যে ১০টি কাজ ব্রেকআপের পর কখনই করা উচিত নয়

0

Brekupএকদিন হঠাৎ দেখা হবার পর চোখে চোখে কথা, দু-চারটা ভাব বিনিময় তারপর প্রেমের প্রস্তাব। ব্যাস হয়ে গেল। ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলা। আজ ধানমন্ডির লেকে তো কাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরশু আশুলিয়া। এভাবে নিয়মিত চলতে থাকে প্রেম। এরপর কোন একফাঁকে বন্ধুর ফ্লাটে অথবা কক্সসবাজারে্। নোংরা শুনালেও এসব এখন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তো যাই হোক প্রেম চলছেই। মাঝে মাঝে দু-একটা ছোটখাট বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হলেও আবার ঠিক হয়ে যায়। কখনও মনের টানে কখনোবা শরীরের টানে। এভাবে ছয়মাস, একবছর বা দুই বছর.. পার হলো তারপর হঠাৎ তুচ্ছ একটি বিষয় বা ধরেও নিলাম সিরিয়াস একটি বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া, কথাকাটাকাটি, চূড়ান্ত মান-অভিমান এরপর.. “দুঃখিত, আপনি যে নাম্বারে ডায়াল করেছেন তা এ মুহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না”। এই সংযোগ আর কখনই দেয়া সম্ভব হলো না। মানে ব্রেক আপ।

এরপর তাদের পরিণতি কি হতে পারে তা বুঝতেই পারছেন। তবে যারা বছরে দু-চারটা প্রেম করে তাদের প্রসঙ্গটা ভিন্ন। তাদের কি হতে পারে সেটা না হয় আর এক দিন আলোচনা করা যাবে। আসল প্রসঙ্গে আসা যাক। ব্রেকআপের পর যে ছেলে বা মেয়ে সত্যিই “ছাঁকা” খেল তার মাঝে তাৎক্ষনিকভাবে বিভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। অথবা এমন কিছু করে বসে যা কারোরই করা উচিত না। কারো কাম্য না। এ সম্পর্কে অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা করা যেতে পারে তবে ব্রেকআপের পর নিচের ১০ টি উল্লেখযোগ্য বিষয়ে খেয়াল রাখবেন এবং না করার চেষ্টা করবেন। এতে মঙ্গল বৈকি অমঙ্গল হবে না।

১. দিলে আঘাত পেয়েছেন তো কি হয়েছে শরীরে যেন আঘাত না লাগে

কথাটি বলে লাভ হবে কিনা জানি না। কারণ ব্রেকআপের পর যার মনে আঘাত লাগে তাৎক্ষনিক সে কারো কোন উপদেশ শুনবে বলে মনে হয়না। তবুও বিনা পয়সার উপদেশ দিয়ে গেলাম। ভুলেও শরীরে আঘাত করবেন না। অথবা এমন কিছু করবেন না যা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। ব্লেট দিয়ে হাত কেটে ব্রেকআপের চিহ্ন আঁকবেন না বা নাম লিখে স্বরণীয় করে রাখায় চেষ্টা করবেন না। এতে করে না আপনার বেদনা কমবে না যার জন্য করছেন তার কিছু হবে। পরপর কয়েক রাত যদি কোনভাবেই ঘুমাতে না পারেন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট খান। একসাথে ৫০ টা খেয়ে মরার চেষ্টা করবেন না। কোনভাবে যদি আবার বাঁচার ইচ্ছে জাগে অথবা আপনার হায়াত থেকে থাকে তখন টের পাবেন ওয়াস করার যন্ত্রণা কেমন।

২. যে চলে গাছে তাকে যেতে দিন

সাহিত্যের ভাষায় একটি কথা আছে, যে চলে গাছে সে কখনও আপনার ছিলওনা। আর যে সত্যিকারের আপনার, সে কখনও আপনাকে ছেড়ে যাবেও না। আর যদি কোন কারণে বা বাস্তবতার কাছে পরাজিত হয়ে চলেও যায় তবে তাকে গালাগালি করে বা ক্ষতি করে তার গোষ্ঠী উদ্ধার করতে যাবেন না। আবার হুটহাট নতুন প্রেমের সন্ধানেও বের হবেন না। সময় নিন। ভাবুন। নিজেকে সামলিয়ে নিন। আবার স্বাভাবিক হয়ে তারপর নতুন করে শুরু করুন।

৩. সারা দুনিয়া বলে বেড়াবেন না

ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে “Don’t tell your problems to people: eighty percent don’t care; and the other twenty percent are glad you have them.” বুজতে পেরেছেন? কাজেই আপনার যে সমস্যা হয়েছে তা সবাইকে জানালেই তার সমাধান হবে তা কিন্তু না। মাথা ঠান্ডা রাখুন। আর হুটহাট ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে বিরহের স্ট্যাটাস দিয়ে বসবেন না। উপরের প্রবাদের মত বেশিরভাগ লোকই তা স্কিপ করে যাবে অথবা আরো খুশি হবে। ফেসবুকে মেয়েদের বেলায় অবশ্য উল্টোটা ঘটে। সেটা অন্য প্রসঙ্গ। তবে সমস্যা যেটাই হোক বুঝে শুনে শেয়ার করুন।

