বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির মতে, আন্দোলনের নামে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত খালেদা জিয়ার আলোচনার কথা বলা উচিত নয়। একই সঙ্গে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে দলটি।
আজ বুধবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।
এর আগে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের কারণে যৌথসভায় ১০ জানুয়ারির পরিবর্তে ১১ জানুয়ারি বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। ওই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘উনি আজকে সংলাপের কথা বলছেন, ন্যায়ের কথা বলেন, শান্তির কথা বলেন। এই যে ১৪৭ জন মানুষকে হত্যা করা হলো, তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চান নাই। জাতির কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। এ জন্য খালেদা জিয়া কোনো সংকট বা সংলাপের কথা বলার আগে এই ধরনের বর্বরোচিত নৃশংসতার জন্য তাঁর আগে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং এরপর তিনি অন্য কিছুর জন্য আবেদন করতে পারেন। বাংলাদেশের মানুষ কোনো খুনি-হত্যাকারীর সঙ্গে বৈঠক মনে হয় পছন্দ করে না।’
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে হানিফ বলেন, ‘উনি সরকারের সঙ্গে আলোচনা বসতে চান। অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁদের রক্ষার জন্য দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করবেন। তাঁর সঙ্গে আর কি সংলাপ হতে পারে?’
আগামীকাল জামায়াতের হরতাল আহ্বানের বিষয়ে হানিফ বলেন, ‘বাংলাদেশে হরতাল হবে কি না জানি না। পাকিস্তানে হলে হতে পারে। বাংলাদেশের জনগণ যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য কোনো নাশকতা বরদাশত করবে না।
বাংলাদেশের সরকারও করবে না।’
তেল-গ্যাসের দাম কমানো উচিত কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ‘সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। তবে যেটা যৌক্তিক সেটাই হওয়া উচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের শুরুতেই হানিফ বলেন, ‘কুখ্যাত রাজাকার মতিউর রহমান নিজামীর রায় বহাল রাখার কারণে গোটা জাতি সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রায়ের প্রতি সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনে করে—এ রায়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অভিশাপ মুক্তির পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। বাঙালি জাতি একাত্তরের শহীদদের দায়মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণমন্ত্রী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমা আকতার, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।