ঢাকা: ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এক্ষেত্রে যারা ২০০০ সালের জানুয়ারি বা তার আগে জন্ম নিয়েছেন তাদের নিবন্ধনের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে ইসি। এর মধ্যে যাদের বয়স ১৫ থেকে ১৭ তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) দেয়া হবে। তবে বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হলে ভোট দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে না।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের কমিশন বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।
২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্ম নেয়া নাগরিকদের পরিচয় নিবন্ধনের তথ্য সংগ্রহে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ৭২ লাখেরও বেশি নাগরিক নিবন্ধনের আওতায় আসবে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের কমিশন বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি সিন্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে ইসির যুগ্মসচিব জেসমিন টুলী। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ এ প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেন।
তিনি বাংলামেইলকে বলেন, ‘২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্মগ্রহণকারী নাগরিকদের নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কবে নাগাদ এ কার্যক্রম শুরু করবে তা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে।’
২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা কার্যক্রমের পর প্রথমবারের মতো আঠারো বছরের কম বয়সীদের পরিচয় নিবন্ধনে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে পনেরো থেকে সতেরো বছর বয়সীরাই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়েই এসনব নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানা যায়।
বর্তমানে ভোটার তালিকায় ভোটারযোগ্য শুধু ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কিন্তু ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন’ হওয়ার পর তাদের নিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ প্রথম ধাপে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের তথ্য সংগ্রহের প্রস্তাব রাখছে। ২০১৬ সালের ২ মে’র মধ্যে নিবন্ধন কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবছরের শুরুতে হালনাগাদের সময় ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ, তালিকাভুক্ত ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। তবে কম বয়সীদের তথ্য সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জুলাই-আগস্ট নাগাদ বয়সীদের ১৫, ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী নিবন্ধন শুরু হবে। এক্ষেত্রে তারা ১৮ বছর পূর্ণ হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকাভূক্ত হবে। ২০১৭-১৮ সালে এসব নাগরিক ভোটারযোগ্য হলেই এ সংক্রান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, ‘জুলাই থেকে এ কার্যক্রম নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আঠারো বছরের কম বয়সী নাগরিকদের নিবন্ধন সংক্রান্ত বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা গণমাধ্যমে কয়েকদিনের মধ্যে জানাব।’
বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট, ১ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর এবং ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ চলবে। তিন ধাপে ৭২ লাখের নিবন্ধন করার প্রস্তাব কমিশনের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর দেশের সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার বিধান রেখে বিল পাস করে সংসদ। এর ফলে ভোটার না হলেও ১৮ বছরের কম বয়সীদের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পথ তৈরি হয়। এরপরই গত বছর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগকে ১৮ বছরের কম বয়সীদের পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনে নির্দেশ দেয় ইসি।
দেশে বর্তমানে ১৬ কোটির বেশি জনসংখ্যার মধ্যে ৯ কোটি ৬২ লাখ ভোটার রয়েছে।