ব্রহ্মপুত্রের তীরে যুবক-যুবতিদের অবাধ প্রেমের মেলা

0

Brammoputraযৌবন হারিয়েছে ব্রহ্মপুত্র। নদের বুক অনেকটাই মরুভূমির মত হলেও নদের ওপারের দৃষ্টি নন্দন কাশবন বিনোদন পিয়াসীদের হৃদয় নাড়া দেয়। কিন্তু শহর ঘেষা ব্রহ্মপুত্রের ওপারের কাশবন হয়ে উঠেছে প্রেমিক-প্রেমিকাদের অভয়ারণ্য। কথিত প্রেমের আড়ালে রীতিমত অশ্লীলতা আর বেহায়াপনায় মেতে উঠেছে যুবক-যুবতীরা। ফলে নদের তীরে চলাচলের স্বভাবিক পরিবেশও আর থাকছে না।
সকাল থেকে সন্ধ্যা নাগাত প্রেমলীলায় মত্ত তরুণ তরুনীদের অবৈধ যৌনাচরের অভিযোগ চরের বাসিন্দাদের। প্রতিবাদ করলেও মিলে না প্রতিকার। আগে মাঝে মধ্যে পুলিশী অভিযান চললেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে কথিত প্রেমিক যুগলদের অশ্লীলতার ভয়ংকর প্রদর্শনী চলছে। সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
শহরের জয়নুল আবেদিন উদ্যান পার্কের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সারি সারি নৌকা। জনপ্রতি মাত্র ৫ টাকা ভাড়ায় সহজেই পৌঁছানো যায় নদের ওপারে। দূর থেকে দেখলে মনে হবে কক্সবাজারের সমুদ্রতীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গোটা চরে আপত্তিকর অবস্থায় মগ্ন তারা। দুপুরের চিত্র আরো ভয়াবহ। স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে টিনেজারা ভিড় করছেন এখানে। মেতে উঠছেন নষ্ট প্রেম প্রেম খেলায়।
প্রায় দু’যুগ যাবত ব্রহ্মপুত্রের বুকে নৌকা চালান আব্দুর রহমান (৬৫)। বর্ষা মৌসুমে মন্দাভাব থাকে ব্যবসায়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে পোয়াবারো অবস্থা। সকাল-সন্ধ্যা ডজন ডজন প্রেমিক প্রেমিকাদের নদী পারাপারের কাজ করেন।
তার ভাষ্যে, প্রতিদিন প্রায় একশ’র মত প্রেমিক প্রেমিকা নদী পার করি। যদি তাগরে কই নৌকা দিয়া ঘুরবার লেইগ্যা তহন তারা নৌকা দিয়া না ঘুইরা গাছের আউলিত বইয়া থাহে। প্রতিবাদ করবার গেলে তো নদী চরে ৫২ জন মাঝি পরিবারের সবার পেটেই লাথি মারা হইবো। তাই এরা আকাম করলেও সবাই সহ্যই কইরা যায়।
পুলিশী অভিযানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একদিন পুলিশ ছেলে মেয়েদেরকে হ্যান্ডকাপ লাগাইয়া কান ধইরা উঠবস করাইছে। কিন্তু এতেও কোন লাভ হইছে না। কারও শরম না থাকলে কি কেউ শরম দিবার পারে হাসতে হাসতে বলেন এ মাঝি।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এমন বখে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন আব্দুর রহমানও। বলেন, ‘মা-বাপ লেহা-পড়ার লেইগ্যা এগরে শহরে রাখে। আর এরা এইসব কইরা বেড়ায়, ডেটিং মারে।’
স্বপরিবারে ব্রহ্মপুত্রের চরে ঘুরতে এসেছেন যমুনা টিভির ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান হুসাইন শাহীদ। কথিত প্রেমিক যুগলের অশ্লীল কর্মকান্ডে রীতিমতো লজ্জায় পড়ে যান তিনি। মিনিট কয়েক পরেই চলে যান তিনি।
এমন দৃশ্যপটের বিষয়ে তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেলেমেয়েরা ময়মনসিংহে এসে পরিবার ছাড়া থাকছে মেসে কিংবা হোস্টেলে। অবাধ স্বাধীনতার সুযোগে তারা এক কিংবা একাধিক সম্পর্কে জড়াচ্ছে। পরিবার থেকেই এ বিষয়ে সচেতনতা জরুরি বলেও মনে করেন এ সাংবাদিক।
জানতে চাইলে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, মাঝে মধ্যে অভিযান চালানো হয়। এসব চরে আরো পুলিশী নজরদারি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

এমএ

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More