পর্ন সাইটে সরকারি বিধিনিষেধে বিপাকে পড়েছে ভারতের অসংখ্য মানুষ, তা বলাই বাহুল্য। কারণ অ্যাডাল্ট সাইট পর্নহাবের জরিপে যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি পর্ন দেখা হয়, ভারত আছে চার নম্বরে। শিশুরা যাতে অবাধে পর্নোগ্রাফিক সাইটে যেতে না-পারে, সেই যুক্তিতে সরকার ৮৫০টিরও বেশি সাইট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার, তাই বিতর্ক এখন তুঙ্গে।
প্রশ্ন উঠছে তবে কি যৌণতা ও ধর্ষণের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছে না সেদেশের সরকার? নাকি ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার তাদের আছে?
সরকারি সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিল্পী-লেখক-বুদ্ধিজীবীরা, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে কি সত্যিই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পর্ন সাইট? না- ভারতের টেলিকম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পর্ন সাইট নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। তবে অবলম্বন করা হচ্ছে সাবধানতা। প্রাপ্তবয়স্করা প্রক্সি সেটিং ব্যবহার করে এই সব সাইট অ্যাক্সেস করতে পারবেন।
পর্নহাব থেকে শুরু করে রেড ব্রিজার্স, রেড টিউব-এর মত আন্তর্জাতিক স্তরের বড় বড় সব ওয়েবসাইট বন্ধের পর এখন প্রশ্ন ইন্টারনেটে কি সত্যিই এমন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আনা সম্ভব? বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ইন্টারনেটে আরোপ করা একেবারেই সম্ভব নয়।
সরকার যে সব ওয়েবসাইট বন্ধ করেছে সেগুলো VPN বা এই জাতীয় কোনও সার্ভারের মাধ্যমে খুলে তা ফের ব্যবহার করা যায়। এরকম সার্ভারগুলোর কাজই হল ব্লক করা কোনও ওয়েবসাইটকে খুলে দেওয়া। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে ব্লক করা সাইটের লিঙ্ক দিলেই তা খুলে যাবে। যদিও সরকার থেকে ব্লক করা হলে তা খুলতে পারে খুব কম VPN বা এই জাতীয় সার্ভার।
টরেন্ট জাতীয় ওয়েবসাইট থেকে সহজেই পর্ন ডাউনলোড করে তা মোবাইল বা যে কোনও জায়গায় দেখা যায়। টরেন্ট ওয়েবসাইট ব্লক করা টেকনিক্যালি প্রায় অসম্ভব।
পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিককালে হোয়াটইসঅ্যাপের মাধ্যমে পর্ন ক্লিপ বা ছবি সবচেয়ে বেশি আদানপ্রদান হয়। সেক্ষেত্রে সবার আগে হোয়াটইসঅ্যাপের মত সোশ্যাল সাইট বন্ধ করতে হয়। তা না হলে পুরো প্রক্রিয়ার শুরুতেই গলদ থেকে যাবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের নিষিদ্ধ প্রায় ৮৫০টি পর্ন সাইটের মধ্যে অন্যতম এক্সভিডিও.কম বা পর্নহাবের মতো বহুল ব্যবহৃত সাইটগুলো, মার খেয়েছে তাদের ব্যবসা। সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতিমাসে এই সাইটগুলোর পেজভিউ প্রায় চার কোটি এবং ইউনিক ভিজিটরের সংখ্যা ছিল ৩৫০ লক্ষ।
সরকারী সিদ্ধান্তের পর এক্সভিডিও.কম টুইটারের মাধ্যমে তাদের অনুসরণকারীদের বলেছে, ‘আগামীদিনে ভেবে-চিন্তে ভোট দিন’। কিছু পর্নসাইটের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদনও জানানো হয়েছে।