বর্তমান ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের এভন নদীর তীরবর্তী স্ট্রিটফোর্ড শহরটি বেশ বিখ্যাত। না, ওই শহরটি বিখ্যাত কোনো যুদ্ধক্ষেত্র কিংবা কোনো ধর্মপ্রচারকের পীঠস্থান নয়। তবে আধুনিক নাট্য জগতের ওস্তাদের বাড়ি ছিল ওই স্ট্রিটফোর্ড শহরে। উইলয়াম শেক্সপিয়রের পরে এখন পর্যন্ত অন্য কোনো ব্যক্তি তার মতো এতো সুনাম কুড়াতে পারেননি। তিনি যে শুধু নাট্যকারই ছিলেন তা নয় কিন্তু। নাটক লেখার পাশাপাশি অনেক কবিতাও লিখেছিলেন তিনি। আজকে আমরা যে ১৪ লাইন ১৪ মাত্রা হিসেবে কবিতা পড়ি এবং যাকে সনেট হিসেবে চিনি, সেই সনেটও কিন্তু শেক্সপিয়রেরই সৃষ্টি।
শেক্সপিয়রের ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না। তার চেয়ে আট বছরের বড় অ্যানা হ্যাথওয়ে শেক্সপিয়রের স্ত্রী হিসেবে কতটা উপযুক্ত ছিলেন সেটা কেবল শেক্সপিয়রেই ভালো বলতে পারবেন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার একদল গবেষকদের মতে শেক্সপিয়র তার স্ত্রীকে বেশ ভয়ই পেতেন। কিন্তু এই বক্তব্যের পক্ষে কি যুক্তি আছে। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত একদল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ শেক্সপিয়রের বাড়ির চারপাশের কিছু স্থানে খনন চালিয়েছিলেন। এবং সেই খননেই বের হয়ে আসে একটি তামাক সেবন করার পাইপ, আর সেই পাইপের ভেতরে অর্ধপোড়া অবস্থায় গাঁজা পাওয়া যায়।
ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী ওই পাইপটি প্রায় চারশ বছর পুরনো। মাটির তৈরি এই পাইপ সদৃশ আরও কিছু পাইপ বিভিন্ন সময় ইংল্যান্ডে পাওয়া গিয়েছিল এর আগেও। ১৪০০ শতাব্দীর শেষের দিকে ইংল্যান্ডে পাইপে করে তামাক সেবনের রীতি মাত্র শুরু হয়েছিল এবং সামাজিকভাবে বিষয়টিকে অতটা ইতিবাচক দৃষ্টিতেও দেখা হতো না। তৎকালীন সময়ে পাইপে করে গ্যাস সেবন করার কিছু পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল ইংল্যান্ডবাসী। ধারণা করা হয় নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়রও নিজের মতো করে গাঁজা দিয়ে গ্যাস সেবনের কোনো পন্থা আবিষ্কার করেছিলেন।
১৭ শতকের সেই সময়ে কয়েক ধরনের তামাকের প্রচলন ছিল। যার মধ্যে অন্যতম ছিল নর্থ আমেরিকান নিকোটিনা এবং কোকেইন(পেরুভিয়ান কোকা পাতা থেকে তৈরি)। ধারণা করা হয়, স্যার ফ্রান্সিস ডার্ক পেরু থেকে সর্বপ্রথম কোকা পাতা ইংল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেমনটা স্যার ওয়াল্টার রালিগ উত্তর আমেরিকা থেকে এনেছিলেন তামাক পাতা।
সাম্প্রতিক সময়ে লাইফ ম্যাগাজিনে মার্ক গ্রিফিথ নামে এক গবেষক জন গার্নাডের হারবাল সম্পর্কিত লেখাগুলো নতুন করে উপস্থাপন করেন। আনুমানিক ১৫৯৭ সালে হার্বার বইটি লেখা হয়েছিল বলে জানা যায়। সেই বইয়ের বিভিন্ন রেফারেন্স টেনে গ্রিফিথ বলার চেষ্টা করেন যে, গার্নাডের কাছে তৎকালীন ইংল্যান্ডের অনেকেই আসতেন চিকিৎসার জন্য এবং তাদের মধ্যে একজন ছিলেন উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। আর এই চিকিৎসকের কাছ থেকেই প্রথম গাঁজা সেবন শুরু করেন শেক্সপিয়র। যদিও ইংল্যান্ডবাসী শেক্সপিয়রের গাঁজা সেবনের খবরটি মোটেও হজম করতে পারছে না।