বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরে এসে ওয়ানডে ও টি-২০ উভয় সিরিজেই হোয়াইট ওয়াশ হওয়া পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরু্দ্ধে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জিতে নিয়েছে। টেস্টের একদিন বাকি থাকতেই শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৩২৮ রানের বিশাল জয়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা খুঁজে পেয়েছে মিসবাহ বাহিনী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছে প্রথম টেস্টে ৮৩ ও দ্বিতীয় টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা আজহার আলী। তার নেতৃত্বেই পাকিস্তান ওয়ানডে সিরিজে টাইগারদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হেরে যায় সফরকারীরা। ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই হেরে গিয়েছিল একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও। কাঙ্ক্ষিত জয়ের দেখা পায়নি টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেও। খুলনা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রেকর্ডগড়া উদ্বোধনী জুটি গড়ে পাকিস্তানকে জয়বঞ্চিত করেছিলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস।
১ উইকেটে ৬৩ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরুর পর প্রথম আট ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়েছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মুমিনুল। কিন্তু নবম ওভারে আঘাত হানেন ইমরান খান। আউট করেন ৪২ রান করা তামিমকে। তিন ওভার পরে মাহমুদউল্লাহ মাত্র ২ রান করে ইমরান খানের শিকারে পরিণত হন। এবার বাংলাদেশী সমর্থকদের স্বপ্ন জড়ো হয় প্রথম ইনিংসে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকা সাকিবকে ঘিরে। কিন্তু মোহাম্মদ হাফিজের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড অফে ধরা পড়েছেন ওয়াহাব রিয়াজের হাতে। প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে ইয়াসির শাহর বলে বোল্ড হয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। প্রথম ইনিংসে ১২ রান করলেও এবার শুন্য রানে ফিরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর আর কেউ দাঁড়াতে পারেনি। সৌম্য সরকার ও মুমিনুলকে আউট করেছেন ওয়াহাব রিয়াজ ও ইয়াসির। সৌম্য ফিরেছেন মাত্র ১ রান করে। শেষপর্যায়ে শুভাগত হোম ৩৯ রান করে দর্শকদের কিছুটা আনন্দের জোগাড় করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেননি। জুনায়েদ খানের ইয়র্কারে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়ে গেলে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। অসুস্থতার জন্য শাহাদাত আর মাঠে নামতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ৫৫৭/৮ ডিক্লে. (হাফিজ ৮, সামি ১৯, আজহার ২২৬, ইউনিস ১৪৮, মিসবাহ ৯, শফিক ১০৭, সরফরাজ ২১*, ওয়াহাব ৪, ইয়াসির ০; তাইজুল ৩/১৭৯, শহীদ ২/৭২, শুভাগত ২/৭৬, সাকিব ১/১৩৬)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২০৩ (তামিম ৪, ইমরুল ৩২, মুমিনুল ১৩, মাহমুদউল্লাহ ২৮, সাকিব ৮৯*, মুশফিক ১২, সৌম্য ৩, শুভাগত ০, তাইজুল ১৫, শহীদ ১; ইয়াসির ৩/৫৮, ওয়াহাব ৩/৭৩, জুনায়েদ ২/২৬, হাফিজ ১/১৩)
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৯৫/৬ ডিক্লে. (হাফিজ ০, সামি ৮, আজহার ২৫, ইউনিস ৩৯, মিসবাহ ৮২, শফিক ১৫, সরফরাজ ১৮*; শহীদ ২/২৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৮, শুভাগত ১/১৮, সৌম্য ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৬)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ২২১ (তামিম ৪২, ইমরুল ১৬, মুমিনুল ৬৮, মাহমুদউল্লাহ ২, সাকিব ১৩, মুশফিক ০, সৌম্য ১, শুভাগত ৩৯, তাইজুল ১০, শহীদ ১৪*; ইয়াসির ৪/৭৩, ইমরান ২/৫৬, হাফিজ ১/৩, ওয়াহাব ১/৩৬, জুনায়েদ ১/৪৫)
ফল : পাকিস্তান ৩২৮ রানে জয়ী
সিরিজ : পাকিস্তান ১-০ ব্যবধানে জয়ী