কলাপাড়া (পটুয়াখালী): দালালচক্র বলেছিল ভালো বেতনের চাকরি দেবে। তাদের সেই কথায় ভাগ্যের চাকা ঘুড়াতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চার যুবক অবৈধ পথে মালায়শিয়ায় পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু চাকরির পরিবর্তে তাদের ঠাই হয়েছে মালয়েশিয়ার কারাগার।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে দালালদের খপ্পরে পড়ে তারা রওনা হয় মালয়েশিয়ার পথে। কিন্তু তাদের নেয়া হয় থাইল্যান্ডের জঙ্গলে। সেখানে চলে নির্যাতন। পরে তারা পালিয়ে গিয়ে মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এখন সে দেশের কারাগারে বন্দী রয়েছেন।
তারা হলেন- উপজেলার কুয়াকাটা পৌর এলাকার আলমগীর (২৭), মিরাজ (২৮), আলআমিন (২৫) ও মৎস্য বন্দর আলিপুরের বাহাদুর (২৬)।
ওই যুবকদের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, দালালদের খপ্পরে পড়ে ওই চার যুবক বিদেশে যাবার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে কুয়াকাটা ত্যাগ করে। কিন্তু দালালরা মালয়েশিয়ার দিকে না গিয়ে সমুদ্র পথে ট্রলারযোগে তাদের থাইল্যান্ডের জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে সেখানে থাই দালালরা তিন মাস আটক রেখে নির্মম নির্যাতন করে পরিবারকে ফোন করে নির্যাতনের আহাজারি শোনান এবং মুক্তিপন দাবি করে।
একপর্যায় বর্বর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে থেকে পালিয়ে আসে তারা। পরে ধরা পড়ে মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে। সেই থেকে তারা মালয়েশিয়ার কারাগারে বন্দী রয়েছে।
এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষটি বিদেশে আটক থাকায় এখন ওইসব পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের আকুতি এখন প্রিয় স্বজনকে যেন দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তারা ধর্ণা দিচ্ছেন দালাল চক্রের বাড়িতে। কিন্তু স্থানীয় দালালরা নিরুদ্দেশ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মালয়েশিয়ায় আটক আল আমিনের মা কহিনুর বেগম বাংলামেইলকে বলেন, ‘মোর পোয়ারে ফেরৎ পাওয়ার জন্য বহুমানের কাছে গেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয় নাই।’
আলমগীরের বাবা খালেক মিয়া বলেন, ‘পোয়ার ভাল চাকরি হইবো হেইলাগ্যা ২০ হাজার টাহা দিছি।’
আল আল আমিনের বাবা খালেক মিস্ত্রী বলেন, ‘সন্তান বিদেশ যাইয়া কামাই করবো এই আশায় টাহা দিছি এহোন হুনি ওরা জেলে।’
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) সঞ্জয় মন্ডল জানান, চার যুবক পাচার হওয়া বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলামেইলকে বলেন, ‘এ ধরনের খবর আমার জানা নেই। যদি ওইসব পরিবারের লোকজন আসে তাহলে সহযোগিতা করা হবে।’