রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সুন্দরবন অভিমুখে তিন দিন ব্যাপী রোড মার্চ শুরু হয়েছে। শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এই রোড মার্চ শুরু হয়। রোড মার্চে বেশ কয়েকটি বাম রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে।
রোডমার্চ শুরুর আগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তরা বলেন, হেরিকেনের আলো জ্বালিয়ে থাকলেও সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুত চাই না। প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই,আপনি জাতিসংঘের চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সে কারনে হলেও এই বিদ্যুৎ প্রকল্প সুন্দরবন এলাকায় না করে অন্যত্র করুন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বক্তারা আরও বলেন, রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি সরকারের হাতে সন্দরবনের মৃত্যু পরোয়না। আমরা আশা করি, আপনি যদি দেশ প্রেমিক হয়ে থাকেন তাহলে জনগনের দাবি মেনে নেবেন।
বক্তারা বলেন, রামপালে এই বিদ্যুৎ প্রকল্প করা হলে সন্দরবন ধ্বংস হবে। এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অনেক মানুষ আশ্রয়স্থল হারাবে। তারপরেও দেশী-বিদেশী বিষেজ্ঞ ব্যক্তি ও সংস্থার পরামর্শ অগ্রাহ্য করে ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি’র এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
তেল-গ্যাস-রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যদি সুন্দরবন ধ্বংস করে, তাকে উন্নয়ন প্রকল্প বলা যাবে না। সুন্দরবন সম্পর্কে সরকার ভুল তথ্য দিয়ে এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। সরকারের হাতে সন্দরবনের মৃত্যু পরোয়না।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সুন্দরবনে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প মানে ১৬ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করা। তাই আমাদের আন্দোলন ১৬ কোটি মানুষের হয়ে আন্দোলন। এ আন্দোলের সঙ্গে দেশের মানুষের সমর্থন রয়েছে। তাই সরকারকে সন্দরবন ধ্বংসকারী প্রকল্প থেকে সরে আসতে হবে।
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশারেফা মিশু বলেন, দেশের মানুষ এমনিতেই নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে সুন্দরবন ধ্বংস হবে। ফলে মানুষ ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হবে। তাই আমরা দেশের মানুষকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দিতে পারি না।
রোড মার্চের ঘোষণা দিয়ে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতামত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সরকার রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আমরা এই প্রকল্প হতে দিতে পারি না।
তিন দিন ব্যাপী আমাদের এই রোড মার্চ ঢাকা থেকে রওনা হয়ে শুক্রবার বিকাল ৪টায় মানিকগঞ্জে সভা করবে। সেখানে রাত যাপন করে পরদিন শনিবার গোয়ালন্দে সংক্ষিপ্ত পথসভা করে ফরিদপুর, মাগুরা হয়ে যশোরে বেলা ৩টায় সমাবেশ করবে এবং সেখানে রাত যাপন করবে।
শেষ দিন রোববার খুলনা শহীদ হাসিদ পার্কে সমাবেশ করে বাগেরহাটের কাটাখালীতে সমাবেশে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার মধ্যদিয়ে এই রোডমার্চ কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।
Next Post