্ট্রের ২২তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ‘চমক’ মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। তারা হিসেবে মেলাতে পারছেন না যার নাম স্বপ্নেও ধারণা করতে পারেননি তাকেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হলো কেন! প্রেসিডেন্ট পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে বেছে নেয়ার নেপথ্যে কি রহস্য থাকতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিকসহ একাধিক সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তারা প্রশ্ন তুলেছেন দুদকের কমিশনার হয়ে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারেন কিনা। প্রেসিডেন্ট পদ লাভজনক কিনা। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি ও আওয়ামী লীগ অনুগত আইনজীবীরা একযোগে বলছেন ‘প্রেসিডেন্ট পদ লাভজনক নয়’। গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বিতর্ক ঠেকাতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পদ লাভজনক নয় এবং অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পদ লাভজনক নয়। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খানও মো. সাহাবুদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটেনি এবং প্রেসিডেন্ট পদ লাভজনক নয় বলে বক্তব্য দিয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছেন না। মো. সাহাবুদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা নিয়েও তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিএনপির স্থানী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। যাকে নিয়ে এতো বিতর্ক, কৌতূহল সেই রাষ্ট্রের ২২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘আমাকে আল্লাহ যদি জীবন দেয় (সেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত) আমি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখে যেতে চাই। এটাই আমার চরম প্রত্যাশা। এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে বিশ্বকে বার্তা দেয়া। সংঘাতে না গিয়ে জানমালের ক্ষতি না করে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়, তাহলে এ দেশের মঙ্গল হবে এবং জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হবে। মানুষ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগোবে।’
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর ঢাকায় কর্মব্যস্ত দিন পার করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নীতি উপদেষ্টা ডেরেক এইচ শোলে। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে উভয়ের জন্য একই ধরনের চ্যালেঞ্জ যেমন রয়েছে, তেমনি সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাড়ছে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনার পরে ডেরেক শোলে বলেন, ‘অনেক মার্কিন কর্মকর্তা বাংলাদেশে সফর করেছেন এবং আমি এখন এসেছি এটি বার্তা দেয় যে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাড়ছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে তা অনুসরণীয়। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এবং বাংলাদেশের জন্য আমরা আমাদের সহযোগিতা অব্যহত রাখব।’
ঢাকা সফরের আগে ঢাকা থেকে প্রচারিত একটি টিভি চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎ করে ডেরেক শোলে বাংলাদেশে অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচন দেখার আশার করার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা স্বীকার করি যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও নিখুঁত নয়, তবে আমরা নিজেদের আরো ভালো এবং উন্নত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ কারণে আমরা যখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অবাধ ও নিরেপক্ষ নির্বাচন, নাগরিক সমাজের সমাবেশ ও মতপ্রকাশের বিষয়ে উদ্বেগ তুলে ধরি, তখন সেটা আমরা অংশীদারিত্ব ও বন্ধুত্বের জায়গা থেকে করে থাকি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেখতে চাই। এছাড়াও আগামী দশকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বাংলাদেশ। সে কারণেই উচ্চপর্যায়ের সফরকারীদের আমরা ঘন ঘন দেখছি। সামনের দিনগুলোতে আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পকর্কে আরো বড় পরিসরে দেখতে চাই।’
ডেরেক শোলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা আমাদের সব চেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন আরো উন্নত করতে তারাও আমাদের সঙ্গে একমত। আমরা সম্পর্ককে আরো উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশে ১০০টি নতুন বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে এবং সেখানে তারা বিনিয়োগ করলে খুশি হবো।’ রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম দিন থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সাহায্য করে যাচ্ছে। তারা একমাত্র দেশ, যারা এটি অব্যাহত রেখেছে এবং সবচেয়ে বড় দাতা। তারা আমাদের সঙ্গে একমত যে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপনের পরিবর্তন করতে হবে। তাদের আশা জাগিয়ে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পাশে আছে।’
তবে কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ডেরেক শোলের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়গুলোর পাশাপাশি র্যাব এবং এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই তুলে ধরা হয়।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা’র সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তিস্তা চুক্তিসহ অনিষ্পন্ন বিষয় নিষ্পত্তির জন্য ভারতের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন জানান, আদানির বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে আলাদা করে আলাপ হয়নি। তবে বিদ্যুতের ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা নেপাল-ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনতে সহযোগিতা করবেন। তবে তারা বলেছেন, আমাদের ট্রান্সমিশন লাইনের ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ট্যারিফ বাধা দূর করতে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সেপা চুক্তি দ্রুত করতে আলোচনা হয়েছে। মাসুদ বিন মোমেন আরো বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে বিদ্যমান সম্পর্কে নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দিয়েছেন।
তবে মানুষের মধ্যে কৌতুহল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নীতি উপদেষ্টা ডেরেক এইচ শোলে এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা কি বার্তা দিলেন তা জানার।