জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশের ৪৪তম বিজয় দিবসে কোটি কণ্ঠ গেয়ে উঠল আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি। বুধবার বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে সারা দেশে একযোগে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
‘বিজয়দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি’এই কর্মসূচির আয়োজন করে। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে অংশ নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছিল লাখো জনতার উপস্থিতি। জনতার ঢল উদ্যানের ভেতর ছাপিয়ে এর বাইরে গিয়ে ঠেকে। এসময় লাখো জনতা গেয়ে ওঠে জাতীয় সংগীত। এরপর তাদের শপথ পড়ানো হয়। শপথ পড়ান অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, গবেষক, লেখক আবুল বারকাত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম, বিশিষ্ট লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারসহ মঞ্চের অন্য নেতাকর্মীরা। ৪৪ বছর আগে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই লেখা হয়েছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে পাকিস্তানি বাহিনী এ উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে, তখন এর নাম ছিল রেসকোর্স ময়দান।
আজ বিকালে ঠিক সেই মুহূর্তটিতে উদ্যানে স্থাপিত ‘বিজয় উৎসব’ মঞ্চের সামনে সমবেত জনতা গাইল ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’। বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে আগেই দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন-গ্রামসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের এ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বেলা ১১টায় এবারের বিজয় উৎসবের উদ্বোধন করে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের বিচারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থাপনাগুলো সংরক্ষণেরও দাবি জানান তিনি।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘আমাদের সংস্কৃতি। বিকাল সাড়ে ৩টায় ছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে জাতীয় সংগীত পরিবেশন শেষে হয় ‘আগামী বাংলাদেশের শপথ’। এরপর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের কণ্ঠে মুক্তিযুদ্ধের গান পরিবেশন শেষে আতশ বাজির খেলায় ‘বিজয় সন্ধ্যা’উদযাপনেরও কর্মসূচি রয়েছে।