ঢাকা: রাজধানীর শাপলা চত্বরে ২৪ ডিসেম্বর সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অনড় হেফাজতে ইসলাম। এজন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বারিধারার মাদরাসা থেকে নূর হোসাইন কাসেমীকে র্যাবের একটি দল র্যাব-১ এর কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেল ৩টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়। সেখানে থেকে ছাড়া পেয়েই মাদরাসায় এসে তিনি সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা জানান।
সূত্র জানায়, র্যাব কার্যালয় থেকে ফিরেই বারিধারা মাদরাসায় মহানগর হেফাজতের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী।
এ বিষয়ে র্যাব-১ এর অধিনায়ক কিসমত হায়াত জানান, নূর হোসেনকে ঠিক আটক করা হয়নি। হেফাজতের ২৪ ডিসেম্বরের কর্মসূচি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
র্যাব ডেকেছিলে কেন জানতে চাইলে নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘র্যাবের লোকজন আমাকে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন। আমি আমার নিজের গাড়ি নিয়ে র্যাব কার্যালয়ে যাই। সেখানে তারা আমার সঙ্গে ২৪ ডিসেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন।’
নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, ‘র্যাব আমাকে ২৪ তারিখের পরিবর্তে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরে যেকোনো সময় সবাবেশ করতে অনুরোধ করেন। তারা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে হেফাজতের সমাবেশ করা ঠিক হবে না। কিন্তু আমি তাদের জানিয়ে দিয়েছি, সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের ক্ষমতা আমার নেই। হেফাজতের আমির ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়।’
এদিকে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হেফাজতের একাধিক নেতা।
উল্লেখ্য, রোববার ঢাকা মহানগর ১৪ দলের বৈঠকে আইনপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘২৪ ডিসেম্বর হেফাজত ইসলামকে কোনোভাবে মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে দেয়া যাবে না। বিএনপি, জামায়াত এবং হেফাজত একই সূত্রে গাঁথা । আমাদের জীবন দিয়ে হলেও হেফাজত ও তাদের অনুসারীদের সকল প্রকার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ‘আমাদের সমাবেশ করতে দিলে সরকারেরই বেশি লাভ হবে। ৫ মে হেফাজতের সমাবেশ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। এই সমাবেশ করতে দিলে কারো ক্ষোভ থাকবে না। এছাড়াও আমাদের সমাবেশ বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য আল্লামা আহমদ শফী বিশেষ দোয়া পরিচালনা করবেন দেশের শান্তি কামনা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি এখন অনুমতি না দেয় তবে ক্ষোভ আরো বাড়বে। সরকারের জনপ্রিয়তা কমবে। আমরা ১ মাস আগে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছি। ৩০ নভেম্বর পুলিশের কাছে অনুমতির আবেদন করেছি। আমার বিশ্বাস, সরকার সমাবেশের অনুমতি দিবে। যদি সরকার কোনো কারণে সমাবেশ করতে না দেয় তবে আমাদের গভর্নিং বডি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবে।’
ইতোমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে সমাবেশের জন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।