৪. শত্রু বাড়াবেন না

দুনিয়াতে শত্রুর সংখ্যা যত কম থাকবে ততই মঙ্গল। তা না হলে বডিগার্ড সাথে নিয়েও কোন লাভ হবে না। শত্রু ঠিকই একসময় তার প্রতিশোধ নিবে। এটাই বিধাতার রীতি। যে চলে গেছে তার গায়ে এ্যাসিড নিক্ষেপের কি দরকার? অন্যায় করলে সৃষ্টিকর্তাই তার গায়ে এ্যাসিড নিক্ষেপ করবে। আপনি এই দায়িত্ব শুধু শুধু কেন নিতে যাবেন? দুদিন পরে তো লাল ঘরে বাস করতে হবে।

৫. স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টা করবেন না

যার সাথে ব্রেকআপ হয়ে গাছে তার জন্মদিন পালনের কি কোন মানে হয়? অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা মেরেছেন, সেখানে অনেক মধুর সময় পার করেছেন। এখন ব্রেকআপ হওয়ার পর যেখানে আপনারা বসতেন ঠিক সেখানেই বসে সিগারেট টানছেন! এর কোন দরকার নেই। এই স্মৃতিচারন আপনাকে আরো পিছনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে। আর উপহার দিবে কয়েক টন হতাশা!

৬. সবার কাছ থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবেন না

কথনই নিজেকে সবার কাছ থেকে আলাদা করে একঘড়ে হয়ে থাকা উচিত নয়। এরফলে মানসিকতা একপেশে হয়ে যায় এবং একাকিত্ত বাড়ে। আক্রান্ত হবেন নানারকম মানসিক রোগের। তাই সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষটির সাথে যখন সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন ভুলেও একা থাকার চেষ্টা করবেন না। কখনও ভাববেন না আমার সব শেষ। আমি এখন একা। নিঃশ্ব। ইত্যাদি ইত্যাদি। সবার সাথে প্রাণ খুলে কথা বলুন আর একান্ত বিশ্বস্তজনের সাথে আপনার সমস্যার কথা শেয়ার করুন।

৭. পরিবারের কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না

কথায় আছে পর কোনদিন আপন হয়না আর আপন কোনদিনও পর হয়না। আপনার সমস্যা এবং কষ্টের কথা পরিবারের সদস্যদের সাথে শেয়ার করুন। মা, বাবা অথবা বড় ভাই, বোন এরাই আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারবে। উল্টো এদের সাথে খারাপ আচরণ করলে আপনার অশান্তি আরো বাড়বে।

৮. একই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়

কথায় আছে নাড়া বেলতলায় একবারই যায়। তবে কেউ কেউ আবার বার বার যায়। একই ভুল বারবার করে। নতুন কোন সিন্ধান্ত নেবার আগে বারবার ভাবুন। দরকার হয় আপনজন এবং কাছের বন্ধুর কাছ থেকে পরামর্শ নিন।

৯. নেশা থেকে দূরে থাকুন

অনেকের মাঝে এই প্রবণতা আছে। বিশেষ করে ছেলেরা যখন এ ধরণের সময় পার করে তখন তাদের মধ্যে ড্রাগ আডিক্টেড হয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। উচ্চ বিত্ত পরিবারে মেয়েদের মাঝেও এ প্রবণতা লক্ষ করা যায়। পুরনো স্মৃতি ভুলে থাকার জন্য তারা ইয়াবা অথবা অন্যান্য ঘুমের ট্যাবলেটকেই বেছে নেয়। সাবধান হয়ে যান। এসব কোন সমাধানই এনে দিবে না বরং আরো নতুন সমস্যায় হাবুডুবু খাবেন।

১০. প্রতিশোধ নেয়ার কথা চিন্তাও করবেন না

ছেলে ও মেয়ের মাঝে প্রেম যখন অনেক গভীর তখন তাদের রিলেশানের মাত্রা প্রায়ই সীমানা ছারিয়ে যায়। আজকাল এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দারিয়েছে। ছেলেটি হয়ত তাদের কোন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করল। কিন্তু যখনই ব্রেকআপ হয়ে যায়। সে হয়ত প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভিডিওটি প্রকাশ করে দেয়। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনার উদাহরণ প্রায় সবারই জানা। যদিও দেশে এরকম ভিডিও বা ছবি প্রকাশ বন্ধের জন্য নতুন আইন হয়েছে। লাভ কি? চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী। কাজেই সময় থাকতেই সাবধান হোন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More