আমাদের রক্তকে বিশুদ্ধ করে, হরমোন উৎপন্ন করে, মূত্রত্যাগের মাধ্যমে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবং আরো নানান রকমের জরুরি কাজ করে থাকে কিডনি। তাই শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ এটি। এর কোনো সমস্যা হলে যেমন ভয়ের কারণ রয়েছে, তেমনি চিকিৎসার মাধ্যমেও কিডনির রোগ নিরাময় করা সম্ভব। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়মের কারনে নষ্ট হচ্ছে কিডনি। তবে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন হলেই আমরা কিডনি ভালো রাখতে পারি। আমাদের দৈনন্দিন যেসব অভ্যাসে প্রতিনিয়ত কিডনির ক্ষতি হচ্ছে সেগুলো জেনে নেই……
ঘুমের ব্যাঘাত হলে :
রাতে ঘুমানোর সময়টাতে কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু গুলো সেরে ওঠে। তাই রাতে ঠিক মতো না ঘুমালে শরীরের বিশ্রাম হয় না এবং কিডনির ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত ব্যথা নাশক গ্রহন করলে :
কেউ একটুখানি ব্যাথা অনুভব করলে পেইন কিলার খেয়ে বসে থাকেন। ঘন ঘন অতিরিক্ত পেইন কিলার খেলে দ্রুত কিডনি ও লিভার নষ্ট হয়ে যায়।
মদ্যপান ও ধুমপান করলে :
অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপানের ফলে কিডনির স্বাভাবিক কার্যকলাপে ব্যাঘাত ঘটে এবং কিডনিতে চাপ সৃষ্টি হয়। সে সঙ্গে লিভারেরও ক্ষতি হয়। তাই কিডনি ভালো রাখতে চাইলে মদ্যপান ত্যাগ করা ভালো।
পানি কম খেলে :
কিডনির মূল কাজ হলো শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেয়া। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খেলে কিডনি তার কাজ ঠিক মতো করতে পারেনা। ফলে কিডনির ক্ষতি হয়। তাই কিডনি ভালো রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত।
অতিরিক্ত কফি খাওয়া:
কফি রক্তচাপ কিছুটা বাড়িয়ে দেয় এবং কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ফলে যাদের দিনে দুই কাপের বেশি কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের কিডনি দ্রুত অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
লবন বেশি খেলে :
অনেকেই খাবারের সাথে প্রচুর লবণ খেয়ে থাকেন। লবণ শরীরের জন্য জরুরি হলেও প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং কিডনির ক্ষতি হয়।
মূত্রত্যাগে বিলম্ব করা:
পাবলিক টয়েলেট ব্যবহার এড়ানোর জন্য অনেকেই মূত্রচাপ থাকলেও মূত্রত্যাগ করেন না। নিয়মিত বিলম্বে মূত্রত্যাগ করার ফলে কিডনিতে চাপ সৃষ্টি হয় এবং কিডনি অকেজো হওয়া ও পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার:
যারা অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খায় কিংবা কোমল পানীয় খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের মূত্রের সাথে প্রোটিন নির্গত হয় যা কিডনির জন্য ঝুকিপূর্ণ।
ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব:
প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খেলে কিডনি ভালো থাকে। ভিটামিন বি ৬ ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ:
অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনির মেটাবোলিক চাপ বেড়ে যায়। যত বেশি প্রোটিন গ্রহণ করবেন কিডনির উপর চাপ তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। ফলে কিডনি দ্রুত অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায়।