অবিশ্বাস্য খবরটা শোনার পরই আব্বুকে ফোন করছিলাম। পাই নি। তার পরদিন সকালে ফেস টাইমে আব্বুকে দেখলাম। থমথমে চেহারা। ভেঙে গেছে। আর কিছু বললাম না। আব্বু নিজেই বলল, মা সব নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুই করতে পারলাম না . আমি শুধু বললাম, তুমি সারা জীবন চেষ্টা করেছ। এবার আমাদের পালা।
আব্বু যখন জেলে, আব্বুর খারাপ একটা অসুখ হয়। বহু আইনি যুদ্ধ করার পরে আব্বুক জামিন দেয়। ৬ মাস জেল খেটে আব্বু বের হয়ে আমেরিকা যায় চিকিৎসার জন্য। দেশে এর ভাল চিকিৎসা নেই। আব্বুর বয়স ৬৮। আর ব্লকটা ডেলিকেট জায়গায় বলে সার্জারি করতে রাজি হলো না ডাক্তার।
আব্বুকে আমি মানা করলাম দেশে যেতে। নাহ, আমার লজ্জা নেই স্বীকার করতে। আমি তাকে নিষেধ করেছি দেশে যেতে। কারণ আমি দেখেছি কি অমানুষিক যুদ্ধ করেছে আমার আম্মু। আমি জেনেছি, এদেশে নিরপরাধ বেশি অত্যাচারিত। আমি দেখেছি এদেশে শুধু গর্ধব আর দালালেরা নিরাপদ।
আব্বু সরাসরি বলল, আমি কোন অপরাধ করিনি। আমি ফিরব, মাথা উঁচু করে। আব্বু ফিরে গেল। ফিরে গিয়ে আব্বু দেখল তার বন্ধুর এক মাত্র ছেলের নিজ অফিসে খুন হয়ে যাওয়া। আব্বু আজ আবার জেলে। কোন অপরাধ না করে। Keep your morals high… জেলে যাওয়ার আগে এই কথাটাই বলে গেল আব্বু আজ। আব্বুর জন্য কেনা জিয়া হায়দারের বইগুলো পাঠাবো কাল। আমার সাহসী একাকী যুদ্ধ করে যাওয়া আব্বু যেন সুস্থ থাকে, খুশি থাকে। বিচারহীনতার এই দেশে আমিও বিচার চাই না।
মির্জা শামারুহ: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বড়কন্যা
(ফেসবুক থেকে)