ঢাকা: পৌষের বিকেল গড়িয়ে সবে সন্ধ্যা নেমেছে। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ঠাণ্ডা হাওয়া। এমন হাওয়ায় কার না মন দুলে ওঠে! মন কেবলই উষ্ণতা খোঁজে। সে উষ্ণতার খোঁজেই বাংলাদেশের জনপ্রিয় পাঁচ তরুণী তারকার কাছে হাজির হলো সাংবাদিকরা।
কথা বলে জানা গেলো এই শীতে তাদের মন চাইছে সবকিছু ফেলে গরম গরম আড্ডায় বসে পড়তে। হাসি, গল্প আর খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠার মো মো গন্ধে জমে উঠবে সেই সন্ধ্যাকথন পর্ব। কিন্তু বাস্তবতার কাছে হার মানতে হয়। তাই ইচ্ছে থাকলেও শ্যুটিং ফেলে চলে যেতে পারেন না। কারণ টেলিভিশনের পর্দার সামনে তাদের জন্যই বসে থাকেন লক্ষ কোটি দর্শক ও ভক্ত। তাদের চাহিদা পূরণে শীতেও থেমে নেই তারকাদের লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন।
প্রচণ্ড শীতে ঝর্ণার পানিতে ভিজে সাবানের বিজ্ঞাপন
অভিনেত্রী প্রভা দীর্ঘদিন ধরে নাটকে অভিনয় করছেন। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন চিত্রেও কাজ করেছেন। শীত নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘একবার একটি সাবানের বিজ্ঞাপন চিত্রের শ্যুটিং করেছিলাম প্রচণ্ড শীতের মধ্যে। যেহেতু সাবানের বিজ্ঞাপন তাই ঝর্ণার পানিতে নামতেই হলো। যখনই নামলাম তখন মনে হলো আমাকে কেউ ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিয়েছে। যাই হোক, শ্যুটিং শেষ করার পর দ্রুত পোশাক পাল্টে ফেলে সে যাত্রায় রক্ষা পাই।’
শীতকালটা প্রভার কাছে ফ্রিজতুল্য হলেও মনের মাঝে উৎসব ভাবটা ঠিকই থাকে। এজন্যে সময় পেলেই কফি হাতে বসে পড়েন আড্ডায়। সঙ্গে শীতের পিঠা অবশ্যই থাকা চাই।
ভাপা পিঠা খাওয়ার লোভ সামলাতে পারি না
অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের সবচেয়ে প্রিয় ঋতু শীতকাল। কারণটা তার মুখ থেকেই শুনুন, ‘শীতের মজাই আলাদা। বিশেষ করে শীতকালে শ্যুটিং করতে কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয় না। ইচ্ছে মতো হৈ চৈ, লাফালাফি আর ছুটোছুটি করা যায়। শরীরে কোনো ক্লান্তি আসে না। ঠাণ্ডার মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চা খাওয়ার মাত্রাও বেড়ে যায়। তাছাড়া ঢাকার বাইরে গ্রামে শ্যুটিং করতে গেলে ভাপাপিঠা খাওয়ার লোভ সামলাতে পারি না। ’
অনেক তারকা শীতকালটাকে শ্যুটিংয়ের জন্যে উপযুক্ত সময় মনে করেন, কারণ মেকআপ নষ্ট হওয়ার চিন্তা থাকে না। এ সর্ম্পকে প্রসূন বলেন, ‘মেকআপ নিয়ে আমি কখনও চিন্তা করি না। কারণ আমার মেকআপ সব সময়ই ঠিক থাকে।’
শীতের সকালে এক চিলতে রোদ সঙ্গে এক কাপ চা
অভিনেত্রী ভাবনার বেশিরভাগ শ্যুটিং হয় ঢাকার বাইরে। আর তাই শীত এলে একটু শঙ্কায় থাকতে হয়। কারণ, ভাবনা বেশি ঠাণ্ডা সহ্য করতে পারেন না। শীত নিয়ে একটা বাজে অভিজ্ঞতা আছে তার। একবার শীতকালে ঢাকার বাইরে গ্রামে শ্যুটিং করতে গিয়ে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। প্রচণ্ড জ্বর নিয়েও তাকে শ্যুটিং করতে হয়। কারণ ওই সময় শ্যুটিং বন্ধ করলে শিডিউল জটিলতায় ফাঁসতে হতো পুরো ইউনিটকে। আর তাই কষ্ট করে হলেও শ্যুটিং চালিয়ে যান তিনি।
তবে সবার মতো ভাবনার কাছেরও শীত মানে উৎসব উৎসব ভাব। বিশেষ করে শীতের সকালে এক চিলতে রোদ সঙ্গে এক কাপ চা ভাবনাকে এলোমেলো করে দেয়। তখন আপন মনেই গেয়ে ওঠেন, ‘মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালো…..’।
কুয়াশাকে সমীহ করে চলেন স্বাগতা
নিজের নামের মতো করেই শীতকে স্বাগত জানান স্বাগতা। কখন শীত আসবে সেই প্রতীক্ষায় থাকেন। তবে শীত নিয়ে শঙ্কায়ও ভোগেন এই অভিনেত্রী। কারণ, তিনি যে সুরেরও সাধক। যদিও গান গাইতে গিয়ে ঠাণ্ডায় কখনও গলা জমে যায়নি।
শীত নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে লোমহর্ষক এক ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়। তিনি বলেন, ‘সেইবার শ্যুটিং শেষ করে গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলাম। প্রচণ্ড কুয়াশায় কিছুই দেখা যায় না। এর মধ্যে গাড়ি ছুটে চলেছে। যাই হোক তখন ভালোভাবেই বাসায় ফিরতে পেরেছিলেন।’ তারপর থেকে শীতকে ভয় না পেলেও কুয়াশাকে ঠিকই সমীহ করে চলেন এই অভিনেত্রী।
শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে শীত উদযাপন
অভিনেত্রী ও মডেল বিদ্যা সিনহা মিমের কাছে শীত মানে শ্যুটিংকাল। সকাল-বিকেল-সন্ধ্যায় এমন কি মাঝরাতে শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় এই অভিনেত্রীকে। তাই শীতকালটাকে সেভাবে উপভোগ করতে পারেন না তিনি। এ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘যখন ছোট ছিলাম তখন শীত এলেই মনের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যেত। যখন তখন পিঠা খাওয়ার ধুম পড়তো। বিশেষ করে বিকেল বেলা পিঠা চাই-ই চাই।’
শ্যুটিংয়ের ব্যস্ততায় আগের মতো শীতকাল উপভোগ করতে না পারলেও সময় সুযোগ মতো শীতের পিঠা, রোদ আর চা কফি ঠিকই চলে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখনও শ্যুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে শীতটাকে উপভোগ করি। তবে তাতে আগের মতো প্রাণ থাকে না।’