পৃথিবীর সৃষ্টি হয় আদি আর ভ্রুণগ্রহের সংঘর্ষে

0

worldএকটি আদিগ্রহ ও একটি ভ্রুণগ্রহের মধ্যে সংঘর্ষের ফলেই সৃষ্টি হয়েছে আমাদের এই পৃথিবী। নতুন একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এই যুগান্তকারী তথ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রায় সাড়ে চারশ কোটি বছর আগে, যখন আমাদের এই গ্রহটির বয়স মাত্র ১০ কোটি বছর তখন পৃথিবী কিংবা মঙ্গলের সমান আয়তনের একটি গ্রহের ভ্রুণের সাথে আমাদের গ্রহটির সংঘর্ষ ঘটে। এর ফলে এ দুটি একত্রিত হয়ে যায়। আর তাতেই সৃষ্টি হয় আমাদের এই পৃথিবী। ওই ভ্রুণটিকে বলা হয় ‘থেয়া’।
থেয়া এবং পৃথিবীর মধ্যকার সংঘর্ষের বিষয়টি আগের গবেষণাগুলোতেও প্রমাণিত হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন এই গবেষণায় যে বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে তা হলো, আগে মনে করা হতো গ্রহ দুটির মধ্যে সংঘর্ষটা হয়েছিল পাশাপাশি। এই গবেষণায় দেখা গেছে, সংঘর্ষটি হয়েছিল আসলে মুখোমুখি। অর্থাৎ, ভ্রুণগ্রহটি আদিগ্রহের উপর আছড়ে পড়েছিল।
ফলে দুই গ্রহের সম্মিলনে একটি গ্রহ সৃষ্টি হয়। এই সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট একটি টুকরা মহাকর্ষীয় বলের টানে আটকে গিয়ে তৈরি করে পৃথিবীর চাঁদ। গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই এবং অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে পাওয়া আগ্নেয় শিলাখণ্ডের সাথে তিনটি ‘অ্যাপোলো মিশন’ থেকে পাওয়া চাঁদের শিলাখণ্ড মিলিয়ে এটি নিশ্চিত হয়েছেন।
আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, চাঁদ ও পৃথিবীর শিলাখণ্ডগুলোর ‘অক্সিজেন আইসোটোপ’র মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এতে বোঝা যায়, এগুলোর রাসায়নিক প্রকৃতিও একই রকম। গবেষণা প্রকল্পের প্রধান ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-রসায়ন ও মহাকাশ-রাসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অ্যাডওয়ার্ড ইয়ং বলেন, ‘পৃথিবী এবং চাঁদের অক্সিজেন আইসোটোপের মধ্যে আমরা কোনো পার্থক্য দেখি না। তারা অবিচ্ছেদ্য।’
তিনি জানান, পৃথিবী এবং চাঁদ- দুই গ্রহেই ‘থেয়া’র মিশ্রণ আছে এবং এটি দুটিতেই ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে বোঝা যায়, কেন চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যকার থেয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। ওই সংঘর্ষে থেয়া ধ্বংস হয়ে যায়নি। ধারণা করা হয়, এটি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এবং একটি গ্রহে রূপ নেয়। উল্লেখ্য, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অর্থায়নে গবেষণাটি চালানো হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More