ভারতীয় পত্রিকা আনন্দ বাজার তার অনলাইন ভার্সনে লিখেছে, শেখ হাসিনা নাকি বিএনপিকে অবৈধ ঘোষণা ইঙ্গিত দিয়েছেন। ১১ জানুয়ারি প্রকাশিত আনন্দ বাজারের রিপোর্টি পুরো তুলে ধরা হলো –
বাংলাদেশ কি অবৈধ ঘোষণা করতে চলেছে বেগম খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিকে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই রকম ইঙ্গিতই দিয়েছেন। ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে আওয়ামি লিগ আয়োজিত জনসভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাইকোর্টের রায় উল্লেখ করে বলেছেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান যে ভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করেছিলেন তা অবৈধ। ক্ষমতায় বসে তিনি যা যা করেছিলেন, সে সবই অবৈধ। তাই জিয়া প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিও (বিএনপি) অবৈধ।
শেখ হাসিনার মন্তব্য নিয়ে তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের জেল থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে পা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। সেই দিন প্রতি বছরই স্মরণ করে বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগ। সেই উপলক্ষেই ঢাকায় জনসভার আয়োজন হয়েছিল। উপচে পড়া সভায় হাসিনা বলেন, ‘‘জিয়ার ক্ষমতা সম্পূর্ণ অবৈধ-অসাংবিধানিক। হাইকোর্ট সেই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। সেই রায়ের মধ্য জিয়ার ক্ষমতা দখল অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। কাজেই তিনি যা যা করে গিয়েছেন, তা সব অবৈধ। ক্ষমতায় গিয়ে জিয়াউর রহমান যে দল গঠন করেছেন, সেটাও প্রকৃতপক্ষে অবৈধ বলে গণ্য করা দরকার।’’
শুধু বিএনপি-কে অবৈধ ঘোষণা করা দরকার বলেই থামেননি হাসিনা। তিনি ঘোষণা করেছেন, জিয়াউর রহমান এত দিন ধরে রাষ্ট্রের কাছ থেকে যে মর্যাদা পেয়ে এসেছেন, তাও আর অক্ষুন্ন থাকছে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জিয়াকে আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বলা যাবে না। কারণ হাইকোর্টের রায় তাহলে মানা হবে না।’’ বিএনপি স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রী হাসিনার এই ঘোষণার তীব্র বিরোধিতা শুরু করেছে। হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন বলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিএনপি-র দাবি। তবে বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে বিএনপি-র যোগ ছিল বলে জানিয়ে যে তথ্য হাসিনা তুলে ধরেন, তা বেগম জিয়ার অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। হাসিনা জানান, বিডিআর বিদ্রোহের দিন সকালে খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান লন্ডন থেকে ৪৫ বার ফোন করেন খালেদাকে। তারেক রহমান খালেদাকে সে দিন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে গোপন আস্তানায় চলে যেতে বলেন বলেন। খালেদা গোপন আস্তানায় চলে যাওয়ার পরই বিডিআর বিদ্রোহ শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার কথায়, এই ঘটনা প্রমাণ করছে আওয়ামি লিগের সরকারকে উৎখাত করার জন্য বিডিআর-কে দিয়ে বিদ্রোহ করানোর যে ছক কষা হয়েছিল, তাতে খালেদা-তারেক তথা বিএনপির যোগসূত্র ছিল। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ইঙ্গিত থেকে স্পষ্ট, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও কোণঠাসা হতে চলেছে বিএনপি। খালেদা জিয়াকেও বড়সড় সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে।