চিকিৎসা সেবায় সাধারন মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আফসার গ্রুপ ‘এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিন’ প্রোজেক্ট শুরু করেছে। উদ্দেশ্য বিদেশি চিকিৎসা খুব সহজ করে সাধারন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
এ ছাড়া, দ্বিতীয়বার রোগীকে যেন বিদেশ যেতে না হয় এবং রোগী যেন নিজ এলাকায় বসেই বিদেশি ডাক্তারের কাছ থেকে সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে পারবেন তার ব্যবস্থা থাকছে প্রোজেক্টে। এ জন্য প্রতিটা জেলায় একটি করে টেলিমেডিসিন সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে এজি গ্রুপ।
এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিন বাংলাদেশের রোগীদের বিদেশে চিকিৎসার জন্য ভারতে ৫০০ টি, থাইল্যান্ডে ৩৫ টি এবং মালায়েশিয়ার ১১ টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিন-এর বিজনেস ডেপলপমেন্ট ম্যানেজার অলোক কুমার বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০,০০০ রোগী মেডিক্যাল ভিসা নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে যান। আর সাড়ে তিন লাখ রোগী মেডিক্যাল ভিসা সম্পর্কে ধারনা না থাকায় টুরিস্ট হিসেবে ভারতে যান চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে।
তিনি বলেন, ভিসা জটিলতা থেকে শুরু করে বাস-ট্রেন-বিমানের টিকিটের জন্য অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় রোগীদের এবং পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্যান্য প্রদেশে গিয়ে ভাষাগত জটিলতায় পড়তে হয় তাদের। সর্বশেষ ভারত থেকে চিকিৎসা গ্রহন করে বাংলাদেশে ফেরার পর পরবর্তী চেক-আপ/ফলো-আপের কোন উপায় থাকেনা বলে রোগী তাঁর ইন্ডিয়ান ডাক্তারের সঙ্গে আর কোন যোগাযোগ রাখতে পারেন না।
অলোক জানান, ‘এখন এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিন থেকে রোগী ভারতে যাবার আগে তার সমস্ত মেডিক্যাল ডকুমেন্টস ( প্রেসক্রিপশন , রিপোর্ট , টেস্ট)এর রঙ্গিন স্ক্যান কপি আমদের দেশব্যাপী পার্টনার /এজেন্ট অফিসে গিয়ে জমা দিলে রোগী যে হাসপাতালে যেতে ইচ্ছুক অথবা রোগীর আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ইন্ডিয়ান ৫শ’রও বেশি হাসপাতাল থেকে বিনা খরচে একটা অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট পেয়ে যাবেন, যেখানে রোগীর মেডিক্যাল ডকিুমেন্টস অনুযায়ী কোন ধরনের রোগ হয়েছে, এই রোগের জন্য কি কি করতে হবে, আনুমানিক কত টাকা খরচ হতে পারে এবং কতদিন লাগতে পারে সে সম্পর্কে আগাম ধারনা পেয়ে যাবেন।’
অলোক বলেন, ‘এরপরে রোগী যদি চিকিৎসা করাতে ইন্ডিয়া যেতে চান তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে মেডিক্যাল ভিসার ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়া হবে। রোগী বাসে বা ট্রেনে অথবা বিমানে যেতে চাইলে সে টিকেটও আমাদের দেশব্যাপী পার্টনার/এজেন্ট সেন্টার থেকে পেয়ে যাবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা যদি খুব মারাত্মক হয়, সেক্ষেত্রে দ্রুত ইন্ডিয়ান হাসপাতালে ভর্তির জন্য আমরা এয়ার এ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা করে দিতে পারবো। চিকিৎসা করতে রোগীর যে খরচ হবে রোগী নিজে হাসপাতালে তা পরিশোধ করবেন।
তিনি জানান, শুধু সেবা নয় দেশের টাকা দেশে রাখার জন্য রোগীকে যাতে দ্বিতীয় বার ইন্ডিয়া বা অন্য কোনো দেশে যেতে না হয় তার জন্য টেলিমেডিসিন প্রজেক্টের ভারত এবং বাংলাদেশের সেরা চিকিৎসকদের দিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন হেলথ ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমেও চিকিৎসা সেবা সাধারন মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এখন রোগী যেমন ডাক্তারের কাছে যান, এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিনের মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে ডাক্তারকে রোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।
এই প্রচেষ্টার যিনি উদ্যোক্তা তিনি হলেন আফসার গ্রুপের এমডি এবং চেয়ারম্যান মেজর খন্দকার নুরুল আফসার (অবঃ)। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ১৩ বছরের কর্মজীবন শেষ করে যোগদান করেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এ জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে।
অলোকের ভাষায়, খন্দকার নুরুল আফসার (অবঃ) ‘সিটিনেট’ নামের একটা আন্তর্জাতিক সংস্থার শাখা অফিস ঢাকা সিটি কর্পোরেশন-এ স্থাপন করে এর কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমনের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহন করেন। এছাড়া তিনিই প্রথম ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের বিভিন্ন সুবিধা ঘরের দরজায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ‘ডোর টু ডোর’ পিকআপ সার্ভিস চালু করেন। সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিষয়টা বুঝতে পেরে, নাগরিকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে তিনি বিভিন্ন নাগরিক সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর মধ্যে আরমাক সার্ভিসেস লিমিটেড, এরিয়াক লিমিটেড, ফ্যান আউট লিমিটেড, স্পোর্টস লাইন লিমিটেডসহ সর্ব মোট ২০ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এইসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি ‘ক্লিনিং অ্যান্ড সিকিউরিটি, টেলিকমিউনিকেশন অ্যান্ড ইন্টারনেট, রিয়েল এস্টেট, স্পোর্টস ও এডুকেশন’ সেক্টরে অবদান রেখে চলেছেন। উল্লেখ্য যেসব ছাত্রছাত্রীর লেখা পড়া করার আর্থিক সামর্থ্য নেই তাদের জন্য ঢাকার উত্তরাতে ‘আনোয়ারা-মান্নাফ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করে যাচ্ছেন তিনি। যাদের সামর্থ্য আছে তারাও নামমাত্র মুল্যে শিক্ষা গ্রহন করছে।
মেজর খন্দকার নুরুল আফসার (অবঃ) তার সততা এবং সুনামের জন্য মহাখালি ডিওএইচএস এর সেক্রেটারি হিসেবে প্রথমবার বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে পরবর্তী আরো তিনবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে এখন সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মহাখালি ডিওএইচএস-এর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে সঙ্গে ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক-এর মত প্রোগ্রাম দিয়ে ডায়াবেটিকসহ অন্যান্য রোগীদের স্বল্প মুল্যে চিকিৎসা সেবার বন্দোবস্ত করেছেন তিনি।
আফসার গ্রুপ এজি মেডিক্যাল টুরিজম অ্যান্ড টেলিমেডিসিন প্রোজেক্টের মাধ্যমে দেশব্যাপী কর্মসংস্থানের সৃষ্টির উদ্যোগও নিয়েছে। এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে সর্বমোট ৬০০ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। মেডিকেল ট্যুরিজম সেবা পেতে এবং এই সেবাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ
অথবা যোগাযোগ করতে পারেন
অলোক কুমার বিশ্বাস
প্রোজেক্ট এবং বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যনেজার, এজি মেডিক্যাল টুরিজম বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ ০১৮৪১৭০০৯০৪
ইমেইলঃ alok@agmedicaltourism.com ; alok_6784@hotmail.com
রাইজিংবিডি