আমেরিকার বিখ্যাত পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১৫ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, আমেরিকান অভিভাবকদের অনেকেই প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানকে যাবতীয় খরচ দিয়ে থাকেন।
১৭০০ আমেরিকান অভিভাবকের ৬১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ তুলে দেন। এ বিষয়টিকে অভিভাবকরা কোনো বোঝা বলে মনে করেন না। বাবা-মায়ের ৭২ শতাংশ মনে করেন, এটা স্বাভাবিক বিষয়। তারা মনে করেন, সঠিক পরিমাণ অর্থই তারা দিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বেড়ে ওঠা সন্তানের হাতে অর্থ প্রদানের বিষয়টি সময়মতো বন্ধ করতে হবে। কখন এ কাজটি করতে হবে তা ৫টি লক্ষণে স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
১. যখন দেখবেন সন্তানের নানা খরচ জোগাতে নিজের খরচ কুলাতে পারছেন না, তখন বিষয়টি ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে সন্তানের খরচে কাঁচি চালাতে হবে। অনেকেই সন্তানকে খরচ আগের মতো রেখে নিজের কাঁধে ঋণের বোঝা নিয়ে নেন। এ সময়টাতে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাবে। এমন হলে আপনার অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থা নষ্ট হবে।
২. আবার নিজের যাবতীয় সমস্যা রেখে দিয়ে সন্তানকে পুরো খরচ জোগানোর অর্থ হলো, নিজের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বাদ দিয়ে আপনি সন্তানেরটা হাসিল করে দিচ্ছেন। এটা স্বার্থপরতা নয়। বরং সন্তান নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। অবসরে যাওয়ার পর একটি বাড়ি কেনার অর্থ বড় হয়ে ওঠা সন্তানের পেছনে পুরোটা ঢেলে দেওয়া ঠিক নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
৩. সন্তানরা কিছু একটা করে অর্থনৈতিকভাবে সামান্য হলেও স্বাবলম্বি হতে পারে। পড়াশোনার ফাঁকে তারা পার্ট-টাইম জব করে পকেট খরচ জোগাতে পারে। আর এ কাজে উৎসাহ দেওয়ার দায়িত্ব আপনারই।
৪. ধরুন, সন্তান পার্ট-টাইম চাকরির মাধ্যমে সন্তান নিজের খরচ জোগায়। এটি হারালে আপনার সহায়তা করা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু যেকোনো সমস্যা এগিয়ে গেলে সন্তান বাধা টপকানোর মৌলিক শিক্ষা পাবে না। সন্তনাকেও মাঝে মধ্যে কঠিন বাস্তবতার চেহারা দেখাতে হয়।
৫. যদি সন্তানের হাতে অর্থ প্রদানের পরিমাণটা বাড়তেই থাকে, তবে বুঝে নিন, আপনার সন্তান অর্থব্যবস্থাপনায় ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। সময়ের সঙ্গে তার ভুল বেড়েই চলেছে। অথচ তা কমার কথা। এ সময় আপনি একটু কঠোর না হলে সন্তান আপনার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
আবার এও সত্য যে, সন্তানকে পুরোপুরি অর্থ প্রদান বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। মূলত তাদের মিতব্যয়ী হওয়া এবং উপার্জনের পথ নিজেই খুঁজে নেওয়ায় দক্ষ করতে এ শিক্ষা দিতে হবে। তাই সন্তান যথেষ্ট বড় হলে তার হাতে আগের মতো অর্থ তুলে দেওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন।