জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের প্রতিবাদে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরবর স্মারকলীপি প্রদান করা হয়েছে। রোববার স্মারকলীপি প্রদান পুর্বক এক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এই রায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে দুই নেতার বেকসুর খালাস প্রদানের দাবী জানান। বক্তারা এজন্য ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন ।
ফেডারেশন ফর হিউমান রাইটস এন্ড জাস্টিস ইউকের উদ্যোগে ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালেক, বাংলাদেশ সলিডারিটি ফোরাম প্রেসিডেন্ট নূর বক্স, মুজ্জাম্মেল হক, আবুল হাসনাত প্রমূখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সেভ বাংলাদেশ ইউকে’র চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম বলেন, ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে ইসলামী চিন্তাবিদ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করার জন্যই এই রায় দেয়া হয়েছে। শুধু মাত্র রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল আর ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আওয়ামীলীগের খুনী সরকার একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে, ঢাল হিসেবে বিচারবিভাগকে ব্যবহার করে বিচার বিভাগকে বিশ্ব জনমত ও মানাবাধিকারের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম আরো বলেন, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ কখন কোথায় কোন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছেন- এমন কোন নজির আদালতে নেই অথচ এমন মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববাসীকে ধোকা দিচ্ছে আওয়ামীলীগের খুনী সরকার। এদের হাত রক্তে রঞ্জিত। অপরদিকে সালাউদ্দিন কাদের ঘটনার সময়
দেশেই ছিলেন না, তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে লন্ডনে চলে আসেন। এ বিষয়ে পাকিস্তানের ৫ জনসহ ৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক সালাহ উদ্দিন কাদের এর পক্ষে তাদের এফিডেভিট সঠিক মর্মে স্বাক্ষী দিতে চায় কিন্তু খুনি হাসিনা এই ৫ জনের বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেয়। আর আদালত এফিডেভিটের ওপর নির্ভর করেননি, সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনায় নিয়েছেন। ব্যারিস্টার নজরুল বলেন,ইসলাম ও মানবতা এই সরকারের হাতে নিরাপদ নয়- বার বার সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে। এই খুনীদের হাতে আজ আর কেউ নিরাপদ নেই। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে দুই নেতার বেকসুর খালাস ও রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ড বন্ধের দাবী জানান।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালেক বলেন, আওয়ামীলীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সারাদেশে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীদের হত্যা করছে । তারা বাংলাদেশ থেকে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী আন্দোলনকে নিভিয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের অকুতোভয় কর্মীদের একবিন্দু পরিমাণ বিচলিত করতে পারেনি স্বৈরাচারী সরকার।
এম এ মালেক বলেন, একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ করে চলেছে আওয়ামীলীগের হিংস্র খুনী সরকার। তারা আইন ও মানবতার দোহাই দিয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও তথাকথিত বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে বিচার বিভাগকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে ঠান্ডা মাথায় এই সব জুডিশিয়াল কিলিং করে যাচ্ছে। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এখন তাদের এই হত্যাকান্ডের নেশার শিকার বানিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে খুনী সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগের এই সব জুডিশিয়াল হত্যাকান্ড বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। মনে রাখা দরকার ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। আইনকে কোন অবস্থাতেই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে এমন ঢালাও ভাবে, জঘন্য ও পশুসূলভ মনোবৃত্তির মাধ্যমে ব্যবহার করে একজন নাগরিকের যে ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটস রয়েছে, তাকে আর বৃদ্ধাঙ্গুলি ও অপদস্থ করবেননা। আল্লাহর আদালতে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, আওয়ামীলীগ নাস্তিক মুরতাদের দল। তারা ইসলামের সেবক, খেদমত আর ইসলামী নেতাদের সম্মান করতে জানেনা, এদেরকে সহ্য করতে পারেনা, যেমন পারেনা শয়তান ইবলিস। এরা একের পর মিথ্যা বানোয়াট বায়বীয় অভিযোগের ভিত্তিতে হত্যাকান্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। এখন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী হত্যার পরিকল্পণা করছে। আমরা অবিলম্বে এই হত্যা পরিকল্পণা বন্ধের আহবান জানাচ্ছি। আওয়ামীলীগের মনে রাখা উচিৎ নমরুদ ফেরাউন সাদ্দাদ ঠিকেনি, ঠিকে থাকতে পারেনি- ক্ষমতা হাতে পেয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করবেননা। আল্লাহর আদালতে একদিন দাড়াতে হবে। সব কিছুর একটা সীমা আছে। সীমা লংঘনকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না।
ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুক থেকে নেয়া
https://www.facebook.com/syful.islam.395/videos/907433932638171/