ঢাকা: রসিকতা সুযোগ পেলে ছাড়েন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যেমন, সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে নিয়ে রসিকতা করলেন। মঙ্গলবার এ নিয়ে অধিবেশন কক্ষে হাসির রোল পড়ে। অবশ্য রসিকতার লক্ষ্য যিনি তিনি ছিলেন নির্বিকার।
গত ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে রাজনীতিবিদদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। নেতা রওশন এরশাদ প্রচণ্ড যানজটের কারণে ওই ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে পারেননি। তবে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সময়মত পৌঁছে ইফতারে যোগ দেন।
এ নিয়ে কৈফিয়ত সংসদে কৈফিয়ত দিয়ে রওশন এরশাদ যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
রওশনের কাছ থেকে এ তথ্য জেনে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তাকে উদ্দেশ করে বলেন, তারা দু’জন (এরশাদের সঙ্গে) যদি এক গাড়িতে আসতেন তাহলে যানজটও কিছুটা কমত!
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত। অন্যদিকে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন। এরশাদ থাকেন বারিধারায় আর রওশন থাকেন গুলশান ২ নম্বরে।
বহু দিন ধরেই দলে কর্তৃত্ব নিয়ে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে হাস্যরস করতেও কেউ ছাড়ছে না। এক সময় দ্বন্দ্ব মেটাতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও মধ্যস্থতা করেছিলেন। ফলে এই দু’জনকে একই গাড়িতে আসার পরামর্শে স্বভাবতই হাসিতে ফেটে পড়েন সংসদ সদস্যরা।
রওশনের বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখিত বিরোধী দলীয় নেত্রী আমার ইফতার পার্টিতে আসেননি যানজটের কারণে। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি যতই হচ্ছে মানুষের গাড়ি ক্রয় করাও বাড়ছে। আপনারই ধরেন না। এরশাদ সাহেব, উনি আসলেন আমার ইফতার পার্টিতে; আপনি আসতে পারলেন না। কিন্তু আপনারা দুজন যদি একটি গাড়িতে আসতেন!’
এসময় সংসদ কক্ষে হাসির রোল পড়ে। এরশাদকেও হাসতে দেখা যায়। তবে রওশন ছিলেন নির্বিকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরোধী দলীয় নেত্রী আপনি নিজেই বিবেচনা করে দেখেন যে, এই দুখানা গাড়ি, তার মানে যানজটটা একটু বাড়ল। আর একখানা গাড়িতে এলে যানজটটা একটু কমত। এভাবে সবাই যদি বিবেচনা করে চলে তাহলে যানজটটা একটু কমানো যায়।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর আশপাশের লোকজন তাকে দেশের মানুষের সঠিক তথ্য দেন না বলে সংসদে বলেন রওশন এরশাদ। সঠিক তথ্য পেতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ছদ্মবেশ ধারণ করে মানুষের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।