জীবনের কোন না কোন সময়ে কোন না কোন বিষয়ে সামান্য সময়ের জন্যে হলেও মানুষ বিষন্নতায় ভোগে। একজন মানুষ, তিনি যতটাই হাসিখুশি হোন না কেন একটা পর্যায়ে বিষন্নতা আকড়ে ধরে তাঁকেও। আর এই বিষন্নতার কোন শুরু কিংবা শেষ নেই। জন্মের দিন থেকেই নিজের ভেতরে একান্ত আপন করে বিষন্নতা নামক অনুভূতিটিকে আপন করে নেয় প্রতিটি মানুষ অন্য দশটা অনুভূতির মতনই। হয়তো মানুষটি নিজেও জানেনা যে তিনি কতটা বিষন্ন! আর তাই জেনে নিন বিষন্নতা নামের অযাচিত এই আবেগ থেকে খানিকটা সময়ের জন্যে হলেও মুক্তি পাওয়ার উপায়।
১. কাজ আর লক্ষ্যকে গুছিয়ে নিন
চাকরি না পাওয়া, বন্ধুদের মতন উচ্ছল আর প্রাণবন্ত হয়ে আসর মাতিয়ে না তুলতে পারা, ভালো ফলাফল না করতে পারা- এতসব হাজারটা না পারা খুব সহজেই আপনাকে অপরাধবোধের সম্মুখীন করবে। যেটা কিনা আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে বিষন্নতার দিকে। আর তাই নিজের কাজ আর লক্ষ্যকে গুছিয়ে নিন। হোক না সেটা অল্প। কিন্তু কাজটা যেন হয় পুরোপুরি আপনি যতটুকু চাইছেন ততটুকুই। শুধু তাই নয়। চেষ্টা করুন সপ্তাহে অন্তত একদিন বাসার বাইরে না বেরিয়ে কেবল নিজেকে সময় দিতে।
২. বাইরে বের হন
বাসার ভেতরে নিজেকে সময় দেওয়াটা অনেক বেশি দরকারী হলেও সবসময় বাসার ভেতরে থাকা, বাসার থেকে অফিস এবং অফিস থেকে বাসা প্রতিদিন কোন রকম বিরতি না দিয়েই করে যাওয়া খুব সহজেই আপনাকে চারপাশ আর নিজের জীবন নিয়ে বিষন্ন করে তুলবে। আর তাই চেষ্টা করুন সকালে উঠে খানিকটা বাইরে দৌড়ে আসবার। অথবা বিকেলে চেষ্টা করুন রাস্তা বা পার্কে অথবা বাসার ছাদেই বিশ-ত্রিশ মিনিট কোন রকম কাজ ছাড়াই খোলা হাওয়ায় একটু ঘুরে আসার। মন ভালো লাগবে। বিষন্নতা কাটবে।
৩. বন্ধু খোঁজা
আপনার জীবনে এমন কিছু মানুষ নিশ্চয়ই আছেন যারা সবসময়ই আপনাকে মানসিকভাবে সাহায্য করে যান। বোঝান আপনি কতটা যোগ্য। তাদের সাথে খানিকটা সময় কাটান। এলোমেলো গল্প করুন। দেখবেন বিষন্নতা খানিকটা সরে গেছে।
৪. নিয়ন্ত্রণ করা
নিজের জীবনটা বাবা-মা আর পরিবারের গন্ডীতে আটকে যাওয়াই অনেকেই মানসিকভাবে দূর্বল আর বিষন্ন হয়ে পড়েন। কিন্তু একদমই না। নিজের ছোট ছোট কাজগুলোর ব্যাপারে নিজে সিদ্ধান্ত নিন। কিছু কাজের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখুন। এতে করে নিজের ওপর বিশ্বাস ফিরে আসবে। বিষন্নতা কেটে যাবে।
৫. নিয়ম মানা
বিষন্নতা কাটাতে একগাদা টাকা খরচ করা, হঠাৎ ঘুরতে যাওয়া, রাতজেগে মুভি দেখা বাদ দিন। বাদ দিন অ্যালকোহল বা সিগারেটও। কারন একটু সময় ভালো রাখলেও পরের জীবনে এগুলো আপনাকেই ভোগাবে। আর তাই বই পড়ুন, খেলা দেখুন। খেলুন। নিজের শখগুলোর যত্ন নিন। কিন্তু এসব করুন নিজের দৈনন্দিন জীবনের রুটিনকে ঠিক রেখেই। প্রতিদিনের কাজগুলো খুব সহজ করে নিন আর পুরোপুরি সেগুলো মেনে চলুন।
৬. বাজার করা
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বাজার করা বা কেনাকাটা করাটা কিন্তু বিষন্নতা কাটানোর একটা বড় অষুধ। কোলাহলের ভেতরে দোকানদারের সাথে জিনিসের দাম নিয়ে দর কষাকষি করুন। হয়তো বেশ কিছু সময় নেবে। কিন্তু দামাদামি করে দশটা টাকাও যদি বাঁচাতে পারেন জিনিসটা কিনে তাহলেও দেখবেন নিজের ভেতরে একটা রাজ্য জয়ের অনুভুতি আসবে। চেষ্টা করেই দেখুননা!