দিল্লিতে গোমাংসের ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। এমনই মত দিল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি জি রোহিনি এবং বিচারপতি জয়ন্ত নাথের বেঞ্চ জানিয়েছে, দিল্লিতে গোমাংস সংক্রান্ত কোনও খাবারের অপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না।
একজন সাধু দিল্লি সরকারের কাছে একটি আবেদন পত্র জমা দেন। যেখানে জম্মু-কাশ্মীরের ১৯৩২ রণবীর পেনাল কোডের ন্যায় একটি আইন চালু করার কথা বলেন তিনি। যেই আইনে গো অথবা যেকোনও পশু হত্যাকারীদের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া আছে।
এরপর আপ সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়, দিল্লিতে ইতিমধ্যেই ‘দিল্লি এগ্রিকালচার ক্যাটেল প্রিজারভেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন প্রচলিত আছে। এই আইনে পশু-পাখিদের রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোমাংস ইস্যুতে কয়েক মাস ধরে উত্তাল সারা দেশ। উত্তর প্রদেশের দাদরিতে আখলাক নামে একজন ব্যক্তিকে ফ্রিজে গোমাংস রাখার অপরাধে পিটিয়ে মেরে ফেলে স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু তারপর মাংসের পরীক্ষা করে দেখা যায় সেটি গোমাংস নয়। এর কয়েক দিন পরে জম্মু-কাশ্মীর হাইওয়েতে একজন ট্রাক ড্রাইভারকে গরু পাচারকারি সন্দেহে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মেরে ফেলা হয়। তারপর আগুনে ঘি দেওয়ার মতই উস্কে ওঠে গোমাংস ইস্যু। দিল্লির কেরল হাউজের মেনুতে ‘বিফ ফ্রাই’ দেখে কোনও নির্দেশ ছাড়াই হানা চালায় দিল্লি পুলিস। এরপর আরএসএস-এর মুখপত্র ‘পাঞ্চজন্যে’তে একটি রিপোর্ট বের হয়। যেখানে বলা হয় বেদের নির্দেশ অনুযায়ী গো হত্যাকারীদের মেরে ফেলা উচিত।
ভারতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। প্রত্যেক ধর্মের এক এক রকমের রীতিনীতি। তাই ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে দিল্লি হাইকোর্টের এই রায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সকলেই।