ছাত্রলীগ রাজশাহী কলেজ শাখার নেতাকর্মীদের নির্যাতনে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতনের শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা হলেন- কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব ও শরিফুল ইসলাম। তারা ক্যাম্পাস সাংবাদিক সংগঠন রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরসিআরইউ) সদস্য। এছাড়া আরও আটজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মারধরের শিকার গণমার্ধ্যমকর্মী নাজমুস সাকিব বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা বিভিন্ন সময় তাদের দলীয় প্রোগ্রামে জোর করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে যায়। বুধবার বিকালে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ছিল।
কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রাফিকে আমাকে ওই কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা বলেন। এসময় আমার এক নিকটাত্মীয় হাসপাতালে আছে বলে জানাই। এ কথা বললে ছাত্রলীগ নেতা রাফি আমাকে হোস্টেল ছেড়ে দিতে বলেন। তারপর আমি হাসাপাতলে যাই। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টায় হোস্টেলে ফিরলে ছাত্রলীগের শাহরুখ, রাজু, রাফি, হাসানসহ ৮ থেকে ১০ জন মিলে আমার রুমে ঢুকে মারধর করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় আমার মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু দামি জিনিসপত্র কেড়ে নেন তারা। একপর্যায়ে সব শিক্ষার্থীকে ব্লকে আটকে রেখে অশালীন ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। অনেককে মারধরও করেন। পরে সবাইকে ধাক্কা দিতে দিতে গণরুমে নিয়ে যান।
সেখানে শাসানো হয় যে, যদি কারও কাছে কিছু বলি তাহলে আরও ভয়ানক পরিনতি করবেন। এসময় আট থেকে দশজন শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
নির্যাতিত গণমাধ্যমকর্মী শরিফুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় বের হয়ে ব্যক্তিগত কাজে সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম।সন্ধ্যায় রুমে এসে নিউজ লিখছিলাম।এমন সময় হঠাৎ ছাত্রলীগ কর্মী শাহরুখ রুমে ঢুকে পড়েন। কিছু না জিজ্ঞেস করেই অতর্কিত মারতে থাকেন।
তিনি বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাকে আরও মারতে শুরু করেন।তার সাথে আরও কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী যুক্ত হয়ে আমাকে মেরে রুম থেকে বের করে দেন। এসময় ধাক্কাধাক্কি করে অন্য ব্লকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে আটকে রেখেছেন। পরে সবাইকে জোর করে নিয়ে যায় প্রোগ্রামে।
নাম প্রকাশ না করে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার পরে আমাদেরকে শাসিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতারা।তারা এসময় বলেন, যাই করো ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে নিয়মিত উপস্থিত থাকা লাগবে, না হলে হোস্টেল থেকে বের করে দিব।
এ বিষয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত বলেন, ঘটনাটা আমি শুনেছি। এ ঘটনার সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তা জানার চেষ্টা করছি।জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, এ ঘটনা শুনে আমিও বিব্রত।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, আমরা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। বেশকিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানো হবে। তারপর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
jugantor