আমরা বিএনপি ডট কম এর প্রতিবেদন ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতকে হাসিনার দেশবিক্রির অফার, ফাঁস করলো বিজিপি
ক্ষমতায় টিকে থাকার শেষ চেষ্টা হিসেবে ভারতের কাছে ১০ টি দেশবিরোধী অফার দিয়েছে হাসিনা সরকার। আর অফার নিয়ে পাঠানো হয়েছে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদকে।বিজেপি সেই অফার ফাঁস করে দিলো কয়েকটি মিডিয়ার কাছে।
সম্প্রতি তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জীর মধ্যস্থতায় বিজেপিকে সে ১০ টি অফার দেয় শেখ হাসিনা।
১০ টি অফারের মধ্যে রয়েছে বিনাশুল্কে ট্রানজিট দেয়া, বিজিবিকে সীমান্তে নিস্ক্রিয় রাখা, বঙ্গোপসাগরের ব্লক ও সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন করতে দেয়া, কংগ্রেসের চেয়েও বেশি সুযোগ সুবিধা বিজেপিকে দেয়া, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কে সেনাবাহিনীসহ সবজায়গায় ইচ্ছেমতো প্রবেশ ও হস্তক্ষেপের সুযোগ দেয়া, বিজেপির প্রেসক্রিপশনে দেশপরিচালনায় প্রতিশ্রুতিসহ সংখ্যালঘুদের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা প্রদান করা এবং ভারতবিরোধী কোন সন্ত্রাসী সংগঠনকে জিরো টলারেন্স দেখানো। তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এইবার প্রথম বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে একজন হিন্দু এসকে সিনহাকে নিয়োগ, সংসদে হিন্দুদের পূজার আয়োজন করা ও বিজয়ের মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতীয় পতাকার রঙের শাড়ি পরিধান করা এবং তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে সুন্দরবনে তেলের ট্যাঙ্কার ডোবায় সরকার।
সম্প্রতি বিরোধীজোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিজেপির প্রেসিডেন্ট ফোন করে তার অবরুদ্ধ অবস্থার স্বাস্থের খবর নিয়েছিলেন। সে খবরে আওয়ামীলীগ সরকারের কলিজার পানি শুকিয়ে যায়। ভারতের কংগ্রেসের একমাত্র সমর্থনে জোর করে ক্ষমতায় থাকা হাসিনা সরকার বিজেপি ক্ষমতায় এলে অস্তিত্বের সঙ্কটে পরে। কংগ্রেসের মতো বিজেপি হাসিনার সরকারকে সমর্থন না দিলেও দলটি ভেবেছিল অন্তত বিএনপিকে সমর্থন দিবে না। কিন্তু বিজেপির প্রেসিডেন্ট যখন অবরুদ্ধ খালেদা জিয়ার সাথে কথা বলেছেন তখন আওয়ামীলীগের শেষ ভরসার কফিনে পেরেক গাঁথে। হাসিনার নির্দেশে আওয়ামীলীগের দলীয় গণমাধ্যম ৭১ ও টুয়েন্টিফোর অমিত শাহ যে খালেদা জিয়াকে ফোন করেনি সেরকম সংবাদের এ্যাসাইন্টমেন্ট দেয়। যে কারণে কতিপয় গণমাধ্যম ফেইক অমিত সাজিয়ে একটি ফোনালাপ প্রকাশ করে প্রমাণের চেষ্টা করে যে অমিত শাহ খালেদা জিয়াকে ফোন করেনি।
এ বিষয়ে ভারতের এক বিখ্যাত সাংবাদিক লন্ডন অফিসকে জানান, অমিত শাহ খালেদা জিয়াকে ফোন করেছেন সত্য। তবে তিনি চেয়েছেন বিষয়টা সিক্রেট থাকুক। যে কারণে ফোনালাপের বিষয়টি সিক্রেটই রাখতে চেয়েছেন। আর এ কারণেই অমিত শাহ ফোনালাপের বিষয় নিয়ে কোন বিবৃতি দেননি। যদি অমিত শাহ ফোন না করতেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই একটি বিবৃতি দিতেন। আমি যতটুকু জানি বাংলাদেশ সরকার সে চেষ্টা করেছে। তবে তাতে কোন কাজ হয়নি।
