বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ২০১৫ সাল ছিল অবিস্মরণীয়। মাশরাফি-সাকিব-মুশফিকরা একের পর এক সাফল্যের আনন্দে ভাসিয়েছেন দেশের মানুষকে। তবে তরুণ ক্রিকেটারদের কৃতিত্বও কম নয়। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটেও দারুণ সফল ছিল বাংলাদেশ। আসন্ন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেই সাফল্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত করবে স্বাগতিকদের।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২৮টি ওয়ানডে খেলে ২০টিতেই জয়ের মধুর স্বাদ পেয়েছিল। সাফল্যের সূচনা বছরের শুরুতেই, জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় শুরুটা ভালো হয়নি। তবে এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটাররা। পরের তিনটি ম্যাচই জিতে সিরিজ জয় করে নেয় ৩-২ ব্যবধানে। শ্রীলঙ্কা সফরে দারুণ ব্যাটিং করে নজর কেড়েছিল নাজমুল হোসেন শান্ত। পাঁচ ম্যাচে ২৮৪ রান করেছিল এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান।
শ্রীলঙ্কায় সাফল্যের ধারাবাহিকতা ঘরের মাটিতেও ধরে রেখেছিল অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরে এসে ৬-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিয়মিত অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ প্রথম চারটি ম্যাচ খেলতে পারেনি। তার অনুপস্থিতিতে পুরো সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিল শান্ত। মাত্র ১৭ বছর বয়সী শান্ত দায়িত্বটা দক্ষতার সঙ্গেই পালন করেছিল। পঞ্চম ম্যাচে ফিরে জ্বলে উঠেছিল মিরাজও। সিরিজের শেষ তিন ম্যাচ খেলে সে করেছিল ১৮১ রান। ওপেনার সাইফ হাসানও বেশ কয়েকটি ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করে নজর কেড়েছিল।
জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরতি সফরেও জয়যাত্রা অব্যাহত ছিল তরুণ ক্রিকেটারদের। সেবার সাত ম্যাচের সিরিজ তারা জিতেছিল ৫-২ ব্যবধানে। ওই সিরিজে মিরাজ ও শান্তর সঙ্গে জ্বলে উঠেছিল ১৬ বছর বয়সী বাঁ-হাতি ওপেনার পিনাক ঘোষ। সিরিজের ষষ্ঠ ম্যাচে ১৪১ বলে ১৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিল সে। আরেকটি ম্যাচে করেছিল ৬০ রান।
নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-১৯ দলও এসেছিল বাংলাদেশ সফরে। বড়দের মতো জিম্বাবুয়ের তরুণ ক্রিকেটাররাও ডুবেছিল হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল সিরিজ জিতেছিল ৪-০ ব্যবধানে। সেই সিরিজে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল আরেক ওপেনার সাইফ হাসানের। একটি শতক ও অর্ধশতকসহ চার ম্যাচে ২০৮ রান করেছিল সে। আর সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ৯৬ রান করেছিল শান্ত।
জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষ হওয়ার পরই বাংলাদেশ গিয়েছিল ভারত সফরে। আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে খেলেছিল ত্রিদেশীয় সিরিজ। আফগানদের দুইবার হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর অবশ্য হতাশ হতে হয়েছিল বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিল সাত উইকেটে। ভারত সফরে বাঁ-হাতি স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওন পাঁচ ম্যাচে নিয়েছিল ১২টি উইকেট।