ঢাকায় পা রেখে ক্রিস গেইল বলেছিলেন, দর্শকের পয়সা উশুল করে দেবেন তিনি। আরো বলেছিলেন, ছক্কা মারতেই এসেছেন। প্রথম দুই ম্যাচে কথা রাখতে পারেননি। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে মিরপুর মের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম দেখলো বিপিএল ঝড়। তার বিস্ফোরণে উড়ে গেলো চিটাগাং ভাইকিংস। বরিশাল বুলসের এই জ্যামাইকান ওপেনার ৪৭ বলে ৬টি চার ও ৯টি ছক্কায় ৯২ রানে থাকলেন অপরাজিত। আর তার দল ৫ ওভার হাতে রেখেই জিতলো ৮ উইকেটে। আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৩৫ রান তুলেছিল চিটাগাং। ১৫তম ওভারে জিবন মেন্ডিসের ওপর দিয়ে বয়ে যায় গেইলের ছক্কার ঝড়। এই ম্যাচে বিশাল বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছেন। আর ওই ওভারে মারেন ৪টি ছক্কা! প্রথম বলে টাইমিংয়ে গড়বড় হলেও লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা হয়েছে। দ্বিতীয় বলে একই সীমানার ওপর দিয়ে ছক্কা। পরের দুটি এক রান। আবার লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা। স্কোর টাই। তাতে কি! ছক্কা হাঁকাতে এসেছেন। বোলারের মাথার ওপর দিয়ে আরেকটি ছক্কা মেরে খেলা শেষ করলেন গেইল। রনি তালুকদার (১) ও মেহেদি মারুফ (১৮) ফিরে গেলেন দরের ৩১ রানে। এরপর গেইলের সাথে যোগ দিয়ে অধিনায়ক মাহমুদ উল্লা অপরাজিত থাকলেন ১৯ রানে। তবে সবাই দেখলো গেইল ঝড়। গেইল ৩৫ বলে করেন ফিফটি। এর পর ৩৯ রান করেন ১২ বলে! তৃতীয় ওভারে শফিউল ইসলামকে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন গেইল। পরের ওভারে নাইম ইসলামকে আরেকটি চার মারলেও গেইলের হাত তখনো খোলেনি। ষষ্ঠ ওভারে আসিফ আহমেদকে একটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারি মারেন গেইল। বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে চেনা যায় তখনই। ১৯ রান আসে ওই ওভারে। কিছুক্ষণ বিরতি। তারপর নাঈমকে মিড উইকেটের ওপর থেকে ছক্কা মারেন। পরের ছক্কাটি দিলশানকে। এবার লং অনের ওপর দিয়ে। ১৩তম ওভারে তাসকিন আহমেদকে একটি চার মারার পর ছক্কাটি মারেন লং অনের ওপর দিয়ে। পরের ওভারে বিলাওয়ালকে ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা মারলেন। বাকি ঝড়টা গেছে মেন্ডিসের ওপর দিয়ে। এর আগে তামিম ইকবালকে ছাড়াই খেলতে নামে চিটাগাং। ইনজুরির কারণে তিনি খেলেননি। অধিনায়কত্ব করেছেন তিলকারত্নে দিলশান। ষষ্ঠ ওভারেই আল আমিন হোসেনকে পর পর দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন দিলশান। ওই ওভারেই আল আমিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় দিলশানের সংগ্রহ ২২ বলে ২৮। ওপেনিং জুটিতে আসে ৫২ রান। এক ওভার পরই সোহাগ গাজীকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন এনামুল। ১৮ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ রান করেন এনামুল। এই দুই উইকেট হারানোর সাথে রানের গতিও হারিয়েছে চিটাগাং। সেটা আর ফিরে পায়নি ইনিংসে। বরং ইনিংসের মাঝ পথে তারা চাপে পড়ে যায়। ইয়াসির আলী (১১) ও জিবন মেন্ডিস (৩) ফিরে গেলেন। এর পর ইনিংস টেনে নিতে হবে কাউকে। উমর আকমল সেই দায়িত্বটা নিতে চেয়েও পারলেন না। স্বদেশি মোহাম্মদ সামি ফিরিয়ে দিয়েছেন তাকে। ৩০ বলে ২৫ রান করেছেন উমর। নাইম ইসলামও (৪) দাঁড়াতে পারেননি। শেষের দিকে আসিফ আহমেদ ১৭ রান করলেন। অপরাজিত ৯ রান আসলো বিলাওয়াল ভাট্টির ব্যাট থেকে। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সামি ও কেভন কুপার। সোহাগ, মাহমুদ উল্লা ও আল আমিন ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকলো বরিশাল। চিটাগাং তো আগেই বিদায় নিয়েছে বিপিএল থেকে।