তিনি আরও জানান, ভারতের বিজেপির উর্ধ্বতন নেতৃত্বের সাথে লন্ডনে অবস্থিত তারেক রহমানের একাধিক উপদেষ্টার ইতিবাচক ও মধুর সম্পর্ক রয়েছে। আর তাদের প্রচেষ্টাতেই বিএনপির আন্দোলনের প্রতি বিজেপির সমর্থন আদায়ে কাজ চলছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশ সরকার তারেক রহমানের উপর প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বিজেপির সাথে ঘনিষ্ঠ তারেক রহমানের একজন উপদেষ্টা জানান, অমিত শাহ ফোন করেছেন সেটা সরকার নিশ্চিতভাবে জানেন। আর সে কারণেই তাদের এতো গা জ্বালা। তাদের শেষ তরীটিও ডুবে যাওয়ায় পাগল হয়ে গেছে দলটি। যে কারণে ভারতের লবি ম্যান্টেন করা তোফায়েল আহমেদকে ভারতে পাঠায় শেখ হাসিনা।
তবে বিজেপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার ম্যাসেঞ্জার তোফায়েলের সাথে দেখা করেনি বিজেপির কেউই। অমিত শাহের ফোনের বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের মিথ্যাচারে ভারতের ক্ষমতাসীন দলটি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। অমিত শাহ ও খালেদা জিয়ার ফোনালাপ নিয়ে সরকারের বাড়াবাড়িতে বিব্রত বিজেপি। আর যে কারণে তোফায়েল শেষ পর্যন্ত ভারতের প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের প্রণব মুখার্জির সাথে সাক্ষাত করে বিজেপির কাছে ১০ টি অফার করেন। যদিও ফিতা কাটার মতো কিছু আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া প্রণবের তেমন কোন ক্ষমতা নেই তবুও শেষ ভরসা হিসেবে তাকে দিয়ে বিজেপিকে পক্ষে রাখতে চায় হাসিনার সরকার। আর যে কারণে ১০ টি গোপন অফার দিয়েছে তারা।
যে অফারগুলোর সবগুলোই ভারতের পক্ষে এবং বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর বলে জানা গেছে। তোফায়েল আহমেদ রবিবার ভারত থেকে দেশে ফিরে ভোলার প্রশাসনকে বিএনপির আন্দোলনমুখী নেতাকর্মীদের যেকোনমূল্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়। সারাদেশেই একই নির্দেশ দেয় সরকার।
কারণ হিসেবে আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার বিজেপিকে ম্যাসেজ দিতে চায় যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে। আর যে কারণে আওয়ামীলীগের ১০ টি অফার মেনে যেন তাদের পক্ষে সমর্থন দেয় বিজেপি। এর আগে বিজেপির সাথে দেখা করতে ভারতে যায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ। এছাড়াও, বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত পঙ্কজ শরণের সাথে দেখা করে বিজেপির পূর্ণাঙ্গ প্রভূত্ব মানার বিষয়ে দাসখত দিয়ে আসে হাসানুল হক ইনু গংরা। বিজেপির অব্যাহত সমর্থনের জন্য দেশবিরোধী ও কাগজে কলমে না হলেও কার্যত দেশবিক্রির পথে আগাচ্ছে শেখ হাসিনা।
তবে কি বিজেপি জনগণের ম্যান্ডেটহীন কোন সরকারকে সমর্থন দিবে নাকি জনগণের দাবিতে সমর্থন দিয়ে আন্দোলনের পক্ষে থাকবে সেটা সময় বলে দিবে।