মজার ডেস্কঃ কাঠ, লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বাতাস চালিত দ্রুত গতির মোটরসাইকেল উদ্ভাবন করলেন এক তরুণ। তরুণের নাম হাফেজ মো. নুরুজ্জামান। পালসার মোটরসাইকেলের মতো দেখতে উদ্ভাবিত বাংলা এয়ারবাইক-এ একবার বাতাস ভরলে সাইকেলটি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ৪০ কিলোমিটার পথ চলতে পারবে।
নুরুজ্জামান জানান, সাইকেলটি চালাতে জ্বালানি তেলের প্রয়োজন পড়বে না। হাইড্রোলিক পদ্ধতির গিয়ার বক্স প্রযুক্তি সংযুক্তির মাধ্যমে একটি সিলিন্ডারে বাতাস সঞ্চিত হবে। পরে ওই বাতাসের চাপে সাইকেলটি চলবে।
তিনি জানান, আজ থেকে তিন বছর আগে ২০১১ সালের মার্চ থেকে তিনি এ সাইকেল তৈরির কাজ শুরু করেন। এটি তৈরিতে তার প্রায় চার লাখ টাকা খরচ পড়ল বাণিজ্যিকভাবে খরচ এক লাখ টাকার বেশি হবে না।
বাণিজ্যিক উৎপাদনে কোনো প্রতিষ্ঠান বা সরকার এগিয়ে এলে পরিবেশবান্ধব মোটরসাইকেলটি দেশের জ্বালানি খরচ কমানোর পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন উদ্ভাবক নুরুজ্জামান।
হাফেজ মো. নুরুজ্জামান হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের কৃষক সৈয়দ আলী ও রোকেয়া বেগমের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নুরুজ্জামান সবার ছোট। তিনি চট্টগ্রামের শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
বাতাসই প্রাণ
বিকল্প জ্বালানি শক্তি হিসেবে বাতাসকে ব্যবহার নতুন নয়। তবে মোটর ঘুরাতে বাতাসকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের খবর এর আগে হয়নি। অবশ্য সেই বিরল কাজটিই করে দেখালেন বাংলাদেশী তরুণ নুরুজ্জামান। তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন, বাতাসই প্রাণ।
তিনি বললেন, “ইঞ্জিন তৈরিতে প্রথমবারের মতো বিরল একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যার মাধ্যমে বাতাসের চাপে (পিস্টনকে ধাক্কা দিয়ে) মোটরবাইকের ইঞ্জিন চালাতে সহায়তা করে। কম্প্রেসের এর মাধ্যমে বাতাস এয়াবাইকের রিজার্ভারে পাঠানো হয়। বাইকটিতে সঙ্কুচিত বাতাস (অক্সিজেন) সংরক্ষণের জন্য রয়েছে দুইটি সিলিন্ডার। এতে অক্সিজেন ভরতে প্রয়োজন হয় ৩৪ টাকা বাতাস।”
রেক দিয়ে স্টার্ট হয় এয়ারবাইক
মেবাটরবাইকে কোনো ব্যাটারি নেই। শুধু বাইকের ঘড়ির কাটার বিপরতি ব্রেকে চাপ দিলেই সঙ্কুচিত বাতাসের চাপে চলতে শুরু করবে গাড়িটি। আর ঘড়ির কাটার অনুকূলে চাপলে এক্সিলারেটর হিসেবে কাজ করবে।
এ বিষয়ে হাফেজ নুরুজ্জামান বলেন, “এয়ারবাইকটি চালাতে ফুয়েলের প্রয়োজন পড়ে না। শুধু বাতাসকে সঙ্কুচিত করা হয় এবং তা ইঞ্জিনে সরবরাহ করা হয়। বর্তমানের রিজার্ভারের আয়তনে ৮৩৩ পিএসআই বাতাস দিয়ে এক কিলো চলে। প্রতি কিলো চলকে প্রয়েপনীয় বতাস কিনতে খরচ পড়ে ৯১ পয়সা। অন্য টেকনলোজিতে খরচ পড়ে ২.৫ টাকা। ফলে এই পদ্ধতিতে জ্বালানী সাশ্রয় হয় ৬৪ শতাংশ।”