হাবিবুল্লাহ আল বাহার, জার্মানিঃ মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর ৩৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জার্মানি শাখার উদ্যোগে বার্লিনের স্থানীয় একটি হলে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জার্মানি বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাধারন সম্পাদক গনি সরকার, পরিচালনা করেন ১ম যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোস্তাক খান। বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা জালাল উদ্দিন নানা, সাইফুল করীম মজুমদার, অপু চৌধুরী, কাজী রেজাউল সাইদ, কাজী সুরুজ, আনহার মিয়া, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ইফতার পূর্বে প্রয়াত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফিরাত এবং বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন বার্লিন বাইতুল মুকাররম মসজিদের খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দিন সিরাজি। আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশগ্রহন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশ যখন একটি গভীর সংকটের মধ্যে নিপতিত ছিল তখন শহীদ জিয়াউর রহমানের দৃপ্ত কণ্ঠে মহান স্বাধীনতার ঘোষনা শুনে বীর বাংলাদেশীরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিল যার ফলশ্রুতিতে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। ঠিক তেমনি ভাবে ৭৫ পরবর্তী দেশের ক্রান্তিকালে শহীদ জিয়াউর রহমান শক্ত হাতে দেশের হাল ধরে দেশকে রাজনৈতিক ঐক্যতানে নিয়ে এসে সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। বাকশাল সরকারের বন্ধ করা সকল গণমাধ্যম খুলে দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বহু দলীয় গনত্রন্ত্র যার ফলে সকল দল ফিরে পেয়েছিল রাজনীতি করার অধিকার। বহিঃবিশ্বের সাথে সুদৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
বক্তারা সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, অনির্বাচিত একটি সরকার দীর্ঘদিন থেকে জাতীর ঘাড়ে চেপে বসে আছে। ইতিহাসের নজির বিহীন অত্যাচার নির্যাতন, হত্যা -গুম, হামলা-মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে গনত্রন্ত্রকে বিদায় করে দিয়েছে। বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছে। হত্যা করেছে অসংখ্য নেতাকর্মীকে। মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে বন্দি করেছে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠনের লক্ষ লক্ষ নেতা কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরে থাকতে দিচ্ছে না সরকার। চলমান গণ গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করে তাঁরা বলেন, দেশে আজ কেউ নিরাপদ নয়। সারা বাংলাদেশকে সরকার একটি কারাগারে পরিণত করেছে।
সরকারকে অবৈধ ও জালিম আখ্যা দিয়ে তাঁরা বলেন জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের মানবধিকার পরিস্থিতি নিয়ে একের পর এক উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্ত্বেও সরকার প্রতিনিয়ত মানবধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। দেশের রিজার্ভ থেকে এরা ৮০০ কোটি টাকা ডাকাতি করেছে। তাঁরা বলেন, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। দেশের চলমান সংকট নিরসনে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানান তাঁরা। শহীদ জিয়ার আদর্শই উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয় বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ জিয়াউর রহমানের অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অনন্য কৃতিত্বের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সকলকে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।