গত বছর বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তিটি ইরান মেনে চলছে বলে ভিয়েনায় গতকাল শনিবার নিশ্চিত করে জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। এরপরই ঘোষণা আসে, চুক্তিটি গতকাল থেকেই কার্যকর। আর চুক্তি অনুযায়ী, ইরানের ওপর থেকে প্রত্যাহার করা হয় আন্তর্জাতিক অবরোধ।
তেহরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সমঝোতার লক্ষ্যে টানা তিন বছর ধরে আলোচনার পর গত জুলাই মাসে ইরান ও ছয় জাতির (জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি) মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ‘যৌথ সার্বিক কর্মপরিকল্পনা’ চুক্তি।
ওই চুক্তির আওতায় ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে সম্মত হয়। বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ পশ্চিমারা তেহরানের ওপর আরোপিত অবরোধগুলো ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গতকাল আইএইএ বলে, তাদের পরিদর্শকেরা এটা নিশ্চিত হয়েছেন যে, চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে তেহরান। তারা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সংকুচিত করেছে।
আইএইএর ওই বিবৃতির পরপরই ইরানের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।
ছয় বিশ্বশক্তির প্রতিনিধিত্বকারী ও ইইউর পররাষ্ট্রনীতি-প্রধান ফেদারিকা মঘেরিনি বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বহুপক্ষীয় ও জাতীয় অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে মঘেরিনি বলেন, এই অর্জন সুস্পষ্টভাবে এটাই প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক সদিচ্ছা, অধ্যবসায় ও বহুপক্ষীয় কূটনীতির মাধ্যমে সবচেয়ে কঠিন সমস্যারও সমাধান করা যায়। পাওয়া যায় বাস্তবিক সমাধান, যা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে।
মঘেরিনি আরও বলেন, চুক্তিটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
টুইটারে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ধৈর্যশীল জাতি ইরানের জন্য এটা মহিমান্বিত বিজয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, আজ যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের বন্ধু ও মিত্ররা এবং পুরো বিশ্ব নিরাপদ হয়েছে। কারণ, পরমাণু অস্ত্রের হুমকি কমেছে।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অবরোধ তুলে নেওয়ায় ইরান তাদের জব্দ থাকা শত শত কোটি ডলার মূল্যের সম্পদ ব্যবহার করতে পারবে। তারা তাদের তেল আন্তর্জাতিকভাবে বিক্রি করতে পারবে।